রাজধানীর গণপরিবহনে অভিযান চালাচ্ছে বিআরটিএ'র ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বিভিন্ন অনিয়ম-অভিযোগে আদায় করা হচ্ছে জরিমানা। দেওয়া হচ্ছে মামলা। বিআরটিএ'র এসব অভিযান স্বত্বেও রাজধানীর সড়কে ফেরেনি শৃঙ্খলা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়,
ওয়েবিল সিস্টেম, যত্রতত্র যাত্রী তোলা কোনোটিই
বন্ধ হয়নি।
বিআরটিএ সূত্র জানায়, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়
এবং রুট ভায়োলেশন, রুট পারমিট না থাকা,হাইড্রোলিক
হর্ন,ফিটনেস না থাকা,ওয়েবিল ও অন্যান্য
অপরাধের দায়ে ৮৪টি বাসের বিপরীতে ৮৪ মামলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা জরিমানা আদায়
করা হয়। এছাড়া রুট পারমিট না থাকায় একটি গাড়িকে ডাম্পিং স্টেশনে পাঠানো হয়েছে বলে
জানিয়েছে বিআরটিএ।
বাড়তি ভাড়া আদায় নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়
যাত্রীদের সঙ্গে। চার্ট অনুযায়ী ভাড়া নেওয়ার কথা বললে ওয়েবিলের কথা বলে বেশি টাকা
আদায় করে। এরপরও যাত্রীরা পুরো বাসে গাদাগাদি করে উঠতে বাধ্য হন এবং অতিরিক্ত ভাড়া
দেন। তবে বিপাকে পড়েন নারী যাত্রীরা। তাদের বাসে ওঠার সুযোগই হয়নি ভিড়ে।
বাসের এ অনিয়ম আর অতিরিক্ত ভাড়া
আদায়ে যাত্রীদের দৈনন্দিন জীবনের খরচের মাত্রা আরো কয়েকগুন বেড়ে যায়।
এদিকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন
কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পুনর্র্নিধারিত বাস ভাড়া কার্যকর করা গণপরিবহনে শৃঙ্খলা
ফেরাতে তিনটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। এসব সিদ্ধান্ত ১০ অগাস্ট থেকেই কার্যকর হয়। কিন্তু এতেও
শৃঙ্খলা ফেরেনি গণপরিবহনে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি
সিদ্ধান্তগুলো হলো- বিআরটিএ’র চার্ট অনুযায়ী ভাড়া আদায়
করতে হবে। চার্টের বাইরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা যাবে না। প্রতিটি গাড়িতে দৃশ্যমান
স্থানে ভাড়ার চার্ট অবশ্যই টাঙিয়ে রাখতে হবে।
কোনো পরিবহনের গাড়িতে বিআরটিএ’র পুনর্নির্ধারিত ভাড়ার অতিরিক্ত ভাড়া যাতে আদায় না করা হয়, সে বিষয়ে সভায়
মালিকদের সমন্বয়ে নয়টি ভিজিলেন্স টিম গঠন করা হয়। এসব টিম বিআরটিএ’র ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে থেকে সব অনিয়ম তদারকিসহ আইনানুগ ব্যবস্থা
নেবে।
ঢাকা শহর ও শহরতলী রুটে চলাচলকারী
গাড়ির ওয়েবিলে কোন স্ল্যাব থাকবে না। রাস্তায় কোন চেকার থাকবে না। এক স্টপেজ থেকে
আরেক স্টপেজ পর্যন্ত গাড়ির দরজা বন্ধ থাকবে, খোলা রাখা যাবে না। রুট পারমিটের স্টপেজ অনুযায়ী
গাড়ি থামাতে হবে।
রাজধানীতে গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে
গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০০ বাস
নিয়ে চালু হওয়ার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। কারণ, তিন রুটের বাসের জন্য থামার স্থানের
নির্মাণকাজ করা যায়নি। তাছাড়া বর্তমানে চলা গাড়ির মালিকরা এই ইস্যুতে সাড়া দেননি।
তবে এই কমিটির সভা আগামী ৬ সেপ্টেম্বর হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওযা হবে কবে চালু
করা যাবে এই নতুন বাস।
বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সদস্য
ও গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, বড় অবকাঠামো
প্রকল্পের (মেট্রোরেল) কারণে আমরা কিছু জায়গায় এই তিন রুটের বাসের জন্য থামার
স্থানের নির্মাণকাজ করতে পারিনি। এছাড়া আমাদের যে ২০০ বাস নামানোর কথা ছিল তার
নির্মাণ ও সংস্কার শেষ করা যায়নি। তাই আমাদের তিনটি রুটে বাস নির্ধারিত সময়ে শুরু
করা যাবে না।
কবে চালু হতে পারে এই তিন রুট জিজ্ঞাসা
করা হলে সালেহ উদ্দিন বলেন, কমিটির সভা রয়েছে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর। সেখানে আমরা
সিদ্ধান্ত নেবো কবে এটা চালু করা যাবে।