Logo
শিরোনাম

ফুটপাতের চাঁদার টাকা খায় কারা ?

প্রকাশিত:সোমবার ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫ |

Image

রোকসানা মনোয়ার : রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় শনিরআখড়া জিয়া সরণি সড়কে আবেদিন মার্কেটের কোনা থেকে জাপানি বাজার পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত দখল করে চার শতাধিক শতাধিক দোকান রয়েছে দুপাশে। বর্নমালা স্কুল রোডে গোয়াল বাড়ী মোড় পর্যন্ত সড়ক ও ফুটপাত দখল করে দুই শতাধিক শতাধিক দোকান রয়েছে । যার ফলে প্রতিদিন বড় জ্যামে পরে থাকতে হয় এলাকাবাসি ও স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের । এদিকে ধোলাইপাড়ের শেষ মাথায় অবৈধ অটোরিকশা স্ট্যান্ড আরো বিপদে ফেলছে এলাকাবাসিকে ।

কদমতলী থানার জুরাইন মেডিকেল রোড থেকে বিক্রমপুর প্লাজা পর্যন্ত এবং জুরাইন আলম মার্কেট থেকে সেতু মার্কেট রাস্তায় শদেড়েক দোকান রয়েছে।  রাজধানীর গুলিস্তান ও বায়তুল মোকাররম এলাকায় ফুটপাত, সড়ক এবং অলিগলির রাস্তায় প্রায় আড়াই হাজার দোকান বসছে।

খিলগাঁওয়ের শহীদ বাকী সড়কের পশ্চিম মাথা থেকে শুরু করে তালতলা হয়ে মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ পর্যন্ত এক দশমিক এক কিলোমিটার রাস্তার দুইপাশে প্রতিদিন স্ট্রিট ফুডের ৩০-৩৫টি গাড়িসহ বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক ভ্যান বসে। ফলে একশ ফুটের প্রশস্ত রাস্তার মাত্র ৫০ থেকে ৬০ ফুট যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। রাস্তা দখল করে বসা অবৈধ দোকানিদের অবাধ বাণিজ্যের কারণে শুক্রবারসহ বিভিন্ন ছুটির দিনে ব্যস্ততম এ সড়কটি আরও সংকীর্ণ হয়ে সৃষ্টি হয় ব্যাপক যানজট।

একই অবস্থা মিরপুর-১৪ নম্বর থেকে ভাষানটেক পর্যন্ত গোটা সড়কের। ১০০ ফুট প্রশস্ত এ রাস্তার দুপাশের অর্ধেকের বেশি জায়গা দখল করে অবৈধভাবে মালামাল রেখে সেখানকার দোকানিরা নির্বিঘ্নে ব্যবসা করছেন। এতে সামান্য গাড়ির চাপ বাড়লেই ওই সড়ক দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। অথচ ভাষানটেক থানা এ সড়ক সংলগ্ন হওয়ায় পুলিশের গাড়িগুলোকে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা অবৈধ দখলদারদের স্তূপকৃত মালামালের পাশ কাটিয়ে যেতে হচ্ছে।

রাজধানীবাসীর অভিযোগ, শুধু শহীদ বাকী সড়ক কিংবা ভাষানটেক রাস্তাতেই নয়, ঢাকার ব্যস্ততম প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলির প্রতিটি রাস্তার দুপাশের বড় অংশ হাজার হাজার অবৈধ দোকানির দখলে। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা ভাড়ার বাণিজ্য চলমান থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর তা আরও বেড়েছে। আগে যে সড়কে ৭৫ থেকে ৮০টি অবৈধ দোকান বসত, তা এখন শয়ের কোটা ছাড়িয়েছে। আসন্ন রমজানে প্রতিটি রাস্তায় অতিরিক্ত আরও ২০ থেকে ২৫ শতাংশ অবৈধ দোকান বাড়ানোর জন্য এর নেপথ্যের গডফাদাররা জোরেশোরে প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে নগরীর অধিকাংশ সড়কে ঈদের আগ পর্যন্ত যানজট পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নেবে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

