Logo
শিরোনাম

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতিগ্ৰস্থ আসামীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৭ মে ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

মুজাহিদ সরকারঃ

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের আর্থিক কেলেঙ্কারিতে দুদকের এজাহারভুক্ত আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে মানববন্ধন করেছে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন। আজ ১৭ মে মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ শিল্পকলা একাডেমির সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।

গত ৫ মে ৩০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। এই ছয়জন হচ্ছেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদ, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এম.এ. কাশেম, বেনজীর আহমেদ, মিসেস রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মোঃ হিলালী। মামলার চার্জশিটভুক্ত এই ছয় জনই ওয়ারেন্টযুক্ত আসামী। বিভিন্ন গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা স্বত্তেও আসামীদের কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সেই প্রশ্ন তোলা হয় মানববন্ধনে। বক্তারা দাবি করেন, অভিযুক্ত প্রত্যেকেই সমাজের প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাশালী ব্যক্তি। সেকারণেই তাদের গ্রেফতারে এমন গড়িমসি চলছে। কিন্তু এদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় না আনলে এই সিন্ডিকেটের কবল থেকে নর্থ সাউথের মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচানো সম্ভব হবে না।

মানববন্ধনে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্ঠা ড. সুফী সাগর সামস বলেন, মূলত আজিম-কাসেম সিন্ডিকেটের কারণেই নর্থ সাউথ পরিণত হয়েছে দুর্নীতি-অনিয়ম ও জঙ্গিবাদের অভয়ারণ্যে। তাই এদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু অভিযুক্তদের ঠিক কী কারণে গ্রেফতার করা হচ্ছে না, সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। অভিযুক্ত প্রত্যেকেই সমাজের প্রভাবশালী এবং ক্ষমতাশালী। তারা যেন বিচারিক প্রক্রিয়ায় কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সেজন্য তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও গ্রেফতার করে দ্রæত বিচারের আওতায় নিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানান।’

ড. সুফী সাগর সামস আরো বলেন, ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক ট্রাস্টি আজিজ আল কায়সার টিটোও এসব দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। তার বাবা এমএ হাসেম নর্থ সাউথে থাকাকালেই এই সিন্ডিকেটের অংশ ছিলেন। টিটোও এর বাইরে নন। কিন্তু কী এক অজ্ঞাত কারনে আজিজ আল কায়সার টিটোকে মামলা থেকে বাইরে রাখা হয়েছে। আজিজ আল কায়সার টিটোর মতো আরো যারা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আজিজ আল কায়সার টিটোর সিঙ্গাপুরে বিপুল পরিমাণ অর্থের হিসাব নেয়ার জন্য তিনি জোড়ালো আবেদন জানান। 

দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়- বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় অর্থাৎ নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হলেন বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেমোরেন্ডাম অনুযায়ী উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ/অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কতিপয় সদস্যের অনুমোদন/সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্ট এর নামে ৯০৯৬.৮৮ ডেসিমেল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩, ৮২, ১৩, ৪৯৭/- (তিনশত তিন কোটি বিরাশি লক্ষ তের হাজার চারশত সাতানব্বই) টাকা অতিরিক্ত অর্থ অপরাধজনকভাবে প্রদান/ গ্রহণ করা হয়েছে। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্তে¡ও বেশী দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন, পরবর্তীতে বিক্রেতার নিকট থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন এবং পরবর্তীতে আবার নিজেরা উক্ত এফডিআর'র অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাত করেন। এ ধরনের বেআইনী কার্যকলাপ সংঘটিত করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে বিশ্ববিদ্যালয় তথা সরকারী অর্থ আত্মসাত করে নিজেরা অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন এবং উক্ত বেআইনি কার্যক্রম করার ক্ষেত্রে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির আশ্রয় গ্রহণপূর্বক কমিশন বা ঘুষের আদান প্রদান করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বিধায় আজিম উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারম্যা, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, এম.এ. কাশেম, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, বেনজীর আহমেদ, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, রেহানা রহমান, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, মোহাম্মদ শাহজাহান, সদস্য, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, আমিন মোঃ হিলালী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, আশালয় হাউজিং এন্ড ডেভেলপার্স লি:, উল্লিখিত ০৬ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সনের ২নং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর মামলা নং-০১ তারিখ: ০৫/০৫/২০২২ খ্রি করা হয়।

