Logo
শিরোনাম

চিড়া খেলে হৃদ্‌রোগ-ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৫ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

গরমকালে অনেকে ভাতের পরিবর্তে চিড়া খেতে পছন্দ করেন। চিড়া খুবই সহজপাচ্য খাবার। চিড়া শক্তি  পুষ্টিদুই- জোগায় শরীরে। চিড়া শরীর ঠান্ডা রাখতেও সমান ভাবে উপকারী। যারা দ্রুত ওজন কমাতে পছন্দ করেন তারা নিয়মিত চিড়া খেতে পারেন।

চিড়া ডায়েরিয়াআলসারেটিভ কোলাইটিস-সহ পেটের বিভিন্ন সমস্যা থেকে শরীরকে সুস্থ রাখে। যাদের কিডনির সমস্যা আছেতারাও নির্ভয়ে চিড়া খেতে পারেন। কারণ চিড়াতে সোডিয়াম  পটাশিয়ামের পরিমাণ খুবই কম।

চিড়া খাওয়ার যেমন অনেক উপকারিতা আছেতেমন কিছু অপকারিতাও আছে।

নিয়মিত চিড়া খেলে শরীরে ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পায়। ভাল কোলেস্টেরলের মাত্রা হৃাস পেলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেক গুন। চিড়াতে প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে। তা ছাড়া চিড়াতে ‘ট্রাইগ্লিসারাইড-এর ঘনত্ব অনেক বেশি। এসব কারণে নিয়মিত চিড়া খেলে বাড়তে পারে ডায়াবেটিসের সমস্যাও।


আরও খবর

এই বছরের ঈদ ফ্যাশন

বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫




আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

জেসমিন আক্তার, সিনিয়র সাংবাদিক :

ফেরাউনের অত্যাচার বনাম সভ্য সমাজের নীরবতা: আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

আছিয়া! এক নাম, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ধৈর্য, ত্যাগ আর ঈমানের এক দুর্দান্ত কাহিনি। ইতিহাস বলে, হযরত বিবি আছিয়া (আ.) ছিলেন মিসরের সবচেয়ে ক্ষমতাধর পুরুষ ফেরাউনের স্ত্রী। কিন্তু তাঁর সত্যের প্রতি অবিচল বিশ্বাস, ন্যায়বিচারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে তাঁকে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। তিনি ছিলেন এক অত্যাচারী শাসকের স্ত্রী, তবু তাঁর ঈমান টলানো যায়নি। তিনি মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও সত্যকে আঁকড়ে ধরেছিলেন।

আজকের সমাজেও আছিয়ারা আছে, তবে তারা শিশু। তারা ফেরাউনের মতো কোনো শাসকের প্রাসাদে নয়, বরং নিজেদের ঘরেই নির্যাতনের শিকার। কখনো বাবার হাতে, কখনো সৎ বাবার হাতে, কখনো চাচা কিংবা দাদার হাতে, এমনকি কখনো আপন ভাইয়ের হাতেও ধ্বংস হচ্ছে তাদের শৈশব। ফেরাউন তো প্রকাশ্যে অত্যাচার করেছিল, কিন্তু এই আধুনিক সমাজের ফেরাউনরা পর্দার আড়ালে, সমাজের নীরবতার সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন জন্ম দিচ্ছে নতুন নতুন ট্র্যাজেডি।

সম্প্রতি এক ৮ বছরের শিশুর গল্প ভাইরাল হয়েছে—যাকে তারই আপন বোনের স্বামী-শ্বশুরের মতো আপনজনেরা নির্মম নির্যাতন করেছে। এই সমাজ কি সত্যিই সভ্য? যেখানে শিশুর আর্তনাদ কেউ শোনে না, যেখানে একটি ফুটফুটে প্রাণকে নিষ্ঠুরতার বলি হতে হয়?