এদিকে রমজানে ইফতারির পণ্য ও ঈদের পোশাকসহ বিভিন্ন মালামাল বিক্রির জন্য রাস্তা দখল করে নতুন দোকান বসানো নিয়ে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে নতুন শত্রুতা দানা বাঁধছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, এ নিয়ে তাদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। যা এরইমধ্যে তারা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করেছে।

গোয়েন্দারা জানান, রাজনৈতিক নেতাকর্মী, পুলিশ ও সন্ত্রাসীরা শুধু অবৈধভাবে রাস্তা ভাড়া দিয়ে চাঁদা তুলছে তাই-ই নয়, অনেক জায়গায় এখন এসব স্থানের পজিশন বিক্রি হচ্ছে। জায়গার গুরুত্বভেদে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা, এমনকি কোথাও কোথাও ৫ লাখ টাকায় পজিশন বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাস্তা দখল করে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনার বিষয়টি থানা পুলিশ, সিটি করপোরেশন ও জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন দপ্তরে জানানো হলেও তারা একে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায়িত্ব এড়াচ্ছে। তবে স্থানীয় লোকজন সংঘবদ্ধ হয়ে এসব রাস্তা দখলকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে তাদের আসল স্বরূপ প্রকাশ পাচ্ছে। তখন তারা তাদের প্রতিবাদে সহযোগিতা না করে বরং অবৈধ দখলদারদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইন্ধন যোগাচ্ছে। এদিকে সংকীর্ণ রাস্তার যানজটে পড়ে যান্ত্রিক যানবাহনের গতি মন্থর হয়ে যাওয়ায় প্রতিদিন অযথাই হাজার হাজার লিটার সিএনজি, এলপিজি, ডিজেল, পেট্রোল ও অকটেন পুড়ছে। নষ্ট হচ্ছে যানবাহনের যাত্রীদের মূল্যবান কর্মঘণ্টা। অস্বাভাবিক যানজটের কারণে তাদের গণপরিবহণে বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাস্তার পাশে ছোট চৌকি, ভ্যান ও চাকাওয়ালা ঘুন্টিঘর বসিয়ে দেড় থেকে দুই লাখ মানুষ অবৈধভাবে ব্যবসা করছে। তবে এদের কাছ থেকে যারা অবৈধভাবে টাকা তুলছেন তাদের নেপথ্যের গডফাদার মাত্র ৩ থেকে ৪শ। যদিও তাদের প্রত্যেকের ১০ থেকে ১৫ জন করে লাইনম্যান রয়েছে। যারা প্রতি মাসে ১৫০ থেকে ১৬০ কোটি টাকা রাস্তা ভাড়া তুলে চাঁদাবাজচক্রের মূল হোতাদের হাতে তুলে দিচ্ছে। এ টাকা থানা ও ফাঁড়ির পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক নেতা, স্থানীয় সন্ত্রাসী ও সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের মধ্যে ভাগ হচ্ছে।

ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের এক গবেষণা অনুযায়ী, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অবৈধ দোকানিদের কাছ থেকে বছরে ১ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা চাঁদা আদায় হয়। যা চলে যায় দখলবাজ সিন্ডিকেটের পকেটে। এই বাণিজ্য ঘিরে হামলা, সংঘর্ষ, এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটছে।

নগর পরিকল্পনাবিদরা বলছেন, মানবিক কারণে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা থেকে অবৈধ পণ্য বিক্রেতাদের তুলে দিচ্ছে না এমনটা দাবি চাউর করলেও পুরোটাই ধান্ধাবাজি কথাবার্তা। ক্ষমতাসীন দলের নেতা, স্থানীয় সন্ত্রাসী, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের চাঁদা না দিয়ে ঢাকার কোনো রাস্তায় একটি অবৈধ দোকানও বসতে পারে না। রাস্তার ভাড়া আদায়ের নামে তারা উল্টো দরিদ্রদের রক্ত চুষে খাচ্ছে। গডফাদারদের সুযোগ না দিয়ে বরং টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা দেওয়া হলে রাস্তা দখল করা দোকানিদের কম ভাড়া গুনতে হতো। পাশাপাশি সরকারি কোষাগারেও বড় অঙ্কের অর্থ জমা পড়ত। রাস্তা থেকে অবৈধ দখলদার তুলে দিতে না পারাটাকে প্রশাসনের দুর্নীতিজনিত ব্যর্থতা বলেও মন্তব্য করেন তারা।

