Logo
শিরোনাম

ইতালিয়ানদের সম্মানে ভেনিস বাংলা স্কুলের ইফতার ও আলোচনা

প্রকাশিত:রবিবার ০৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

নিজস্ব প্রতিবেদক, ইতালি :

ইসলাম দাঁড়িয়ে আছে পাঁচটি স্তম্ভের উপর। প্রথমটি হলো কালিমা বা শাহাদা। অর্থাৎ এক আল্লাহ এবং নবী রাসুলগণের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। যারা এটি করবে তারা মুসলিম। আর একজন মুসলিমের উপর আল্লাহ রোজার বাধ্যবাধকতা দিয়েছেন, যেমন দিয়েছিলেন অন্যান্য নবী রাসুলগণের অনুসারীদের উপর। সুতরাং রোজা শুধু মুসলিমদের জন্য নয় বা নবী মোহাম্মদ প্রদত্ত নতুন কিছু নয়। অন্যান্য ধর্ম অবলম্বীদের জন্যও রোজার বাধ্যবাধকতা আছে বা ছিলো। যেমন, বাইবেল অনুসারীরাও ৪০ দিন উপবাস করেন। ভেনিস বাংলা স্কুলের আয়োজনে ইতালিয়ানদের সম্মানে ইফতার ও আলোচনায় এসব কথা বলেন, প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাছান।

ভেনিস বাংলা স্কুলের সভাপতি সৈয়দ কামরুল সরোয়ারের সভাপত্বি আয়োজিত আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠিত হয় ৬ এপ্রিল, শনিবার ভেনিস বাংলা স্কুলের মেসত্রেস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে। এ সময় প্রায় ৩০ জন ইতালিয় শিক্ষক, সাংবাদিক এবং অন্যান্য পেশাজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইঞ্জিনিয়ার কামরুল হাছান বলেন, আমরা বিভিন্ন সময়ে ইতালিয় বন্ধুদের কাছ থেকে কিছু প্রশ্নের সম্মুখীন হই। যেমন, বর্তমান সময়ে যুদ্ধ-বিগ্রহের কারণে জিহাদ শব্দটা বার বার সামনে আসছে। আমাদের বুঝতে হবে জিহাদ অর্থ ধর্ম যুদ্ধ নয়। জিহাদের অনেক রুপ আছে। কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়, ইনসাফ, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টার নাম জিহাদ। হুট করে অস্ত্র-পাতি, বোমা নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ার নাম জিহাদ নয়, ওটা সন্ত্রাস। জিহাদ এবং সন্ত্রাস দুইটা আলাদা বিষয়। কেউ জিহাদ করতে চাইলে ইসলামের বিধান মেনে করতে হবে। মনগড়া কোনো মতবাদে হিজাদ হয় না। অন্যায় ভাবে কাউকে হত্যা করলে তা গোটা মানবজাতীকে হত্যার সামিল অপরাধ হিসাবে গণ্য করে ইসলাম।

তিনি রোজার আধ্যাতিক ও সাইন্টিফিক দিকসহ মুসলিম নারীদের হিজাব ব্যবহারের বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা নিয়ে আলোচনা করেন।

কামরুল হাছান যোগ করেন, ইতালিয় সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ইতালিতে বসবাসকারী সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালন, প্রচার এবং উদযাপন করতে পারবে। কিন্তু মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব ঈদের দিনে মুসলিম শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়া হয় না। কর্মজীবীদের বাধ্যতামূলক কাজে যেতে হয়। এতে সামাজিক এবং ধর্মীয় বৈষম্য সৃষ্টি হয়। যা মুসলিমদের উপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে। ইতালিয় সরকারের উচিৎ এই বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা। 

অপর আলোচক ইঞ্জিনিয়ার লিয়ন শরিফ বলেন, মিডিয়ার প্রপাকান্ডায় বিভ্রান্ত হয়ে অনেকে হয়তো মনে করেন মুসলিমরা সন্ত্রাসী বা ইসলাম সন্ত্রাসীদের ধর্ম। আসলে তা নয়। বিশ্বমুসলিম কম্যুনিটিকে কোনো জাতী বা গোষ্ঠীর নিজস্ব কর্ম দিয়ে বিচার করলে তা সুবিচার হবে না। ইসলাম বুঝতে হলে কোরান, হাদিসের কাছে যেতে হবে। পড়াশুনা করতে হবে।

তিনি উপস্থিত ইতালিয়দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনাদের বুঝতে হবে, যারা ইসলামের নামে সন্ত্রাস করে তারা যেসব অস্ত্র, যানবাহন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেগুলো তারা বা কোনো মুসলিম রাষ্ট্র বানায় না। যারা তাদের কাছে ওসব অস্ত্র, গাড়ি, প্রযুক্তি বিক্রি করে তারাই আবার মিডিয়ার মাধ্যমে ইসলামের গায়ে সন্ত্রাসের ট্যাগ লাগায়। সুতরাং যেসব গোষ্ঠি সন্ত্রাস করে এবং তাদের কাছে যারা অস্ত্র বিক্রি করে উভয়ই বিশ্বমানবতা বিরোধী অপরাধী। উভয়ই সমান ভাবে সন্ত্রাসের অংশীদার।