ফেরাউনের রাজত্বে আছিয়া ছিলেন এক প্রতীক, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের প্রতীক। কিন্তু আজকের শিশুরা প্রতিরোধ গড়ে তোলার আগেই হারিয়ে যাচ্ছে।

আজ যদি আমরা নীরব থাকি, তবে প্রতিটি ঘরেই একেকজন শিশু আছিয়া জন্ম নেবে, যারা নিজেদের জীবন দিয়ে প্রমাণ করবে—আমাদের সমাজ শুধু পুঁজিবাদ আর প্রযুক্তির দিক থেকে উন্নত হয়েছে, মানবিকতা ও নৈতিকতার দিক থেকে নয়।

এখন প্রশ্ন একটাই: আমরা কি ফেরাউনের অনুসারী হবো, নাকি আছিয়ার মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াবো?


আরও খবর



বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন?

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

দাম নিয়ন্ত্রণ করে বাজারকে সহনীয় পর্যায়ে আনার সরকারি চেষ্টায় কমতি নেই। সয়াবিন ও পাম তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের মূসক কমানো, ডিমসহ কিছু পণ্যের দাম ধরে দেয়া ইত্যাদি পদক্ষেপের একমাত্র টার্গেট বাজার নিয়ন্ত্রণ। অভিযানসহ নিয়ন্ত্রণমূলক আরো কিছু কাজও চলছে। কিন্তু, কাঙ্খিত ফল মিলছে না। বিশ্বে বাংলাদেশই এখন একটি দেশ, যেখানে প্রশাসনের চেয়েও সিন্ডিকেট শক্তিমান। চাল- তেল-ডিম-মাছ-সবজি এমন কি কচুর লতি-চ্যাপা শুঁটকিতেও সিন্ডিকেট। শ্রম বাজার, পরিবহন জগতেও সিন্ডিকেটের নাটাই। তা মাদকের কেনাবেচায়ও। এ থেকে মুক্তির কি উপায় নেই?

বাজারে গিয়ে মানুষ দিশাহারা। চড়া দামের জন্য বাজারে যাওয়া যাচ্ছে না। চাল, চিনি, পেঁয়াজ, তেল, আলু, সবজিসহ সবকিছু সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। রাষ্ট্র সংস্কারের সমান্তরালে এই সিন্ডিকেট দমনও জরুরি। বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া ও তাদের সাজার আওতায় আনার বিকল্প নেই। এরই মধ্যে চক্রটি বুঝিয়ে দিয়েছে, এরা দমবে না। সরকার বা কেউ তাদের দমাতে পারবে নাÑ এমন একটি ভ্যাংচি-আস্ফালন লক্ষনীয়। বর্তমান সরকার অরাজনৈতিক। তার কোনো ষ-া-গু-া, সিন্ডিকেট পোষার দরকার পড়ে না।

সেই বিবেচনায় সরকার কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে তাদের রুখে দেয়ার কোনো রাজনৈতিক শক্তি নেই। তারপরও কেন কুলাতে পারছে না সরকার? এর বিপরীতে সিন্ডিকেট বা চক্র বিশেষ রীতিমতো বেপরোয়া। তারা যথেচ্ছ দাম বাড়িয়ে লুটে নিচ্ছে সাধারণ মানুষের কষ্টের অর্থ। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মৌলিক ও প্রধানতম উপকরণ হচ্ছে নিত্য খাদ্যপণ্য। এই খাদ্যপণ্যের মূল্য যখন ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যায়, তখন জনরোষের সাথে দুর্বিষহ পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়ে পারে না। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি হিসাবে, এক সপ্তাহে, অর্থাৎ ৭ থেকে ১৪ অক্টোবরের মধ্যে ১২টি নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এ তালিকায় রয়েছে সয়াবিন তেল, পাম তেল, চালের কুঁড়ার তেল বা রাইস ব্র্যান অয়েল, আলু, ছোলা, পেঁয়াজ, রসুন, জিরা, দারুচিনি, ধনে, গরুর গোশত ও ডিম।