এ প্রসঙ্গে নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবিব বলেন, অবৈধ কর্মকাণ্ডে প্রশাসনের নীরব ভূমিকা প্রমাণ করে তারা কোনো না কোনোভাবে এসবের সঙ্গে জড়িত। অবৈধ দখলদারদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে পারছে না বলেই রাস্তার একটি বড় অংশ বেদখল হয়ে গেছে। যদিও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কখনো কখনো মিডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকারের যেসব সংস্থা বা কার্যালয় নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে, তাদের জবাবদিহিতার মধ্যে আনলেই এসব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন এ পরিকল্পনাবিদ।

মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ বলেন, যানজটের কারণে ঢাকা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। এজন্য প্রশাসনের ব্যর্থতা দায়ী। তারা সঠিকভাবে কাজ করে না। তিনি আরও বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার আইনগতভাবে সেটা নিশ্চিত করবে। কিন্তু মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ করে তো ব্যবসার সুযোগ দিতে পারে না।

এদিকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন রাস্তা থেকে অবৈধ দোকানিদের উচ্ছেদে তাদের ব্যর্থতা ঢাকতে নানা খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দাবি, সিটি করপোরেশনকে নগরীর রাস্তা-ফুটপাত পরিচ্ছন্ন ও দখলমুক্ত রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে পুলিশ ফোর্স বিশেষ প্রয়োজন। যা সিটি করপোরেশন প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারবে। সেটা না থাকায় ডিএমপির পুলিশ নিয়ে সিটি করপোরেশন অবৈধ দোকানিদের উচ্ছেদ করে আসার সঙ্গে সঙ্গে তা আবার বেদখল হয়ে যাচ্ছে।

ডিসি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের মাঠ পর্যায়ের দুএকজন সদস্য রাস্তার অবৈধ দোকানিদের কাছ থেকে উৎকোচ নিতে পারে। তবে ঢালাওভাবে সবাইকে অভিযুক্ত করা ঠিক নয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তারা সরাসরি তদারকি করে বিভিন্ন রাস্তা থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করেছেন। কিন্তু লাভের লাভ তেমন কিছুই হয়নি। কারণ তারা উচ্ছেদ অভিযান থেকে সরে আসার পরপরই স্থানীয় প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসীরা ফের সেখানে দোকান বসিয়ে চাঁদা আদায় করছে। ফুটপাত ও রাস্তায় অবৈধ দোকান বসিয়ে লাইনম্যানরা ভাড়া তুললেও তা স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও পুলিশের পকেটে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

 


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




মৃত প্রিয়জনদের জন্য যেসব আমল করবেন

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। এই মাসে মহান আল্লাহ জান্নাতের দরজা খুলে দেন, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন। তাই মুমিনের উচিত এই মাসে মৃত প্রিয়জনদের জন্য বেশি বেশি দোয়া করা। তাদের কথা স্মরণ করা, যারা একসময় আমাদের সঙ্গে রমজানের দিনগুলো কাটিয়েছে।

সেই প্রিয় মা, প্রিয় বাবা, প্রিয় ভাই-বোন, কলিজার টুকরা সন্তান-সন্ততি, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনকে স্মরণ করা, যারা একসময় আমাদের জীবনের অংশ হয়ে ছিল।

 

তাদের সান্নিধ্য একসময়কে আনন্দময় ও অর্থবহ করত, আমাদের অনুভূতি ও মনকে উজ্জীবিত করত। কিন্তু আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত বিধানে তাদের সময় ফুরিয়ে গেছে, তারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। স্বপ্নের মতো হারিয়ে গেছে, রেখে গেছে অনেক মধুর স্মৃতি, যা এখনো আমাদের মনে কেবল তাদের জন্য ভালোবাসা ও হাহাকার জাগিয়ে তোলে।