মানববন্ধনে জানানো হয় লাগামহীন দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, সিন্ডিকেট আর জঙ্গিবাদে পর্যুদস্ত দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির ২৫ হাজার শিক্ষার্থীর জীবন। এতো বেশি অনিয়মের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মানও ক্রমেই নিম্নমুখী। নর্থ সাউথের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার পুরনো অভিযোগ তারা বারবারই অস্বীকার করে এসেছে। কিন্তু আদতে নর্থ সাউথ এখনো জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতার খোলস থেকে বের হতেই পারেনি। বøগার ও লেখক রাজীব হায়দারকে ২০১৩ সালে জঙ্গীরা কুপিয়ে হত্যা করে। সেই মামলার সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি নাফিস ইমতিয়াজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মদদে ১০ বছর পর আবারও ভর্তির সুযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলেও মিডিয়া সরব হওয়ায় আবার তা বাতিল করা হয়। এমন হীন কাজের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করছে।


আরও খবর



২০৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো এপ্রিলে

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

দেশে ২০৪ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এলো এপ্রিলে। দর বাড়িয়ে ডলার কেনায় এপ্রিলে বেড়েছে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়।

আগের মাসে যেখানে ১৯৯ কোটি এবং আগের বছরের একই মাসে এসেছিল ১৬৮ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে এক হাজার ৯১২ কোটি ডলার দেশে এসেছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল এক হাজার ৭৫৭ কোটি ডলার।

রেমিট্যান্স বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে রয়েছে। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। দেশের ইতিহাসে যেখানে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ওপরে উঠেছিল ২০২১ সালের আগস্টে। এরপর থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ১১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।


আরও খবর

দাম বাড়ল জ্বালানি তেলের

সোমবার ০৬ মে ২০২৪




দেশের ৭ অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

দেশের সাত অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। সেইসঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টিও হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (৪ মে) দুপুর একটা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, বরিশাল, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাস বলছে, শনিবার দেশের বেশিরভাগ এলাকায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। দিনের তাপমাত্রা গতকালের মতোই উষ্ণ থাকতে পারে। রাতের তাপমাত্রাও বৃদ্ধির আশঙ্কা আছে। তবে দেশের কোথাও কোথাও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে কিছু জেলায়। ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকায় তাপমাত্রা কমলেও তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হবে না।


আরও খবর



রাণীনগরের মাধাইমুড়ি গ্রামে ঐতিহ্যবাহী চরক পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

কাজী আনিছুর রহমান,রাণীনগর (নওগাঁ) :

গত বৃহস্পতিবার নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী চরক পূজা ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়।  চড়ক পূজা ও মেলাকে কেন্দ্র করে শিবের মাধাইমুড়ী সহ আশপাশের গ্রামের মানুষের মধ্যে বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা শুরু হয়েছিল। প্রতিটি হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে আতœীয়-স্বজনে ভরে যায়।  পূজা উদ্যাপন ও মেলা পরিচালনা কমিটি সমন্বয়ে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও চরক পূজার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠিত মেলা শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পূর্ণ হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এই চড়ক উৎসব এই অঞ্চলের হিন্দুদের বেশ আনন্দ উৎসবের খোড়াক হিসেবে প্রতি বছরই নারা দেয়। লোহার শিক দিয়ে তৈরি বরশী পিঠে ফুটিয়ে প্রায় ৩০ ফুট উচুতে শূন্যে ঘুড়ছে । চারে দিকে আগত উৎসক দর্শনার্থী আর ভক্তদের হাত তালি এবং হৈ-হুল্লর করে উৎসাহ যোগায় চড়ক খেলাকারীদের। শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী শিবের মেলা উপজেলার মাথাইমুড়ি গ্রামে গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয় মেলার প্রধান আকর্ষন চড়ক খেলা । আর এ খেলার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত করা হয় চার দিনের শিবের মেলা। 