এ সরকারও মুক্তবাজার অর্থনীতির চর্চা করছে। এই ব্যবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার এবং ভোক্তাসহ সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষার কথা। কিন্তু, বাস্তবতা বড় নিষ্ঠুর। বেশ কিছু পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি না থাকলেও সিন্ডিকেট সদস্যরা তাদের ক্রিয়াকর্ম ঠিকই কার্যকর করে ছাড়ছে। ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখে গত ১৫ সেপ্টেম্বর মুরগি ও ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। কিন্তু তার বাস্তব প্রয়োগ ঘটছে না বাজারে। দফায় দফায় দামের ডিগবাজিতে হতভম্ব ক্রেতা সাধারণ। সেই অস্থিরতা কাটাতে এবার নতুন উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডাররা একত্রে বসে ডিমের যৌক্তিক উৎপাদন খরচসহ উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জেলার পোল্ট্রি খামারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দৈনিক প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যায়, ফলে চাহিদা ও জোগানের মাঝে ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়।

এমন সংকটকালে একটি মহল অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করলে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। দেশ ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিপিআইসিসি ১৫ দিনের যে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকায় পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থা, ডিম উৎপাদনকারী বড় খামারি ও পাইকারি আড়ৎদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা এ উদ্যোগকে সফল করবে বলে আশা করা হচ্ছিল। উল্লেখ্য, ডিমের দাম ইতোমধ্যে কিছুটা কমেছে।

 অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তির দিকে। এমতাবস্থায়, আর কী করতে পারে সরকার প্রশ্নটি এসে যাচ্ছে আপনাআপনি। পাল্টা প্রশ্ন আসছে সরকার কী তাহলে ব্যর্থ? না, তা মোটেই ভাবা যায় না। এ সরকার ব্যর্থ হলে আশা-ভরসার আর জায়গা থাকে না। এমন কি দেশের কী পরিস্থিতি হবে- তা ভাবনায়ও কুলানোর মতো নয়। বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে সবার সহযোগিতা চাওয়ার পাশাপাশি হুঙ্কার দিয়েছেন কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক, শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। বলেছেন, তাদের দৌরাত্ম্য আমরা ভাঙব। কামনা থাকবে, এ হুমকি-হুঁশিয়ারিকে সফল করবেন তিনি এবং সরকার। এসব সিন্ডিকেট প্রতিদিন নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করে বলে মন্তব্যও করেছেন এই উপদেষ্টা।

রোগ যখন ধরতে পেরেছেন, সেইদৃষ্টে এখন ওষুধ প্রয়োগের অপেক্ষা। হোক তা মেডিসিন বা সার্জিকেল। বলতেই হয়, মেডিসিন বা ডাকদোহাইর ঝাড়ফুঁকে এরা দমবে না। কেস একদম সার্জিকেল। সার্জনের ভূমিকায় যেতেই হবে সরকারকে। বাজার নিয়ন্ত্রণে টিসিবির মাধ্যমে খোলাবাজারে পণ্য বিপণন, বাজার মনিটরিং ইত্যাদি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতেই হবে। পেছনে তাকানোর কোনো সুযোগ নেই। কোনো অজুহাত বা কাউকে দায়ী করারও আর অবকাশ নেই। মানুষ এসব শুনতে চায় না। তারা চায় অ্যাকশন।

অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের বক্তব্যেও তা স্পষ্ট। সম্ভবত পাবলিক পাল্স ধরতে পেরেছেন এই অর্থনীতিবিদ ও অ্যাকাডেমিশিয়ান। তিনি বলেছেন, বাজারে ডিমসহ বিভিন্ন পণ্যের অতিরিক্ত দামের জন্য সিন্ডিকেটের কথা বলে পার পাওয়া যাবে না। এরা নিশ্চয়ই সরকারের চেয়ে শক্তিশালী নয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমম্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহও রোগ ধরে বলেছেন, কারওয়ান বাজারে ডিম ট্রাকে থাকা অবস্থাতেই চারবার হাতবদল হয়। এখন পর্যন্ত এই সরকার কোনো সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি। শুধু সিন্ডিকেটের সাইনবোর্ড পরিবর্তন হয়েছে। সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে এই অভ্যুত্থানের প্রাথমিক মাহাত্ম্য কী?

ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বলেছেন, গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদের দোসর লুটেরা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট তৈরি করেছে। তারাই এখন অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপদে ফেলতে কোনও কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। অবিলম্বে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির জন্য নয়; নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বিগত সরকারের আমলের ন্যায় বর্তমানেও বহাল তবিয়তে থাকা সিন্ডিকেটের কারণে। এই সিন্ডিকেট নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম মনগড়া বৃদ্ধি করছে। এতে বিপাকে পড়ছেন ভোক্তারা।

এখন পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে না। পুলিশ, শ্রমিক নেতা কিংবা দলীয় কোনো পারপাসে চাঁদাবাজি নেই। ট্রাক ভাড়াও আগের চেয়ে কমেছে। তারপরও নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকার কারসাজি একদম না বোঝার বিষয় নয়। বিগত সরকারের আমলে বড় বড় যে সকল সিন্ডিকেট ছিল, তারা এখনো রয়েছে। আর তাদের মনগড়া সিদ্ধান্তের কারণেই নিত্যপণ্যের দাম দিনকে দিন বাড়ছে। তবে, কি বাজার সিন্ডিকেট ভাঙতে ছাত্র-জনতাকে আবারো সক্রিয় হতে হবে? সরকার পতনের পর ছাত্ররা যেভাবে বাজার তদারকি করেছিল, সেটি আবারো নিয়মিত করতে হবে?

বলার অপেক্ষা রাখছে না, গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও বাজার সিন্ডিকেটবাজ ও চাঁদাবাজদের পতন হয়নি। নিত্যপণ্যকে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে নিয়ে যেতে যারপরনাই সক্ষমতা দেখিয়েই চলছে তারা। সরকারের এখন পর্যন্ত কার্যক্রম ঘুরছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের চেষ্টায়। দমনের কার্যকর পদক্ষেপ এখনো নেয়া হয়নি। সরকার বিভিন্ন সংস্কারের জন্য কমিশন করেছে। কিন্তু এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা নিত্যপণ্যের দামে আগুন নেভানোর কোনো কমিশন করেনি। সরবরাহ বৃদ্ধিতে আমদানির অনিয়ম দূর করতে দেশে একটি কমিশন কিন্তু আছে।

প্রতিযোগিতা কমিশন নামের কমিশনটির কাজ হচ্ছে বাজারে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টিকারী রীতি-নীতি নির্মূল করার পাশাপাশি প্রতিযোগিতা উৎসাহিত করা। ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাধীনতা নিশ্চিত করাও তাদের কাজ। এই পরিস্থিতিতে কমিশনটিকে কাজে লাগানো যেতে পারে। বাজারে কোথায় ও কীভাবে প্রতিযোগিতা বিনষ্ট হচ্ছে বা একচেটিয়া তৈরি হচ্ছে, তা চিহ্নিত করে আইনি উদ্যোগ নিতে পারে এই কমিশন। তারা ব্যবসায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে পারে।

পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে বিশেষ টাস্কফোর্সের ও ভোক্তা অধিকারের কার্যক্রম সারা দেশে চালু করার কাজটিও বাকি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারী, মজুতদার, কালোবাজারিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা শোনানো হলেও সেই দৃষ্টে পদক্ষেপ নেই। বিশ্লেষকরা বাজার ব্যবস্থাপনায় সমস্যা দেখছেন। বলছেন, এই সংকট মোকাবিলায় যতটা দ্রুততার সঙ্গে আমদানি করা দরকার ছিল, তা হচ্ছে না। কর ছাড় দেওয়া হলেও যথেষ্ট নয়। যে কারণে অভিযানে সাফল্য আসছে না।