মাগফিরাতের এই মাসে তাদের ভুলে গেলে চলবে না, যারা একসময় আমাদের সঙ্গে রমজানের আনন্দ ভাগ করে নিত। সাহরিতে ইফতারে আমাদের পরম যত্নে ইবাদতের তাগিদ দিত। স্মরণ করা উচিত আমাদের সেই পূর্ব পুরুষদের, যাঁদের রক্ত আমাদের শিরা-উপশিরায় বইছে। সেই মহা মনীষীদের, যাঁদের ত্যাগ, চোখের পানি ও রেখে যাওয়া জ্ঞানের আলোয় আমাদের পর্যন্ত ইসলাম পৌঁছেছে।

পূর্ববর্তীদের জন্য দোয়া করা প্রত্যেক মুমিনের দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, যারা তাদের পরে এসেছে তারা বলে : হে আমাদের রব, আমাদেরকে ও আমাদের ভাই, যারা ঈমান নিয়ে আমাদের পূর্বে অতিক্রান্ত হয়েছে, তাদেরকে ক্ষমা করুন। (সুরা : হাশর, আয়াত : ১০)

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মারা গেলে তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়, তবে তিনটি জিনিস চলতে থাকে : সদকায়ে জারিয়া; এমন জ্ঞান, যা মানুষ উপকৃত হয়; আর নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। (মুসলিম, হাদিস : ৪১১৫)

নিম্নে পবিত্র রমজানে মৃতদের জন্য করণীয় কয়েকটি আমল তুলে ধরা হলো

সদকা : উল্লিখিত হাদিস দ্বারা বোঝা যায়, মৃতদের ইসালে সওয়াব করার একটি উত্তম পদ্ধতি হতে পারে সদকা। কারো সামর্থ্য থাকলে দান-সদকার মাধ্যমে মৃত আত্মীয়দের ইসালে সওয়াব করা যেতে পারে।

দোয়া : উল্লিখিত হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) এমন নেক সন্তানের কথা উল্লেখ করেছেন, যে তার জন্য দোয়া করে। তাই পবিত্র রমজানে মৃতদের জন্য আমরা খুব বেশি বেশি দোয়া করতে পারি, বিশেষ করে সাহরি ও ইফতারের সময় তাদের জন্য মহান আল্লাহর কাছে মাগফিরাতের দোয়া করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেবেন।

কোরআন তিলাওয়াত : মাকিল ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা তোমাদের মৃতদের জন্য সুরা ইয়াসিন পাঠ করো। (আবু দাউদ, হাদিস : ৩১২১)

অতএব, রমজান যেহেতু কোরআনের মাস, এ মাসে আমরা মৃত আত্মীয়দের ইসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করতে পারি। কিন্তু মৃতদের জন্য অর্থের বিনিময়ে কাউকে দিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করানো উচিত নয়।

ওমরাহ : বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এক মহিলা এসে বলল, আমার মা মৃত্যুবরণ করেছেন, কিন্তু তিনি হজ আদায় করেননি। তাঁর পক্ষে কি আমি হজ আদায় করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ, তাঁর পক্ষে তুমি হজ আদায় করো। (তিরমিজি, হাদিস : ৯২৯)

তাই কারো সামর্থ্য থাকলে পবিত্র রমজানে মৃতদের ইসালে সওয়াবের নিয়তে ওমরাহ পালন করা যেতে পারে।


আরও খবর

রোজা রাখার বিষয়ে বিজ্ঞান কী বলে?

শুক্রবার ১৪ মার্চ ২০২৫




নওগাঁ ও পাবনায় বাস ডাকাতি, ৬ ডাকাত আটক

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁ ও পাবনায় বাস ডাকাতির ঘটনায় আন্ত:জেলা ডাকাত দলের ৬ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে নওগাঁ জেলা পুলিশ। এসময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস জব্দ ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারসহ লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করেছেন পুলিশ। সোমবার ৩ মার্চ দুপুর ১টায় নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে  এসব তথ্য জানান নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার।

