প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র
বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদীর ভরাট হয়ে যাওয়া শতাধিক একর জায়গা এখন স্থানীয়
ভূমি দস্যুরা ভাগভাটোয়া করে খাচ্ছে। স্থানীয়রা বলেছে খতিয়ানভুক্ত নদীর ভরাট হয়ে
যাওয়া সরকারি খাস জমিতে এখন কেউ প্লট করে বিক্রি করছে, আবার কেউ কেউ মাটি কেটে
নিয়ে বিভিন্নস্থানে ভরাট কাজে সরবরাহ করছে।
গত ৫ এপ্রিল ভূমি
দ্যুস্যদের কবলে থাকা নদীর জমি সরেজমিনে পরিদর্শন কালে কথা হয় স্থানীয়দের সঙ্গে।
তাদের কাছে জানা যায় স্বাধীনতার আগে হালদা নদীর অবস্থান ছিল রাউজানের উরকিরচর,
আবুখীল,খলিফারঘোনা ও হাটহাজারীর বাড়িঘোনা গ্রামের উপর দিয়ে। ওই সময়কালে হালদার
নদীর ভাঙ্গন তাণ্ডবের শিকার মানুষ নদীর বাঁক কেটে দিয়ে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে
দিয়েছিল অন্যদিকে (বর্তমান অবস্থানে)। সেই থেকে আগে প্রবাহমান হালদা নদী স্বাভাবিক
গতি হারিয়ে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকা পলিতে ভরাট হয়ে যায়। এক সময় নদীটি ছোট খালে
পরিণত হয়ে দুই পাড়ে সৃষ্টি হয় বিশাল চর। এখন সেই হালদার জায়গা দখল ভূমি দস্যুদের
হাতে।
রাউজান উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায় দুই হাজার সালে রাউজান উরকিরচর মৌজায়
কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে হালদার ভরাট হয়ে যাওয়া কয়েক একর খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা
বন্দোবস্ত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বন্দোবস্ত পাওয়া মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের
দাবি ভূমি দস্যুদের কারণে তারা বন্দোবস্তির জায়গা ভোগ দখলে যেতে না পারায় স্বল্প
মূল্যে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে দখলদারদের হাতে ছেড়ে দিতে হয়েছে। জানা যায় উরকিরচর
ও বাড়িঘোনা এলাকায় বিশাল চরের জায়গা দখল করে রেখেছে বাড়িঘোনা এলাকার জামাল মুন্সি,
স্থানীয় সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আবদুল মান্নান। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া
জায়গা কম টাকায় কিনে নিয়ে জমির দখলদারিত্ব পাকাপোক্ত করে রেখেছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সরকারি
জায়গা জবরদখলকারী জামাল মুন্সি ও আবদুল মান্নানের সঙ্গে। তারা দুজনের স্বীকার
করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া বন্দোবস্তর জায়গা কিনেছেন। নিজেদের দখলে রেখেছেন
সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা। এলাকাবাসীর দাবি সরকারি জায়গা দখলকারীরা এলাকায়
ভুমি দ্যুস্য হিসাবে পরিচিত। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় এলাকার সাবেক ইউপি
সদস্য আবদুল মান্নানের নামে খুন ডাকাতিসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। পুলিশের হাতে ধরা
পড়ে তিনি জেলহাজতেও গেছেন। সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গা ভুমি দ্যুস্যদের দখল করার
বিষয়টি নিয়ে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদ কামালের সঙ্গে কথা
বললে তিনি বলেন সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত কোনো জমি কোন ব্যক্তি দখল করে রাখার সুযোগ
নেই। যারা নদীর জায়গা প্লট বানিয়ে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনী
ব্যবস্থা নিতে হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার দুই নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলা হবে।
জানতে চাইলে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিদুল আলম বলেন, তিনি
বিষয়টি আগে জানতেন না। তদন্ত করে দেখতে তহশিলদারকে পাঠাবেন।
রাউজান উপজেলা
নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুস সামাদ সিকদার বলেছেন, সরকারি জায়গা কারা দখল করে আছেন তা
তদন্ত করে সনাক্ত করা হবে।