টানা বৃষ্টিতে
বৃহস্পতিবার রাতে মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের সড়কে জমে
থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের তিনজনসহ চারজনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
তবে পরিবারের সবাই প্রাণ হারালেও বেঁচে গেছে হোসাইন নামে সাত মাসের শিশু।
এদিন
রাতে ওই রাস্তায় জমে থাকা পানির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন মিজান (৩০) ও তার স্ত্রী
মুক্তা বেগম (২৫)। সঙ্গে ছিল মেয়ে লিমা (৭) ও ছেলে হোসাইন। হঠাৎ করে তারা পড়ে গেলে
তাদের তুলতে এগিয়ে আসেন অনিক নামে একজন অটোরিকশাচালক। হোসাইনকে তিনি পানি থেকে
তুলে দিতে পারলেও লিমাকে তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তারও মৃত্যু হয়।
এদিকে
মর্মান্তিক ঘটনায় সাত মাসের শিশু হোসাইনের বাবা, মা, বোন ও তাকে
বাঁচাতে আসা অনিক নিহত হয়। স্থানীয়রা বলছেন, অনেকটা
অলৌকিকভাবে বেঁচে যায় শিশু হোসাইন। মায়ের কোলে থেকে ছিটকে পড়ে যাওয়ায় প্রাণে রক্ষা
পায় শিশু হোসাইন।
শুক্রবার
(২২ সেপ্টেম্বর) সকালে শিশু হোসাইনকে নিয়ে মিরপুর মডেল থানায় আসেন আমেনা বেগম নামে
এক নারী। সেখানে একটি গণমাধ্যমকে শিশু হোসাইনের বেঁচে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা করেন
তিনি।
আমেনা
বেগম বলেন, হোসাইনের মা যখন পানিতে পড়ে যায় তখন, হোসাইন মায়ের
কোল থেকে ছিটকে পড়ে যায় পানিতে। এ সময় অনিক সঙ্গে সঙ্গে এসে হোসাইনকে পানি থেকে
তুলে আমার কোলে দেয়। পরে আমি তাকে আমার বাসায় নিয়ে প্রথমে শরীরে গরম তেল দেই। এরপর
তাকে নিয়ে প্রথমে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। সেখান থেকে হোসাইনকে
নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করেন চিকিৎসক। রাতে তাকে
সেখানে নেওয়া হয়।
চিকিৎসক
জানায়, হোসাইন এখন সুস্থ। পরে আমি জানতে পারি হোসাইনের দাদা ও নানা মিরপুর মডেল
থানায় আছে, তখন আমি এখানে আসি।
মিজানের
স্বজন ও স্থানীয়দের সূত্র জানায়, মিজানের গ্রামের বাড়ি বরিশালের ঝালকাঠিতে। গত কয়েক
বছর ধরে পরিবার নিয়ে মিরপুর চিড়িয়াখানা রোডে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। মিরপুর
এলাকায় ভাসমান দোকানে শরবত বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন মিজান। গতকাল
বৃহস্পতিবার রাতে তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ঝিলপাড় বস্তিতে শ্বশুর বাড়িতে গিয়েছিলেন।
সেখান থেকে নিজ বাসায় ফেরার পথে তাদের মৃত্যু হয়।