 এছাড়া, বিচ্ছিন্ন কোনো শক্ত উদ্যোগেও এই সংকটের সমাধান আশা করা যায় না। তবে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে সমন্বিত ব্যবস্থা কাজে আসতে পারে। বাণিজ্যের সাথে অর্থ, কৃষি, মৎস্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে নিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশন একটি ড্রাইভ দিতে পারে। তাহলে ডিম, মুরগি, গরুর গোশত, দুধ, সব্জি, মাছ, চাল-ডাল কোনটা কোন মন্ত্রণালয়ের সেই প্রশ্ন কেটে যাবে। দায়িত্ব ভাগাভাগি না হয়ে কাজও চলে আসবে একটি অভিন্ন প্যাকেজে।

মনে রাখতে হবে, ছাত্র-জনতা বিপ্লবের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার মসনদ তছনছ করে দিয়ে তাকে দেশছাড়া করেছে, সেখানে দায়িত্বশীলরা কেন ফ্যাসিস্টের অনুসারী বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না? কেন তারা বিপ্লবী চেতনায় নিজেদের উজ্জীবিত করতে পারছেন না? সবাইকে মনে রাখা উচিত, এ সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফসল এবং জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার কেন্দ্রবিন্দু। বিপ্লবের যে প্রত্যাশা, তা সকলে এক হয়েই পূরণ করতে হবে।


লেখক: রিন্টু আনোয়ার, সাংবাদিক ও কলামিস্ট

[email protected]


আরও খবর

আজকের শিশু আছিয়াদের আর্তনাদ

রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫




পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকলে ইটভাটা অবৈধ

প্রকাশিত:বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

যে পদ্ধতিতেই ইটভাটা পরিচালনা করা হোক না কেন, ছাড়পত্র না থাকলেই সেটা অবৈধ বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ সংক্রান্ত আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব এবং বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এদিন আদালতে মানবাধিকার সংগঠন এইচআরপিবির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জাহিদুল হক, অ্যাডভোকেট এখলাস উদ্দিন ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট সঞ্জয় মন্ডল ও অ্যাডভোকেট সেলিম রেজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডিএজি মো. তামিম, ইটভাটা মালিক সমিতির পক্ষে ছিলেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মুনতাসির আহমেদ।

আইনজীবীরা জানান, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে হাইকোর্টের আদেশে বর্তমান মেয়াদ পর্যন্ত লাইসেন্স এবং পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকলে সেগুলো উচ্ছেদে প্রশাসনের ওপর নির্দেশনা থাকবে বলে জানিয়েছেন হাইকোর্ট।


আরও খবর



ইসি থেকে এনআইডি সেবা যাচ্ছে নতুন কমিশনে

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ০৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

জানা গেছে, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকের আলোচনা অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে।


উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনার পর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ
সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া পর্যালোচনার লক্ষে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সভা করে।


উপদেষ্টা পরিষদের নির্দেশনায় বলা হয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়া প্রণয়ন সময়োপযোগী। তবে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন না রেখে সম্পূর্ণ স্বাধীন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালনা করা সমীচীন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের জন্মনিবন্ধন সনদ, জন্মনিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে এনআইডি এবং এনআইডির ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রাপ্তির প্রক্রিয়ায় অনাবশ্যক জটিলতা এবং জনদুর্ভোগ পরিহার করা আবশ্যক। এই উদ্দেশ্যে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ পরিমার্জন করে উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে উপস্থাপন করতে পারে।

 

এদিকে, এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কিছুই জানে না নির্বাচন কমিশন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গণমাধ্যমকে কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমদ জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।


তিনি জানান, এনআইডির কাঠামোগত অবস্থান শক্ত কিংবা এর ব্যাপ্তি কীভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে কেবিনেট ডিভিশন একটা উদ্যোগ নিয়েছে। সেই কেবিনেট ডিভিশনে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এর বাইরে নির্বাচন কমিশনের কিছু জানা নেই।