জানা গেছে, শতবর্ষী এ মেলাকে ঘিরে এলাকা ভরপুর হয়ে উঠে আতœীয় স্বজনের কোলাহলে। মেলার শেষ দিনে দুপুরের পর থেকেই দলে দলে আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা, মহিলা-পুরুষ মাধাইমুড়ি শিব ও কালী মন্দীর প্রাঙ্গনে উপস্থিত হয়। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টার দিকে শুরু হয় চড়ক খেলার প্রস্ততি পর্ব। ৩০ ফুট উঁচুএকটি শিশু গাছের মাথায় বাঁশ দিয়ে চরকী তৈরি করে তার এক মাথায় নওগাঁর রাণীনগরে চার দিন ব্যাপী চড়ক পূজা সম্পূর্ণপূজারীর পিঠে বরশী ফুটিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। একই বাঁশের অপর মাথায় দড়ি বেঁধে সে দড়ি গাছের নীচের দিকে আর একটি বাঁশ বেঁধে তার মাথায় বেঁধে দেওয়া হয়। তারপর ৭-৮ জন লোক মিলে নিচের বাঁশ ধরে সজরে ঘোরাতে থাকেন। তার পিঠে ও পায়ে বরশী ফুটিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া লোকটি চড়ক গাছে ঘুরতে ঘুরতে বাতাশা (চিনির তৈরী মিষ্টি) ছিটাতে থাকেন। কথিত আছে, ভক্তরা সে বাতাশা বিভিন্ন মানত ও অসুখ-বিসুখের সুস্থ্যতার আশায় খুটে খুটে খান। 

চড়ক খেলাকারী নাটোর জেলার সিংড়া উপজেলার দুমদুমা গ্রামের ভোলা (৪৫)। তিনি এ বছর এমনিতেই মাধাইমুড়ি গ্রামে চরক গাছে ঘুরতে এসেছেন। তার শিক্ষাগুরু নাটোর জেলার সিংড়া থানার হাতিন্দা গ্রামের বাবুল চন্দ্র সরকার (সন্নাসী) জানান, সখ করে সে আমার কাছ খেকে এ কাজ শিখেছেন। আমার শিক্ষাগুরু ছিলেন,নাটোর জেলার ভুজনগাছী গ্রামে সুশিল চন্দ্র মহন্ত। তিনার পিছনে সাত বছর ঘুরে আমাকে এ শিক্ষা দেন। 

 মেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোরঞ্জন জানান, প্রতি বছরের চেয়ে এই বছর পূর্ণার্থীদের ব্যাপক আগমন ঘটেছে। মেলার পরিবেশ ও আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি ভাল থাকায় এবছর যাকজমকপূর্ণ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার চড়ক পূজার মধ্য দিয়ে চার দিন ব্যাপী শিবের মাধাইমুড়ী মেলা শেষ হয়।


আরও খবর



গৌরব ও সাফল্যের ১৯ বছরে কবি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

হৃদি চিরান,নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি :

গৌরব ও সাফল্যের দেড় যুগ পেরিয়ে ৯ মে ১৯তম বর্ষে পদার্পণ করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাবার্ষীকি পালন করা হয়। জাতীয় কবির নামে তারই স্মৃতি বিজড়িত ত্রিশালের নামাপাড়া বটতলায় বিশ্ববিদ্যালয়টি ২০০৬ সালের ৯ মে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই থেকে দেশের ৫৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন ও সহশিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার মাধ্যমে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বতন্ত্র অবস্থান বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। এক ঝাঁক তরুণ-মেধাবী শিক্ষকম-লী, মেধাবী শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রমে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় এগিয়ে চলেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে ৫৭ একরের নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে রয়েছে ২৫টি বিভাগ, ২৫০ এরও বেশি শিক্ষক এবং ১০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী।