লিয়ন বলেন, এক সাথে বসবাসের জন্য, ইন্টিগ্রেশনের জন্য সবার মধ্যেই মেনে নেয়ার, মানিয়ে নেয়ার মানসিকতা থাকতে হবে। ভৌগলিক কারণে, ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশি এবং ইতালিয় বা ইউরোপিয়দের কালচার এক নয়। এক হওয়া সম্ভবও নয়। সুতরাং কাউকে তিরস্কার করে, অধিকার বঞ্চিত করে, সন্ত্রাসের ট্যাগ লাগিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করা কঠিন হয়ে পড়ে।

তিনি যোগ করেন, ইতালিয় মিডিয়ায় রোজাকে 'রমাদান' হিসাবে উল্লেখ করা হয়, যা সঠিক নয়। রমাদান একটি মাসের নাম। এ মাসে মুসলিমরা রোজা রাখেন। সুতরাং রোজা বা সওম বললে তা সঠিক হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে ছিলেন, পলাশ রহমান, মারতা লাভারা ফাচ্চিনি, জাকমো বেল্লাতো, সোহেলা আক্তার বিপ্লবী, আনতোনিয় স্পানো, আলেসসানদ্রো, জান্নি দাল্লা পেল্লেগ্রিনা, জাদা, ক্লাউদিয়া মানতোভান, মানুয়েলা যোরদানা, আকতার উদ্দিন, মোহাম্মদ উল্লাহ সোহেল, আনদ্রেয়া অনোরি, ভালেরিয়া তোনিয়লি, আলেসসানদ্রা বারদেল্লি, গাবরিয়েলে মালুতা, মারিয়া কারমেলা, সেরজো, ফাবরিচ্ছিয়, লাওরা, মিকেয়লা, কাজী টিপু, জানফ্রাংকো বোনেচ্ছো, ইকবাল হাসান, ফিয়রিনা মাসুম, লোরেনছো পোরচিলে, প্রমূখ।

আলোচনা শেষে ফিলিস্তিনির মাজলুমদের জন্য এবং বিশ্বশান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। বিরিয়ানিসহ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহি বিভিন্ন পদের ইফতার পরিবেশন করা হয়।


আরও খবর



কাজে ফিরেছেন আশুলিয়ার পোশাক শ্রমিকরা

প্রকাশিত:বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে অসন্তোষের অবসান ঘটেছে। এখানকার অধিকাংশ পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা আজ কাজে যোগ দিয়েছেন। তবে ১৪টি পোশাক কারখানা বন্ধ ও একটি পোশাক কারখানায় কর্মবিরতি চলেছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল, জামগড়া, নরসিংহপুর, নিশ্চিন্তপুর, জিরাবো, ঘোষবাগ এলাকা ঘুরে পোশাক কারখানাগুলোতে কাজে যোগ দিতে দেখা যায় পোশাক শ্রমিকদের

শিল্প পুলিশ জানায়, গতকালকে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিজিএমইএ। সকাল থেকেই পোশাক শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। আশুলিয়ার নরসিংহপুরে হা-মীম, শারমিন, নাসাসহ অনেক গুলো বন্ধ কারখানাতে উৎপাদন শুরু করেছে। তবে কয়েকটি পোশাক কারখানায় কর্মপরিবেশ পর্যবেক্ষণের জন্য এখনো বন্ধ রয়েছে। এছাড়া নিট ওয়্যার নামে একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও পরে দাবি নিয়ে কর্মবিরতি পালন করে

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়েটার্স শ্রমিক টেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, গতকাল বৈঠক করে শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে দাবি মেনে নেওয়া ও কারখানায় শ্রমিকদের কাজে ফেরার জন্য গেটে নোটিশ দেওয়ার কথা ছিল। এছাড়া আজকে মালিকপক্ষকে কারখানায় এসে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করার কথাও বলতে বলা হয়েছিল। যে সব কারখানায় মালিক পক্ষ আন্তরিক, সেসকল কারখানায় শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে। এছাড়া কয়েকটি পোশাক কারখানা এখনো নোটিশ না দিয়ে বন্ধ করায় ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় না বসার কারণেই আজও কারখানায় উৎপাদন শুরু করতে পারেনি বলে জানান তিনি

আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সকাল থেকেই শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন। ১৪টি পোশাক কারখানার এখনও ১৩(১) ধারায় বন্ধ রয়েছে। হয়তো ওই পোশাক কারখানাগুলো কর্মপরিবেশ দেখে খুলে দেবে। এছাড়া একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছে, তাদের সঙ্গে মালিকপক্ষ আলোচনা করবে। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। শিল্প কারখানার নিরাপত্তায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও সেনাবাহিনী টহল অব্যাহত রেখেছেন বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা


আরও খবর

কমেছে ডিম-পেঁয়াজ-আলুর দাম

শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪




মুকুটহীন সম্রাট আল্লামা আহমাদ শফি রহ:

প্রকাশিত:শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০24 | হালনাগাদ:শুক্রবার ১১ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

আমিনুল ইসলাম কাসেমী,শিক্ষক ও কলামিষ্ট :