আরও খবর



পতিত স্বৈরাচারের বিপুল বিনিয়োগে দেশে নৈরাজ্য

প্রকাশিত:শনিবার ০৮ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ২৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পতিত স্বৈরাচার বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, আমাদের এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, সম্প্রতি নারীদের ওপর যে জঘন্য হামলার খবর আসছে, তা গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এটি ‘নতুন বাংলাদেশ’ এর যে স্বপ্ন আমরা দেখছি তার সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা এই ‘নতুন বাংলাদেশে’ নারী-পুরুষ সবার সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আমরা আমাদের সব শক্তি প্রয়োগ করে এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করব।

দেশের সব মানুষকে নিয়ে নারীবিরোধী শক্তির মোকাবিলা করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নারীবিরোধী যে শক্তি মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে, তাকে আমরা দেশের সকল মানুষকে সঙ্গে নিয়ে অবশ্যই মোকাবিলা করব। তাছাড়া, আমাদের সমাজে এখনও এমন বহু মানুষ আছে যারা নিপীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তাদের খাটো করে দেখে, অবজ্ঞার চোখে দেখে। অথচ নারীর প্রতি সহিংসতা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ করতে হলে, বৈষম্যহীন, সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে হলে নারীর পাশে দাঁড়ানোর, তাদেরকে সমর্থন জানানোর, কোনো বিকল্প নেই। আমাদের সমাজে নারীকে খাটো করে দেখার এই দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে হবে। তা না হলে আমরা জাতি হিসেবে এগোতে পারব না।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পতিত স্বৈরাচার দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে। আমাদের এখন ততটাই সতর্ক থাকতে হবে যেমনটা আমরা যুদ্ধের মতো পরিস্থিতির মধ্যে ছিলাম। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সজাগ থাকুন। নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলুন। একে অন্যের পাশে দাঁড়ান। একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়তে সরকারকে সহযোগিতা করুন।

ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া নারীরা বিভিন্ন সময়ে আমাকে তাদের সংগ্রাম ও আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছে। আমরা যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছি, নারীদের অংশগ্রহণ ও তাদের অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া তা সম্ভব হবে না। এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নারীদের সাথে পুরুষদেরও সহযোদ্ধা হয়ে কাজ করতে হবে।

সমাজে নারীদের ন্যায্য স্থান প্রতিষ্ঠার জন্য পুরুষদেরকে উৎসাহী সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। ‘নতুন বাংলাদেশ’-এ আমরা আমাদের প্রত্যাশী পরিবারকে নতুনভাবে গড়তে চাই। যেটা সব বাবা-মা’র, ভাই-বোনের নিশ্চিত ও স্বীকৃত অধিকারের পরিবার।

নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, অনেক সময় নারীরা নির্যাতনের শিকার হলেও তারা বুঝতে পারেন না কোথায় অভিযোগ জানাবেন। নারীরা যেন তাদের অভিযোগ জানাতে পারেন সেজন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে। আইনি সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০ হালনাগাদ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন, ২০২৫ প্রণয়নের কাজও আমরা হাতে নিয়েছি। আমরা একটি নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন করেছি, তারাও তাদের সুপারিশগুলো দেবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, গণঅভ্যুত্থানে সম্মুখসারিতে থাকলেও আমাদের সমাজে এখনও অনেকক্ষেত্রেই নারীরা পিছিয়ে আছে। নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার সবসময় সচেষ্ট। এজন্য বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ চলমান। দুঃস্থ মায়েদের আর্থিক সহায়তা প্রদান, নারীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি, কর্মজীবী নারীদের থাকার হোস্টেল, ডে কেয়ার সেন্টার সুবিধাসহ নানান ধরনের উদ্যোগ অন্তর্বর্তী সরকার নিচ্ছে। আরও কী কী করা যেতে পারে সেটা নিয়েও আলোচনা চলছে।


আরও খবর