১৯ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনে রয়েছে ৪টি আবাসিক হল। অগ্নি-বীণা হল, দোলন-চাঁপা হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব নামের হলগুলোতে প্রায় ৪ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অবস্থান করছে। বর্তমানে নির্মাণাধীন রয়েছে আরো দুটি হল। শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আবাসনের জন্য রয়েছে ৪টি ভবন। নির্মাণাধীন রয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের জন্য বাসভবন, ইউটিলিটি ভবন, শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক ভবন, ইনস্টিটিউট ভবন, কেন্দ্রীয় মসজিদ, একটি কলেজ, টিএসসি, দুটি দৃষ্টিনন্দন ফটক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর। সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসকে নিয়ে আসা হয়েছে সিসিটিভির আওতায়, নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে যুক্ত হয়েছে ওয়াকিটকি। স্থাপিত হয়েছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শেখ রাসেল, অঞ্জলী লহ মোর নামের দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্য, ৭২ এর সংবিধান স্মারক হিসেবে স্থাপিত হয়েছে সংবিধান আঙিনা। আবাসিক শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য নির্মিত হয়েছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, আজকে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের মধ্যে এক নামে চেনা একটি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের দেড় যুগ পুর্তি এবং ১৯ তম জন্মদিনে আপনাদের সবাইকে প্রীতি শুভেচ্ছা আর শ্রদ্ধা জানাই। জাতীয় কবির নামে এই প্রতিষ্ঠানে আমরা মূলত শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়নকে মটো হিসেবে গ্রহণ করে আমাদের অভিযাত্রা শুরু করেছি। আমাদের ছাত্রদের মধ্যে শিক্ষার গুণগত মান এবং এই যুগের মতো করে তাদের তৈরি করার যে অভিপ্রায় সেটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্যকর আছে, এবং আমাদের ছাত্রছাত্রীরা আগের থেকে অনেক বেশি দক্ষ হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা নিয়ে উপাচার্য আরো বলেন, এরই মধ্যে আমরা ইউজিসি র‍্যাংকিংয়ে গত দুই বছরে অনেকটুকু এগিয়েছি। আমাদের অবস্থান ৩৯তম থেকে এখন ১৪ তম। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে নানা ক্ষেত্রে কাজ করছে, বড় বড় চাকরি পাচ্ছে এবং শিক্ষকম-লী যারা আছেন তারাও দেশ-বিদেশে গবেষণা নিয়ে ছুটছেন। এবং তাদের গবেষণাকে আজ বিশ্বব্যাপী বহুজন বহু গবেষক কোট করছেন। এই যে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছড়িয়ে যাওয়া এবং ছাড়িয়ে যাওয়া আমাদের এবারের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূলমন্ত্র। আমরা চারিদিকে ছড়িয়ে যেতে চাই, নিজেকে আবারও ছাড়িয়ে যেতে চাই। আপনারা আমাদের সঙ্গে থাকবেন এবং নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অভিযাত্রাকে সমর্থন করবেন বলে প্রীতি আশাবাদ ব্যক্ত করছি।


আরও খবর



নেশাগ্রস্ত স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে সংবাদ সম্মেলন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ |

Image

পুলক ঘটক, সিনিয়র সাংবাদিক :

নেশাগ্রস্ত ও বিকৃত স্বভাবের স্বামীর কাছ থেকে রেহাই পেতে গতকাল (১৭ এপ্রিল বুধবার) ফরিদপুরের ভাঙ্গায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রিয়ন্তী সাহা নামে ১৯ বছর বয়সের এক তরুণী। অত্যাচারিত মেয়েটি স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স চায়। কিন্তু হিন্দু আইনে ডিভোর্স নেই। পরে “শ্বশুরবাড়িতে হামলা করার সময় চার বোতল ফেনসিডিলসহ” মেয়েটির স্বামী দীপকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আচ্ছা বলুন দেখি, দীপ “ফেনসিডিলসহ শশুরবাড়িতে হামলা”র ঘটনাটি না ঘটালে আর কোন আইনে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারত? হিন্দু আইনে প্রিয়ন্তী সাহা প্রতিকার পাবে কিভাবে? প্রকৃত আইনে প্রতিকারের সুযোগ না থাকলে বিকৃত পন্থায় কিভাবে কি করতে হয় সে বিষয়ে আমাদের দেশের মানুষ সিদ্ধহস্ত। সবকিছুতেই বিকৃত পন্থার অনুশীলন!