আল্লামা আহমাদ শফি রহ, কে বলা হয় মুকুটহীন বাদশা। আলেম- উলামা এবং সাধারণ মানুষের মাঝে তাঁর ঈর্ষনীয় জনপ্রিয়তা ছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে তাঁর মত এরকম গ্রহণযোগ্য আলেম আর  ইতিপুর্বে দেখা যায় নি। দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যমণিতে পরিণত হয়েছিলেন।


ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সিপাহসালার, কতুবে আলম সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ, এর বিশিষ্ট শাগরেদ এবং খলিফা  ছিলেন আল্লামা আহমাদ শফি।  মাওলানা মাদানী যেমন ব্রিটিশ খেদাও আন্দোলনে অবদান রেখে বিশ্ববিখ্যাত নেতা রুপে আভির্ভুত হয়েছিলেন, এমনি ভাবে মাওলানা মাদানী বিশ্বখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলুম দেওবন্দের সেরপুরুস্ত এবং  আধ্যাত্মিকতার সাধনায়  প্রাণপুরুষ ছিলেন,  ঠিক আল্লামা আহমাদ শফি যেন স্বীয় উস্তাদের পরিপুর্ণ অনুসারী। 


আল্লামা আহমাদ শফি দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান জামেয়া আহলিয়া দারুল উলুম  মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব  পালন করেন।  তবে হাটহাজারীর মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি হাটহাজারীকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান।  এমনিতে হাটহাজারী দেশ সেরা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু আল্লামা আহমাদ শফির তীক্ষ্ন মেধায় জামেয়াকে  আরো উর্ধে নিতে  সক্ষম হন। বাংলাদেশ সহ বিশ্বের আনাচে- কানাচে ছড়িয়ে পড়ে এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম।  তাঁর যোগ্য পরিচালনায় যেন হাটহাজারী মাদ্রাসার সোনালী জীবন ফিরে আসে।


হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষারমান তিনি অনেক উন্নত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এক সময় হাটহাজারী শুধু নামেই চলেছে। কিন্তু আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব মাদ্রাসার মহাপরিচালক এর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে, তিনি শিক্ষাব্যবস্হাকে ঢেলে সাজান। তা'লীমের মান অনেক উচ্চতায় নিয়ে যান।


শিক্ষার মান বাড়াবার জন্য তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসাকে বেফাকভুক্ত করেন। বাংলাদেশ বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যার ( কওমী শিক্ষাবোর্ড) এর অধীনে তাঁর হাটহাজারী মাদ্রাসাকে অন্তর্ভুক্ত করেন। এরপর থেকে হাটহাজারীর ছাত্ররা বেফাক বোর্ডে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছে। 


আল্লামা আহমাদ শফি বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যাহ এর চেয়্যারম্যান সেই ২০০৮ সন থেকে। তিনি চেয়্যারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই হাটহাজারী মাদ্রাসা বেফাকের আওতায় নিয়ে আসেন। এবং ছাত্রদের বেফাকের মাধ্যমে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করায়ে  তা'লিমী হালাত শীর্ষ পর্যায়ে পৌছে দেন।


একজন খ্যাতনামা মুহাদ্দিস ছিলেন তিনি। অতি আকর্ষীয় ছিল তাঁর বুখারী শরীফের দরস। বহু বছর যাবত তিনি বুখারী শরীফ সহ সিহাহ সিত্তার দরস দিয়েছেন। হাজার হাজার ইলম পিপাসু ছাত্র তাঁর থেকে উপকৃত হয়েছেন। বাংলাদেশের  খ্যাতনামা সব প্রতিষ্ঠানে তাঁর শিষ্য রয়েছে। দেশের সব জায়গাতে জরীপ চালালে দেখা যাবে, প্রায় সকল প্রতিষ্ঠানে আল্লামা আহমাদ শফির শাগরেদ। কেউ হয়ত সরাসরি, আর কেউ হয়ত কারো মাধ্যমে তিনি  আল্লামা আহমাদ শফির  ছাত্র।

অনেক মেধাবী একজন শিক্ষক ছিলেন তিনি। হাদীস পড়াবার ক্ষেত্রে  একজন মুহাদ্দিসের যেমন স্মরণশক্তি এবং মেধার প্রয়োজন, তেমনি গুনেই তিনি পরিপুর্ণ ছিলেন।


আজো স্মরণ হয় আল্লামা আহমাদ শফির সেই দরসের কথা। আমাদের খতমে বুখারীর প্রধান মেহমান ছিলেন তিনি। বুখারী শরীফের শেষ হাদীস পড়ানোর পর  তিনি  যখন সনদ বর্ননা করেন, তখন তো তাক লেগে গিয়েছিল পুরো মাহফিলের লোকদের মাঝে। একদম তাঁর থেকে নিয়ে রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম  পর্যন্ত হাদীসের সুত্রপরম্পরা মুখস্হ বলে গেলেন। বড় প্রাণবন্ত হয়েছিল সেই অনুষ্ঠানটি। 


