মইনুল ইসলাম মিতুল: পণ্য রপ্তানিতে নতুন ইতিহাস গড়েছে
বাংলাদেশ।নভেম্বর মাসে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
যা স্বাধীনতার পর এই প্রথম বলে জানিয়েছে এক্সপোর্ট প্রোমোশন ব্যুরো অব বাংলাদেশ
(ইপিবি) এর সংশ্লিষ্ট সূত্র। স্থগিত থাকা রপ্তানি আদেশ আসতে শুরু করা এবং আগের
বানানো পোশাক ক্রেতারা নিতে শুরু করার পাশাপাশি, কাঁচামালের বর্ধিত মূল্যের কারণে নভেম্বরে রপ্তানিতে এ প্রবৃদ্ধি
দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন রপ্তানিকারক ও ইপিবির সংশ্লিষ্টরা।
এর আগে চলতি বছরের অক্টোবর ও
সেপ্টেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছিলো যথাক্রমে ৪.৩৬ বিলিয়ন ডলার এবং ৩.৯১ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে গত কয়েক মাস রপ্তানির গতিতে কিছুটা ভাটা থাকলেও অক্টোবরের পর নভেম্বরেও
পজিটিভ গ্রোথ হওয়ায় সার্বিকভাবে চলতি ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে
(জুলাই-নভেম্বর) এর আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১১
শতাংশ।
ইপিবি’র প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, গত
নভেম্বরে বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে ৫.০৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, যা পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায়
২৬ শতাংশ বেশি।
এদিকে, সাম্প্রতিক বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) বাণিজ্য পরিসংখ্যান
পর্যালোচনা অনুসারে, ২০২১
সালে বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশ আবারও দ্বিতীয় অবস্থান অর্জন করেছে।
২০২০ সালে বাংলাদেশ ছিল তৃতীয় অবস্থানে; সেবার
বাংলাদেশকে পেছনে ফেলে দেয় ভিয়েতনাম।
ইপিবি’র ভাইস চেয়ারম্যান আ হ ম আহসান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ইনফ্লেশন
কিছুটা কমে আসায় সেখানে চাহিদা বাড়তে থাকা, আগের
তৈরি করা পণ্য নভেম্বরে এসে রপ্তানি হওয়া, ইউএস ও
ইউরোপীয় ইউনিয়নের মার্কেটের বাইরে জাপান, কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়ার মত বাজারে পোশাক রপ্তানি
বৃদ্ধিকে সার্বিকভাবে নভেম্বরে রপ্তানি গ্রোথ এত বেশি হওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ।
তবে অনেক রপ্তানিকারক ইপিবির পরিসংখ্যানের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের ৮২ শতাংশই
আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। সর্বশেষ ডব্লিউটিওর বাণিজ্য পরিসংখ্যান পর্যালোচনা
অনুসারে, ২০২১ সালে তৈরি পোশাকের বৈশ্বিক
রপ্তানির ৮ শতাংশ বাংলাদেশের দখলে; যার
মূল্য ৩৫.৮ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে, তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামের অংশ
২০২০ সালের ৬.৪% থেকে ২০২১ সালে ৫.৮% এ নেমে এসেছে। ২০২১ এ বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানির
বাজারে ৩.৫ শতাংশ তুর্কিয়ের, ভারতের ৩
শতাংশ, মালয়েশিয়ার ২.৭ শতাংশ এবং
ইন্দোনেশিয়ার রয়েছে ১.৭ শতাংশ। এ বাজারের সর্বোচ্চ ৩২.৮ শতাংশের দখলের রয়েছে চীন; যার মূল্য ১৭৬ বিলিয়ন ডলার। তবে, দেশে পোশাক রপ্তানি খাতের বাইরে
অন্যান্য অনেক খাত চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে প্রত্যাশিত রপ্তানি আয়ে ব্যর্থ
হয়েছে।
ইপিবি সূত্র জানিয়েছে, গত পাঁচ মাসে পোশাক রপ্তানিতে ভালো
প্রবৃদ্ধি হলেও ফ্রোজেন এবং কাঁচা মাছ, কৃষিপণ্য, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, স্পেশালাইজড টেক্সটাইল, হোম টেক্সটাইলসহ বেশ কিছু পণ্যের
রপ্তানি পূর্বের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। অন্যদিকে চামড়া ও চামড়াজাত
পণ্য এবং প্লাস্টিকসহ কয়েকটি পণ্যের রপ্তানি এ সময়ে বেড়েছে।