শুরুতেই ঝরে গেছে মেয়েটির মধুময় দাম্পত্য জীবনের সকল সম্ভাবনা। বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী মাত্র এক মাস আগে গরীবের মেয়ে প্রিয়ন্তীর বিয়ে হয়েছিল এক কোটিপতির নেশাগ্রস্ত ছেলে দীপের সাথে। বিয়ের প্রথম রাত থেকেই শুরু হয় অত্যাচার। অভিযোগ অনুযায়ী, দীপ তাকে জোর করে নেশা করাতো; এমনকি স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত সম্পর্কের গোপন মুহুর্তগুলো ফিল্মিং করে ফেসবুকে দিত। 

মেয়েটি ঐ স্বামীর সাথে সংসার করতে রাজি নয়। ছেলের কাকাও নেশাগ্রস্ত দীপের দুরাচারের কথা স্বীকার করেছে। এ পর্যন্ত এই তথ্যগুলি মিডিয়ায় এসেছে। এরপর দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব যখন দীর্ঘায়িত হবে, তখন হয়তো ছেলের পক্ষ থেকে মেয়েটির চরিত্রের দোষ ছড়ানো হবে। এসব নিয়ে সমাজে খোশগল্প হবে। কিন্তু এর স্থায়ী আইনগত সমাধান এবং এধরনের অবস্থার শিকার হওয়া মেয়েদের সুস্থ্য স্বাভাবিক দাম্পত্য ভবিষ্যৎ তৈরির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ভাববে না! 

আমরা যখন হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ ও মেয়েদের পুনঃবিবাহের আইন চাচ্ছি তখন আমাদের দেশের শিক্ষিত-অশিক্ষিত তথাকথিত প্রগতিশীল কিছু হিন্দু বলছে “হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন।” হিন্দু বিয়ে ভাঙা সম্ভব নয়। মেয়েদের পুনরায় বিয়ে হতে পারে না। বাটপারদের এসব কথা বাস্তবসন্মত নয়, প্রিয়ন্তী ও দীপের ঘটনা তার প্রমাণ। এরকম প্রমাণ অসংখ্য। 

প্রিয়ন্তী নামক ১৯ বছরের এই মেয়েটির জন্য বাকি জীবন একাকি কাটানো কতটা ভাল এবং নিরাপদ? বর্তমান স্বামীর সাথে বৈধভাবে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে তাকে অন্য কোনো ভাল যুবকের সাথে বিয়ে দিয়ে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ দিলে কি অধর্ম হবে? অথচ বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিবাহের বিধান নেই। ভারতের হিন্দু আইনে আছে; হিন্দু শাস্ত্রেও বিধান আছে। 

বাংলাদেশের হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ না থাকা সত্ত্বেও এখন আইনকে পাশ কাটিয়ে বহু দম্পত্তি অবৈধপন্থায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাচ্ছে। অবৈধভাবে মেয়েদের নতুন করে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। জীবনের বাস্তবতায় যে বিষয়ের চাহিদা আছে বা অনিবার্যতা আছে, তাকে শুধু আইনগতভাবে বাঁধা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা যায় না। 

হিন্দু বাটপাররা অবৈধ বিবাহ বিচ্ছেদ, মেয়েদের অবৈধভাবে দ্বিতীয় বিয়ে দেয়া, অবৈধভাবে দাম্পত্য সম্পর্ক করা, অবৈধভাবে সন্তান উৎপাদন এবং সেই অবৈধ সন্তানের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা ইত্যাদি সব জিইয়ে রাখতে চায়। সব অবৈধকর্ম মানবে, কিন্তু বৈধ বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইন প্রণয়ন মানবে না। ইংরেজদের ভগবান হিসেবে বিশ্বাস করে হিংরেজদের রেখে যাওয়া আইন মানবে! 