একজন বাগ্মী ছিলেন তিনি। পুরো বাংলাদেশের খ্যাতনামা  দ্বীনি প্রতিষ্ঠানের  ইসলামী সন্মেলনের  প্রধান মেহমানের অাসন অলংকৃত করেছেন বহু বছর ধরে। ঘন্টার পর ঘন্টা তিনি তাকরীর করেছেন। ক্লান্তহীন ভাবে তিনি দ্বীনের দাওয়াত মানুষের কাছে পৌছেছেন।


 বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে দেশের বাইরে তাঁর জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা গেছে।  বিভিন্ন মুসলিম কান্ট্রিতে দ্বীনের প্রচার- প্রসার এর নিমিত্তে ছুটে বেড়িয়েছেন।  সেসব জায়গায় দ্বীন ইসলামের আলো প্রজ্বলিত করেছিলেন তিনি। 


আল্লামা আহমাদ শফি সাহেবের বেশী জনপ্রিয়তা এবং পরিচিতি লক্ষ্য করা যায়, ২০১০ সনে হেফাজতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে।  দ্বীন ইসলামকে বাতিলের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত এবং  বেদআত- শিরক ও ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার জন্য হেফাজত ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়। যার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি তিনি ছিলেন। হেফাজতের কার্যক্রমে তিনি ব্যাপক ভাবে প্রসংসিত হন।


সবচেয়ে বেশী তিনি পরিচিতি লাভ করেন,  ২০১৩ সনে হেফাজতের আন্দোলনের মাধ্যমে। হেফাজতের বিভিন্ন কর্মসুচিতে দেশব্যাপি ব্যাপক সাড়া পড়ে। বিশেষ করে হেফাজতের লংমার্চ কর্মসুচি এবং শাপলা চত্তরের মহা-সমাবেশে  তাঁর পরিচিতি আরো বেশী বেড়ে যায়।   ওসব কর্মসুচিতে  লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়েছিল। যার জন্য তার জনপ্রিয়তা আরো উর্ধে চলে যায়। দেশ - বিদেশের সকল মিডিয়ায় আল্লামা আহমাদ শফির জনপ্রিয়তা উঠে আসে। একজন অবিসংবাদিত ইসলামী ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিশ্বের মানুষের কাছে তিনি পরিচিতি লাভ করেন।


বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠান এর মহাপরিচালক এবং  লাখো আলেমের উস্তাদ এবং পীর ছিলেন। যার কারণে যেখানে যেতেন, সেখানে যেন তাঁকে সকলে মাথায় করে রাখত। তাঁকে এমন ইজ্জত করতেন ছাত্ররা যারা কল্পনা করা যায় না। এমনিতে কওমী অঙ্গনের ছাত্ররা আদবী - আখলাকী, আর প্রিয় উস্তাদকে কাছে পেলে যেন তাঁর জন্য জীবন উৎসর্গ করে দিত।


আল্লামা আহমাদ শফি রহ, শেষ জীবনে হুইল চেয়ারে ছাড়া চলতে পারতেন না। তাই তো দেখা গেছে, শায়েখের হুইল চেয়্যার ধরার জন্য ছাত্ররা পাগলপারা ছিল। বহু জায়গায় দেখাগেছে, হুইল চেয়্যার চলে না, সেখানে  ছাত্ররা হুজুরের চেয়্যার মাথায় করে মঞ্চে ওঠায়েছেন। তিনি যেরকম আমাদের মাথার মুকুট, ঠিক ছাত্ররা সেটা বাস্তবে দেখায়েছিলেন।


তিনি রাজা ছিলেন না। দুনিয়াবী কোন পাওয়ার ছিলনা। তবে তিনি ইলমে হাদীসের জগতের সম্রাট, আধ্যাত্মিকতার  ভুবনের বাদশা বলা যায়। লক্ষ লক্ষ ছাত্রের মুরুব্বী যিনি, তিনি দুনিয়ার রাজা- বাদশার থেকে অধিক সন্মানী ছিলেন।


দুনিয়ার রাজা- বাদশাদের সন্মান তো টাকা দিয়ে কিনতে হয়, পাইক- পেয়াদা, কর্মকর্তা- কর্মচারী সবই তো টাকা দিয়ে কেনা। কিন্তু আল্লামা আহমাদ শফি যে রাজত্ব করেছেন, সেটা কোনদিন টাকা দিয়ে কিনতে হয়নি। এ সন্মান ও ইজ্জত ছিল মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে। 


মা'জুর হওয়ার পর থেকে হেলিকপ্টারে চলেছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় সফর করেছেন, সবই ছিল ভক্তবৃন্দের স্বতস্ফুর্ত খেদমত। কত মানুষ তাঁকে পাওয়ার জন্য, তাঁর সোহবত গ্রহণের জন্য  ব্যাকুল হয়েছিল তাঁর হিসাব নেই।


জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তিনি দ্বীনি মারকাজে কাটিয়েছেন। বলা যায়, পুরো জীবন  তিনি  আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করেছেন।  পরিশেষে আল্লাহর রাস্তায়  থাকা অবস্হায় বিদায় নিয়েছেন।


জীবন  ও কর্মঃ


 জন্মঃ ১৯২০ সনে চট্রগ্রাম জেলার রাঙুনিয়ার থানার পাখিয়ার টিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ  করেন। 