গ্রেফতারকৃত ৬ জন হলেন, জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার আওড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে শামীম ইসলাম সব্দুল (২৭),  হাতিয়র গ্রামের অরুণ চন্দ্র বর্মনের ছেলে রঞ্জিত চন্দ্র বর্মন (৩০), ও একই উপজেলার ঝামুটপুর গ্রামের লুৎফর রহমানের ছেলে আব্দুল লতিফ ওরফে নাঈম (২৭), গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার পুরন্দর গ্রামের মনসুর বেপারীর ছেলে শাহারুল ইসলাম (৩৭) ও একই গ্রামের মফিজ উদ্দীনের ছেলে শহিদুল ইসলাম (৪০) এবং বগুড়ার কাহালু উপজেলার সিন্ধুরাইল গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে শাহাদাত হোসেন (৪০)। নওগাঁ জেলা পুলিশ সুপার সাফিউল সারোয়ার বলেন, গত ২২ ফেব্রুয়ারী রাতে নওগাঁর পত্নীতলায় একটি বিআরটিসি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম মাঠে নামে এবং তদন্ত শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় জয়পুরহাট, গাইবান্ধা ও বগুড়ায় অভিযান পরিচালনা করে ৬ জন ডাকাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে ৩জনকে জয়পুরহাটের কালাই থেকে, দুইজন গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে এবং একজন বগুড়ার কাহালু থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে লুণ্ঠিত মোবাইল, একজোড়া কানের দুলসহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে করাত, কয়েকটি হাসুয়া, একটি প্লাস এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি হায়েস মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, নওগাঁয় গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে ৫জন গত ২৮ ফেব্রুয়ারী পাবনার সাঁথিয়ায় সংঘটিত ডাকাতির সাথেও জড়িত ছিল বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শহিদুলের বিরুদ্ধে ৬টি, শাহারুলের বিরুদ্ধে ২টি, শামীমের বিরুদ্ধে ২টি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে একটি করে ডাকাতির মামলা রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান এবং অন্য ডাকাত সদস্যদের গ্রেফতারের জন্য নওগাঁ জেলা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান ও ফারজানা হোসেন এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মহাদেবপুর সার্কেল) জয়ব্রত পাল সহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।


আরও খবর



যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে রাজপথে সাংবাদিকরা

প্রকাশিত:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

জাতীয় দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ডিক্লারেশন বাতিলের প্রতিবাদে নওগাঁর মহাদেবপুরে সড়কে নেমে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করলেন সাংবাদিকরা। শনিবার ১৫ মার্চ সকাল সারে ১০টায় নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা সদরে মাছের মোড়ে প্রধান সড়কের উপর আয়োজিত মানববন্ধনে নওগাঁ জেলা সদর, আত্রাই, মান্দা ও মহাদেবপুরের সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, সমাজকর্মী ও নারীনেত্রীসহ শতাধিক মানুষ অংশ নেন। মহাদেবপুর রিপোর্টার্স ইউনিটি, মহাদেবপুর মডেল প্রেসক্লাব ও মহাদেবপুর দর্পণ পরিবার এর আয়োজন করে।

মহাদেবপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি, যায়যায়দিনের সাবেক মহাদেবপুর প্রতিনিধি ও পরীক্ষামূলক সাপ্তাহিক মহাদেবপুর দর্পণের সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক কিউ, এম, সাঈদ টিটো এতে সভাপতিত্ব করেন। রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ও মহাদেবপুর দর্পণের বার্তা সম্পাদক কাজী সামছুজ্জোহা মিলনের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন মহাদেবপুর মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি ও যায়যায়দিনের বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি ইউসুফ আলী সুমন।

মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে যায়যায়দিনের নওগাঁ প্রতিনিধি রুহুল আমিন, আত্রাই প্রতিনিধি ওমর ফারুক, মান্দা প্রতিনিধি মাহবুুবুজ্জামান সেতু, নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের কার্য-নির্বাহী কমিটির মেম্বার, জাতীয় দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার ও দৈনিক আজকের বিনোদন পত্রিকা, বিডি টুডেস এর সিনিয়র রিপোর্টার শহিদুল ইসলাম জিএম মিঠন, দৈনিক নয়া দিগন্তের মহাদেবপুর প্রতিনিধি ও দৈনিক শিক্ষা ডটকমের নওগাঁ প্রতিনিধি অহিদুল ইসলাম, মহাদেবপুর মডেল প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজী সাইফুর রহমান সানি, উপদেষ্টা সামছুজ্জামান বিশ্বাস জামান, মহাদেবপুর দর্পণের প্রকাশক নারীনেত্রী কাজী রওশন জাহান, এনটিভি মাল্টিমিডিয়ার মহাদেবপুর-বদলগাছী প্রতিনিধি মেহেদী হাসান মিঠু, দৈনিক কালবেলার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি বিকাশ চন্দ্র, বার্তা ২৪ এর নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম, বাংলাদেশ সাংবাদিক সংস্থার কেন্দ্রীয় ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক সাংবাদিক মেহেদী হাসান অন্তর, দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি নাজমুল হক, দৈনিক নতুন দিন পত্রিকার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি রশিদুল ইসলাম রশিদ, দৈনিক ঘোষণার নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি মোস্তফা কামাল, প্রতিদিনের বাংলাদেশের মহাদেবপুর প্রতিনিধি এম, আর রাজ, দি-হাঙ্গার প্রকেক্টের পিস ফ্যাসিলেটেটর গ্রুপ পিএফজির সাবেক কো-অর্ডিনেটর হারুন অর রশিদ, সদস্য আব্দুর রহিম টুকু, মানবাধিকার কর্মী অসিত দাস, সমাজকর্মী জামিউল ইসলাম বিদ্যুৎ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদৎ হোসেন শান্ত, ছাত্রনেতা মোতালেব, শিক্ষার্থী রিসান আস সামী, কাজী আবু হুরাইরা শিলন প্রমুখ অংশ নেন। 

বক্তারা মহামান্য হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা ভঙ্গ করে তুচ্ছ কারণ দেখিয়ে যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন বাতিল করা ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহি:প্রকাশ বলে উল্লেখ করে অবিলম্বে যায়যায়দিনের প্রকাশনা অব্যাহত রাখার পূণরাদেশ দেয়া ও প্রধান কার্যালয় অবৈধ দখলমুক্ত করার দাবি জানান। অন্যথায় আরো বৃহৎ কর্মসূচি দিয়ে সাংবাদিকেরা মাঠে থাকবে বলে হুঁশিয়ারি দেয়া দেন বক্তারা।


আরও খবর



মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে শেখ হাসিনার বিচার হবে

প্রকাশিত:বুধবার ০৫ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫ |

Image

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেছেন। এছাড়া অপরাধের সাথে জড়িত হাসিনার পরিবারের সদস্য ও সহযোগীদেরও বিচার হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

মূলত হাসিনা সরকারপ্রধান থাকাকালীন জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদারকি করার পাশাপাশি গত বছরের জুলাই ও আগস্টে বিক্ষোভকারীদের ওপর গণহত্যা চালানোর জন্য অভিযুক্ত হয়েছেন। বুধবার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমটি।

স্কাই নিউজের সাথে কথা বলার সময় প্রফেসর ইউনূস বলেছেন: “বিচার হবে। শুধু তার (হাসিনা) নয়, তার সাথে জড়িত সকল লোক — তার পরিবারের সদস্য, তার ক্লায়েন্ট বা সহযোগীদেরও।”

ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। নাটকীয় এই পটপরিবর্তনের পর একে একে বের হয়ে আসছে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র।

হাসিনার বিরুদ্ধে গোপন আটক কেন্দ্রগুলোর একটি নেটওয়ার্কের তদারকি করার অভিযোগ রয়েছে। এসব গোপন আটক কেন্দ্রে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হতো, নির্যাতনও করা হতো এবং কয়েকজনকে হত্যাও করা হয়েছিল — আর এই সবই করা হয়েছিল “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের” ব্যানারে।