পিতার নামঃ বরকত আলী, মাতার নামঃ মেহেরুন্নেছা


শিক্ষাজীবনঃ


 প্রাথমিক শিক্ষা মায়ের কাছে। এরপর ১০ বছর বয়সে দারুল উলুম হাটহাজারীতে ভর্তি হন। সেখানে একটানা দশ বছর লেখাপড়া করেন  


১৯৪১ সনে দারুল উলুম দেওবন্দে ভর্তি হন। সেখানে  চার বছর কৃতিত্বের সাথে লেখাপড়া করেন। ইলমে হাদীস,ফিকাহ, তাফসীর বিভিন্ন বিষয়ে বুৎপত্তি অর্জন করেন। 


আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব, তিনি  বিশ্ববিখ্যাত আলেম ও  বিশ্ব কুতুব  এবং ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের মহা নায়ক  সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ,  এর  বিশেষ একজন শাগরেদ। তিনি মাদানী রহ, এর নিকট বুখারী শরীফের এর দরস নেন। পাশাপাশি তিনি  মাদানী এর নিকট বায়আত গ্রহন করেন। অতি অল্প সময়ে মাদানী রহ, এর নিকট থেকে খেলাফত বা পীরত্ব লাভ করেন।


মাদানী রহ, এর ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের একজন কর্মি ছিলেন। ভারত উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে   স্বীয় উস্তাদের সোহবতে থেকে তিনিও অনেক অবদান রেখেছিলেন।


উল্লেখযোগ্য উস্তাদঃ


১/ সাইয়্যেদ হুসাইন আহমাদ মাদানী রহ, 

২/ শায়খুল আদব এ'জাজ আলী রহ, 

৩/ ইব্রাহিম বলিয়াবী রহ: 

৪/ শায়েখ ফখরুল হাসান রহঃ

৫/ মাওলানা জহিরুল হাসান রহঃ 


কর্মজীবনঃ


দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে ফিরে তিনি ১৯৪৬ সনে হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়। 


অনেক সুনাম- সুখ্যাতির সাথে তাঁর শিক্ষকতার জীবন চলেছে। অত্যান্ত মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন সব জায়গাতে।


১৯৮৬ সনে তিনি দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক নিযুক্ত হন। একদম মৃত্যু পর্যন্ত ছিলেন তিনি হাটহাজারীর মহাপরিচালক। একটানা ৩৪  বছর। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি হাটহাজারী মাদ্রাসা এবং এদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।


তিনি ছিলেন কওমী মাদ্রাসা  সর্বোচ্চ বোর্ড,  "আল হাইয়াতুল উলয়া লিল জামিয়াতিল কওমীয়া" এর চেয়্যারমান। বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়্যা ( কওমী মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড)  এর চেয়্যারম্যান। আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফ্ফুজে খতমে নবুওয়্যাত এর চেয়্যারম্যান।  হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের চেয়্যারম্যান। 


অবদানঃ


আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব, কওমী মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য যে অবদান রেখেছেন, তা চিরস্মরনীয়। বাংলাদেশে কেউ এমন মহৎ কাজটি আর করতে পারেনি। তিনি কওমী মাদ্রাসার  দাওরায়ে হাদীসের সনদকে মাষ্টার্স বা এম এ সমমান সরকারের কাছ থেকে আদায় করেছেন। এদেশর কওমী মাদ্রাসাগুলোকে জাতির সামনে বুক ফুলিয়ে দাঁড়াবার কায়দা তিনি করে গেছেন।


ছিন্ন- ভিন্ন আলেম সমাজকে তিনি এক প্লাট- ফরমে  আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। ব্যক্তিত্বের গুণে আলেমদের এক টেবিলে বসাতে পেরেছিলেন। মানে অসম্ভবকে সম্ভব  করতে সক্ষম হয়ে ছিলেন তিনি।


সর্বশেষ ২০১৭ সনের ১১ এপ্রিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী  কওমী সনদের স্বীকৃতি দেন। দাওরায়ে হাদীসের সনদ মাষ্টার্সের মর্য্যাদা পায়।


বিশেষ সন্মানঃ


আল্লামা আহমাদ শফি সাহেব  ২০০৫ সনে শ্রেষ্ঠ ইসলামী ব্যক্তিত্ব হিসেবে ভুষিত হন। বাংলাদেশের জাতীয় সীরাত কমিটি এ  মর্য্যাদা তাকে প্রদান করেন।


রচনাবলীঃ


তিনি একজন  প্রতিভাবান লেখক ছিলেন। কলমের ময়দানে তাঁর খ্যাতি রয়েছে।  মুহাদ্দিস হিসেবে, পীর হিসেবে যেমন তাঁর খ্যাতি রয়েছে, ঠিক লেখক হিসেবে তাঁর যথেষ্ট সুনাম- সুখ্যাতি।


উর্দু - বাংলা মিলিয়ে তাঁর প্রায় ২৫ টি গ্রন্হ রয়েছে। যে গুলো থেকে আলেম- উলামা এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।