মানবতাবিরোধী অপরাধ ও দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হাসিনার বিরুদ্ধে দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে বাংলাদেশ। অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, (হাসিনাকে ফেরত চেয়ে) তারা “আনুষ্ঠানিক চিঠি” পাঠিয়েছেন কিন্তু নয়াদিল্লি থেকে এখনও “কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া” পাওয়া যায়নি।

তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেছেন, হাসিনা অবশ্যই আদালতের মুখোমুখি হবেন, আর সেটা সশরীরে বাংলাদেশে উপস্থিত থেকে হোক বা অনুপস্থিতিতে, ভারতে থেকেই হোক।

প্রফেসর ইউনূস সম্প্রতি “হাউস অব মিররস: বা আযনাঘর নামে পরিচিত একটি কুখ্যাত গোপন কারাগার পরিদর্শন করেছেন। “দরিদ্রের ব্যাংকার” হিসেবে পরিচিত অর্থনীতির এই অধ্যাপক বলেছেন, সেখানে তিনি যা দেখেছেন তাতে তিনি হতবাক।

ড. ইউনূস বলেন, এটিই সবচেয়ে কুৎসিত জিনিস যা আপনি দেখতে পারেন, আপনি অনুভব করতে পারেন বা আপনি পর্যবেক্ষণ করতে পারেন।

হাসিনার বিরুদ্ধে তার নিরাপত্তা বাহিনী এবং পুলিশকে ব্যবহার করে শত শত নেতাকর্মীকে অপহরণ, নির্যাতন ও হত্যার তদারকি করার অভিযোগ রয়েছে। হাসিনা, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং প্রায় ৮০০ গোপন কারাগারের নেটওয়ার্ক তদারকি করার দায়ে অভিযুক্তদের অনেকেই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অভিযুক্ত অপরাধের সাথে জড়িত লোকের সংখ্যা এবং পরিসর (বেশি হওয়ায়) কাজ করতে “সময় লাগছে”। তিনি বলেন, সবাই এই অপরাধের সাথে জড়িত ছিল। পুরো সরকার এর সাথে জড়িত ছিল। সুতরাং এটা বের করা কঠিন যে— কারা সত্যিই এবং উৎসাহের সাথে এই অপরাধগুলো করছিল, আর কারা উচ্চপদস্থদের আদেশের অধীনে এসব কাজ করেছিল এবং কারা পুরোপুরি এসব অপরাধের সমর্থনকারী না হলেও এই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গিয়েছিল।

হাসিনা, নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশকে গত বছরের জুলাই এবং আগস্টে বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস দমন-পীড়নের জন্যও অভিযুক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘ অনুমান করছে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার আগের দিনগুলোতে প্রায় সরকারের সহিংস দমন-পীড়নে ১৪০০ জন নিহত হয়েছিলেন।

প্রফেসর ইউনূস ভুক্তভোগীদের পরিবার কত দ্রুত ন্যায়বিচার দেখতে পাবে এবং তার চোখের সামনে সেই বিচার হবে কিনা তা নিয়ে প্রত্যাশা পূরণ করার চেষ্টা করে চলেছেন। এমন অবস্থায় চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে নতুন নির্বাচন হতে পারে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, কিছু অপরাধী শাস্তি পাবে, কিছু তখনও প্রক্রিয়াধীন থাকবে, কিছু তখনও খুঁজে পাওয়া যাবে না।

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশ ছেড়ে পলায়নের পর তার পরিবারের সদস্যসহ অনেকের বিরুদ্ধেই নানা অভিযোগ বের হয়ে আসছে এবং দুর্নীতিবিরোধী তদন্ত চলছে। বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে তাদের একজন ব্রিটিশ লেবার এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি শেখ হাসিনার ভাগ্নী।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলাটি খুবই গুরুতর। দেশে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ রয়েছে এবং সবকিছু খতিয়ে দেখা হবে।

মূলত বাংলাদেশে দুর্নীতির তদন্তে নাম আসার পর গত জানুয়ারি মাসে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

এছাড়া বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আগমন অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের জন্য আরেকটি চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ওই দেশটির দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির পর মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু মুসলিমদের সংখ্যা তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে সহায়তা করার জন্য তারা এখন একটি “নিরাপদ অঞ্চলের” সম্ভাবনা নিয়ে মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সাথে আলোচনা করছেন।