১/ হক ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্ধ , ২/ ইসলামী অর্থ ব্যবস্হা, ৩/ ইসলাম  ও রাজনীতি ৪/ ইজহারে হাকিকত ৫/ মুসলমানকে কাফির বলার পরিণাম, ৬/ ধুমপান কি আশির্বাদ না অভিশাপ ৭/ একটি সন্দেহের অবসান ৮/  একটি গুরুত্বপুর্ণ ফতোয়া ৯/ তাবলীগ একটি অন্যতম জিহাদ ১০/ ইসমতে আম্বিয়া ও মিয়ারে হক ১১/সুন্নাত ও বিদআতের সঠিক পরিচয় ১২ / বায়আতের হাকীকত ১৩/ আল বয়ানুল ফাসিল বায়নাল হক্কে ওয়াল বাতেল ১৪/ আল হুজাজুল কাতিয়া লি দাফয়েল নাহজিল খাতিয়া ১৫/ আল খায়রুল কাছীর ফি উসুলিত তাফসীর ১৬/ ইসলাম ওয়া সিয়াসাত ১৭/  ইজহারে হাকিকত ১৮/ তাকফীরে মুসলিম ১৯ / চান্দ রাওয়েজাঁ ২০/  ফয়ুযাতে আক্ষদিয়া ২১/   ফয়জুল জারী ( বুখারীর ব্যাখ্যাগ্রন্হ) ২২ / মিশকাতের ব্যাখ্যাগ্রন্হ 


আল্লামা শফির উল্লেখযোগ্য ছাত্রঃ


চট্রগ্রামঃ


হাটহাজারী মাদ্রাসার  বর্তমান যত শিক্ষক আছেন,সকলেই আল্লামা শফির ছাত্র। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যদের নাম লিখছি:


১/ মাওলানা আব্দুস সালাম চাটগামী ( রহ,)

২/ মাওলানা শেখ আহমাদ দাঃ বাঃ

 ৩/ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী ( রহ,)


৪/ আল্লামা দিদার কাসেমী দাঃ বাঃ


ঢাকাঃ


১/ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস সাহেব, মোহতামিম,ফরীদাবাদ মাদ্রাসা।ও মহাসচিব, বেফাক।

২/ মাওলানা আনোয়ার শাহ,  সাবেক নায়েবে মোহতামিম,জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ, বর্তমান শায়খুল হাদীস, জামেয়া ফজলুল করীম, হাসনাবাদ,ঢাকা।

৩/ মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী ( রহ,) মোহতামিম, মাখজানুল উলুম, খিলগাঁও।

৪/ মাওলানা রুহুল আমীন খান উজনবী, দা: বাঃ

মোহতামিম, জামেয়াতুস সাহাবা, উত্তরা, ঢাকা।

৫/ ডঃ মুশতাক আহমাদ দা: বা: উপপরিচালক,  ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ও শায়খুল হাদীস, তেজগাঁও রেলষ্টেশন।

৬/ মাওলানা আহমাদ মায়মুন  দা: বাঃ মুহাদ্দিস, জামেয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ,ঢাকা। 

৭/ মাওলানা জাকির হোসেন, টঙ্গী।


ফরিদপুরঃ

১/ মুফতী আব্দুল কাদের রহঃ সাবেক মুহতামিম, জামেয়া আরাবিয়া শামসুল উলুম। 

২/ মাওলানা কারামাত আলী দাঃ বাঃ

মোহতামিম,মদীনাতুল উলুম ফরিদপুর।

৩/ মুফতী ইসমাতুল্লাহ কাসেমী, পীর সাহেব নগরকান্দা।


 সিলেটঃ


১/ মরহুম তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী 

২/  শেখ জিয়া উদ্দীন, আংগুরা মুহাম্মদ পুর,ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কেন্দ্রীয় জমিয়ত,

৩/  মাওলানা মুহিব্বুল হক গাছবাড়ী, মুহতামিম দরগাহ মাদ্রাসা,

৪/ মুস্তাক আহমদ খান,

৫/ শায়খুল হাদীস মাওলানা মোহাম্মদ মুফতী ইউসুফ হরিপুর মাদ্রাসা।


৬/ শায়খুল হাদিস আল্লামা শিহাব উদ্দিন চতুলী।

মুহতামিম ও শায়খুল হাদিস দারুল হাদিস চতুল ঈদগাহ মাদ্রাসা।


 উল্লেখযোগ্য কিছু খলিফাঃ


১/ আল্লামা শেখ আহমাদ সাহেব, হাটহাজারী।

২/ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী সাহেব, হাটহাজারী।

৩/ মাওলানা নোমান আহমাদ সাহেব, মোহতামিম ও শায়খুল হাদীস, বরুড়া, কুমিল্লা।

৪/ মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস সাহেব, মোহতামিম,ফরীদাবাদ,ঢাকা।

৫/ মাওলানা নুরুল আমীন সাহেব, ফরীদাবাদ,ঢাকা।

৬/ মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী,(রহ,) মোহতামিম,শায়খুল হাদীস,  মাখজানুল উলুম,ঢাকা।

৭/ মাওলানা জাকির হোসেন, মোহতামিম, শায়খুল হাদীস, জামেয়া নুরিয়া,টঙ্গী।

৮/ মাওলানা আবু সাবের আব্দুল্লাহ সাহেব, শায়খুল হাদীস, জামেয়া শারইয়্যাহ, মালিবাগ।

৯/ মাওলানা আহমদ মায়মুন সাহেব, মুহাদ্দিস, জামেয়া শারইয়্যাহ, মালিবাগ।

১০ / মাওলানা রুহুল আমীন খান উজনবী,  মোহতামিম, জামেয়াতুস সাহাবা, ঢাকা।


এভাবে দেশ- বিদেশে লক্ষ লক্ষ ছাত্র ও খলিফা রয়েছে আল্লামা শফি সাহেবের। যেগুলো উল্লেখ করা সম্ভব নয়। বর্তমান বাংলাদেশের প্রতিভাবান আলেম, ওয়ায়েজ,লেখক,পীর, এভাবে যারাই যেখানে দ্বীনের খেদমত করছেন, তাদের অধিকাংশ আল্লামা শফির শাগরেদ।


ইন্তেকাল: 


১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ঢাকার আসগর আলী হসপিটালে ইন্তেকাল করেন। 


সন্তান - সন্ততিঃ


দুই ছেলে, তিন মেয়ে।


জানাযা দাফনঃ


১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ হাটহাজারী মাদ্রাসায় বাদ জোহর জানাযা হয়।  জানাযাতে ইমামতি করেন, হযরতের বড় সাহেবজাদা।


বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ লোক সমাগম হয় আল্লামা শফির জানাযাতে। কত যে মানুষ, সেটা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলার সাধ্যে রাখেনা।


পুরো হাটহাজারীর আশপাশের পাঁচ / সাত কিলোমিটার এলাকা লোকে লোকারণ্য ছিল।কোথাও তিলধরনের ঠায় ছিল না।  মানুষ যে যেখানে পেরেছে, জানাযায় দাঁড়িয়েছে।  এক অভুতপুর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল সেদিন। মিডিয়ার  ক্যামেরাগুলো অচল। এত্ত মানুষ ক্যামেরাবন্দী সম্ভব ছিল না।


কোন মিডিয়া পাঁচ লক্ষ,কোনটা তাঁর অধিক লোকের কথা উল্লেখ করেছিল।


হযরতকে এক নজর দেখার জন্য  লক্ষ লক্ষ মানুষ ছুটেছিল হাটহাজারীতে।  জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিল হাটহাজারী এবং তৎপার্শ্ববর্তী এলাকা।


আল্লামা শফিকে হাটহাজারী মাদ্রাসার কবরস্হানে, মাকবারায়ে জামেয়াতে দাফন করা হয়।


একজন অবিসংবাদিত আলেমেদ্বীন এবং আধ্যাত্মিক সাধক ছিলেন আল্লামা আহমাদ শফি রহ,। এদেশের পরতে পরতে তাঁর অবদান। বিশেষ  করে মাদ্রাসা শিক্ষা উন্নয়নে, দ্বীনি দাওয়াত পৌছানোর ক্ষেত্রে এবং বাতিল শক্তির মোকাবেলায় তাঁর অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এদেশে লক্ষ - কোটি উলামায়ে কেরাম ও আমজনতার হৃদয়ে তিনি চিরদিন বেঁচে থাকবেন। তাঁর অবদান চিরস্মরনীয়।

মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে দুআ করি, আল্লাহ তায়ালা হযরতকে জান্নাতুল ফিরদাউসে সুউচ্চ মাকাম দান করুন। আমিন।


আরও খবর



শেখ হাসিনার পতন সুচিত হয়েছিল বিএনপির একযুগের ত্যাগে

প্রকাশিত:রবিবার ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে দলের সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জুলাই গণহত্যায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত  ৮৭৫ জন শহীদ হয়েছেন এদেরমধ্যে ৪২২ জন বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত।

শুরু থেকেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিএনপি কাজ করেছে।সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগে দশ দফা যেটা পরে ৩১ দফায় পরিনত হয়েছিল। সেটারই চূড়ান্ত রূপ ছিলো এক দফার আন্দোলন।

শেখ হাসিনা হঠানো আন্দোলনে বিএনপির অবদান খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।। খেয়াল করে দেখবেন আওয়ামী লীগ তাদের পতনের পেছনে বিএনপি দায়ী করে নানান বক্তব্য দিয়েছিল। তাদের পতন সুচিত হয়েছিল বিএনপির একযুগের ত্যাগে।  স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ বিএনপির হাজার হাজার নেতারা কারাবরণ করেছে অনেকের নামে শতাধিক মামলা। হাবিবুন নবী সোহেলের নামে রেকর্ড ৪৫১ টি মামলা দেয়া হয়েছে। 

বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে গেলো ১৬ বছর নেতাকর্মীদের অকথ্য নির্বাচন করেছে। ব্যবসায়ী যারা বিএনপির রাজনীতি করেন তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় যারা বিএনপিকে সমর্থন করেছেন তাদের ওপরও নির্মম নির্যাতন করেছে। এগুলোই কি যথেষ্ট নয় যে শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত করতে বিএনপির ত্যাগ সবচেয়ে বেশি ছিলো?