তিনি বাংলাদেশের কক্সবাজারে বড় সমস্যার কথাও স্বীকার করেছেন। এখানে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির রয়েছে এবং সেখানে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আনুমানিক ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী অবস্থান করছে এবং সহিংসতা, মাদক এবং আধাসামরিক কার্যকলাপ ব্যাপকভাবে ছড়িযে পড়েছে। প্রফেসর ইউনূস বলেন, এই উত্তেজনা “হারিয়ে যাবে না।


আরও খবর

অস্থির চালের বাজার

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫

বাড়তে পারে গরম

রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫




চাকরি যাবে জানলে ট্রাম্পকে ভোট দিতাম না

প্রকাশিত:রবিবার ০৯ মার্চ ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৬ মার্চ ২০২৫ |

Image

গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিপুল ভোটে জয়ী হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অনেক মার্কিনরা মনে করেছিলেন ট্রাম্প দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন আনবেন। সেই আশায় তারা ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু তারা ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেনি ট্রাম্প ক্ষমতায় এলে তারা চাকরি হারাবেন। ট্রাম্পকে বড় আশা করে ভোট দিয়েছিলেন মাইকেল গ্রগনার্ড। তার ধারণা ছিল ট্রাম্প ক্ষমতায় গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আনবেন। কিন্তু তিন মাস যেতে না যেতেই গ্রগনার্ড বুঝে ফেলেছেন, তিনি ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে কত বড় ভুল করেছেন। সম্প্রতি দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থেকে যে হাজার হাজার কর্মীর চাকরি গেছে, গ্রগনার্ডও তাদের মধ্যে রয়েছেন। মার্কিন কৃষি বিভাগে একজন আইনি উপদেষ্টা হিসেবে সবে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি।

সিএনএনকে এই রিপাবলিকান ভোটার বলেন, ‘চাকরি হারিয়ে আমি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। এটি ছিল আমার কাছে স্বপ্নের চাকরি। অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে নিয়ে এই সেদিনই জায়গা পাল্টে আরকানসাসের লিটল রক এলাকায় এসেছেন। বলেন, ‘আশা করছিলাম, চাকরিটা করে বাকি জীবন কাটিয়ে দেব।’

তার মতোই চাকরি হারানো অনেক ফেডারেল কর্মীও ট্রাম্পকেই ভোট দিয়েছিলেন। সাবেক এই কর্মীদের কয়েকজন সিএনএনকে বলেন, তারা ভেবেছিলেন, ট্রাম্পের নীতি তাদের মূল্যবোধের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং এ নীতি তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে। কিন্তু এখন চাকরিই চলে গেছে। কাজ খুঁজে পেতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে।

চাকরি হারানো আরেকজন হলেন জেমস ডায়াজ। তিনি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব বিভাগে (আইআরএস) কাজ করতেন। ডায়াজ সিএনএনকে বলেন, ‘আমি ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছি ঠিক, কিন্তু তার প্রশাসন যেভাবে গণহারে কর্মীদের চাকরি খাচ্ছে, তার সঙ্গে একমত নই।’

চাকরি হারানো কিছু ফেডারেল কর্মী এখন ট্রাম্পকে ভোট দেওয়ার জন্য অনুশোচনা করছেন। সেন্টারস ফর মেডিকেয়ার অ্যান্ড মেডিকেইড সার্ভিসেসের সাবেক একজন নারী কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নতুন চাকরি শুরু করার মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্যাশা ছিল ট্রাম্প নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি ও মূল্যস্ফীতি কমানোর মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটাবেন। কিন্তু তিনি এমনটা করবেন জানলে তাকে কখনোই ভোট দিতাম না।’

ফেডারেল কর্মীদের এমন গণ-চাকরিচ্যুতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ধনকুবের ইলন মাস্কের কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যয় ও জনশক্তির আকার কমানোর পরিকল্পনারই অংশ।


আরও খবর