পত্রিকায় বিএনপির আন্দোলনকে খাটো করে দেখিনোর চেষ্টা হচ্ছে। এখনো দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করা যায়নি কারণ তারা অনেক ভেতরে ঢুকে বসে আছে। দায়িত্বশীল জায়গায় থেকেও অনেকে বিএনপির প্রতি অসম্মান করে বক্তব্য দিয়েছে। পত্রিকায় সংখলঘু নিয়ে আবারও প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে এগুলো চক্রান্তের অংশ মনে করে বিএনপি।  

নির্বাচন কেন্দ্রীক সংস্কারের কথা বিএনপি স্পষ্ট করে বলেছে সব প্রতিষ্ঠানে সংস্কার কাজ এই সরকার চইলেও করতে পারবে না। সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে দ্রুত নির্বাচনের দিকে যাওয়া। যারা ফায়দা নিতে চায় তারা বিভিন্নভাবে বিএনপিকে খাটো করার জন্য বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সাথে তুলনা করে কার্যত অথচ আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র হত্যাকারী আর বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দল।


আরও খবর



১৪ দিন শাহজালালে তিন ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

প্রকাশিত:সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৩ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

আগামী ১ অক্টোবর থেকে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিদিন মধ্যরাতে সাড়ে ৩ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা। ফলে ফ্লাইটসূচিতে পরিবর্তন আসতে পারে।

বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম জানান, রানওয়েতে আইএলএস ক্যাটাগরি-২ সংক্রান্ত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রাত ১টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত রানওয়ের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। মেরামতকালীন বিমানবন্দরের সব ফ্লাইটের অবতরণ-উড্ডয়ন কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত থাকবে

এদিকে শীত মৌসুমে ঘন কুয়াশায় ঢাকাগামী ফ্লাইটকে অন্য দেশে অবতরণের ভোগান্তি ও খরচ এড়াতে দেশের তিন বিমানবন্দরের ফ্লাইট সূচিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে

ফ্লাইট সূচিতে পরিবর্তন আনা বিমানবন্দরগুলো হলো চট্টগ্রামের শাহ আমানত, সিলেট ওসমানী ও কক্সবাজার বিমানবন্দর। বেবিচক কর্মকর্তারা বলেন, শাহ আমানত সপ্তাহে চারদিন ফ্লাইট অবতরণের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে। সপ্তাহে তিনদিন খোলা থাকবে সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর। এ ছাড়া সকাল সোয়া ৭টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ফ্লাইট ওঠানামার জন্য খোলা থাকবে সাগরপাড়ের কক্সবাজার বিমানবন্দর

কুয়াশার কারণে অন্য দেশে ফ্লাইট অবতরণের কারণে ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা। তা ছাড়া ১০ হাজার ডলার বা প্রায় ১২ লাখ টাকা অবতরণ ফি গুনতে হয় সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইন্সকে। ভোগান্তি রোধে ২৭ অক্টোবর থেকে নতুন সূচি অনুযায়ী ফ্লাইট ওঠানামা করবে

বেবিচকের এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্টের (এটিএম) প্রধান (সদস্য) এয়ার কমডোর জিয়াউল হক জানান, ঘন কুয়াশায় বিপদে পড়ে ভারত ও মিয়ানমারে জরুরি অবতরণ করে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট

বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, আগামী শীতকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের সুবিধার জন্যই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে


আরও খবর



অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কারের কোনো এখতিয়ার নেই

প্রকাশিত:সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১২ অক্টোবর ২০২৪ |

Image

অন্তর্বর্তী সরকারের সংবিধান সংস্কারের কোনো এখতিয়ার নেই বলে মত দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস এর সাত দফা বাস্তবায়ন নাগরিক কমিটির নেতারা। সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মানিক মিয়া হলে দেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তার দাবি করেন আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন যে অপশাসন করে গেছে যে গণহত্যা করেছে তাদের আর এই দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। আর তাদেরকে যারা এদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে তারা জাতীয় বেইমান হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করবে। ২০০৮ থেকে ২৪ সাল পর্যন্ত যে ভারত বাংলাদেশের মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিবাদ বাস্তবায়ন করেছে সেই ভারতকে তিন হাজার মেট্রিকটন ইলিশ পাঠানো ঠিক হয়নি বলেও মতামত দেন তারা। তারা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের কেউ যদি রাজনৈতিক দল করতে চায় তাদের উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দল করতে হবে। কোনো গণহত্যাকারী রাজনৈতিক দল কখনোই রাজনীতিতে ফিরতে পারে না আওয়ামী লীগেরও সেই সুযোগ নেই। দেশের আদালতে তার যেমন বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করা যাবে না। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমন্বয়কের নামে ছাত্রলীগ বা শিবিরের নেতাকর্মী তাকাটা ক্ষতির কিছু না তারা অন্যায় করলে তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে পিটিয়ে হত্যা কেউ সমর্থন করে না।পতিত সরকারের এজেন্টরা এসব কাজে জড়িত থাকতে পারে। 


আরও খবর