হিন্দুদের বড় বড় সংগঠন আছে। অথচ বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদ ছাড়া হিন্দুদের কোনো সংগঠনের দাবিনামায় প্রিয়ন্তীর মতো বিড়ম্বিত জীবনের মেয়েদের মুক্তির জন্য বা নারী অধিকারের পক্ষে একটিও দাবি নেই। সবচেয়ে বড় বাটপার সেইসব হিন্দু, যারা নিজেদেরকে শিক্ষিত ও প্রগতিশীল দাবি করে; ইসলামী মৌলবাদের বিপক্ষে কথা বলে অথচ হিন্দু সমাজের সমস্যাগুলোর বিষয়ে নিরব থাকে। শুধু নিরব নয়, এরা কেউ প্রকাশ্যে, কেউ নিরবে এবং কেউ কেউ ইনিয়েবিনিয়ে ”হিন্দু বিয়ে জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” গল্পই চালিয়ে যাচ্ছে। 

মন্ত্র পরে নাকি নারী ও পুরুষের দুই আত্মা এক করে দেয়া যায়! দুই আত্মার বন্ধন হলেও সেটা আবার পুরুষের জন্য নয়। পুরুষ বিয়ে করে এক বউকে ঘরে পৌঁছে দিয়েই চাইলে এক ঘন্টার মধ্যে আবার আরেকটি বিয়ের জন্য দৌড় দিতে পারে। এক পিঁড়িতে বসেই একাধিক মেয়েকে বিয়ে করতে পারে। আরও বহু নারীর সঙ্গে “জন্মজন্মান্তরের বন্ধন” তৈরি করতে পারে। সবগুলো বিবাহবন্ধনে শুধু নারী আটকাবে, পুরুষ মুক্ত। হিন্দু আইনে পুরুষের জন্য যতখুশি বিয়ে করতে বাধা নেই। বিয়ে ছাড়াও যত্রতত্র গমণে পুরুষের বাধা নেই; কারণ পুরুষের জন্য “সতীত্ব” নয়। 

হিন্দু পুরুষের বহুবিবাহের সুযোগ বন্ধ করার কথা বললে জন্মজন্মান্তরের বন্ধনবাদী দাদারা হৈ হৈ করে বাধা দিতে আসে। বিবাহ বিচ্ছেদ আইনের দাবি জানালেও প্রগতিশীলতার মুখোশে প্রতিক্রিয়াশীল শয়তনরা আপত্তি করে। আমরা বহুবার শাস্ত্রবিধি দেখিয়ে বলেছি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিবাহ বিচ্ছেদ এবং নারীর পুনরায় বিয়ে দেয়া সনাতন ধর্মে বৈধ। শাস্ত্রগ্রন্থে এর সুস্পষ্ট বিধান আছে; পৌরাণিক আমলে বিবাহ বিচ্ছেদের নজিরও আছে। একজনেরও সামর্থ্য হয়নি শাস্ত্র দেখিয়ে আমাদের দাবি ভুল প্রমাণ করার। কিন্তু পুরুষতান্ত্রিক কায়েমি স্বার্থ ও হীনমন্যতার ঊর্দ্ধে তারা উঠবে না। 

এরা গরু-বাছুর ও পণ্যসামগ্রির মতো মেয়েকে দান করার পক্ষে। শুধু দান নয়, এর নাম আবার “সম্প্রদান”! অর্থাৎ কোনও প্রকার শর্ত ছাড়া, সম্পূর্ণভাবে স্বত্ত্ব ত্যাগ করে ধর্মার্থে কন্যাদান। মেয়ে নাকি দানের বস্তু! দানের মধ্য দিয়ে মেয়ের উপর বাবার আর কোনও স্বত্ব থাকবে না; কন্যা দান করে বাবা পুণ্য অর্জন করবে। বাবার গোত্রেও মেয়েটির আর পরিচয় থাকবে না। একদম গোত্রান্তর! 

অনেকবার বলেছি, তোমরা একটি প্র্যাকটিক্যাল দৃষ্টান্ত আমাকে দেখাও যেখানে, বিয়ের মন্ত্রের মাধ্যমে মেয়েটির গোত্র বদলে গেছে। মেয়েটির শরীরে আর বাবা-মায়ের ডিএনএ নেই –পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে বিয়ের পর মেয়েটির সঙ্গে তার স্বামীর অথবা তার শশুর- শাশুড়ির ডিএনএ মিলছে। একজনও ডিএনএ টেস্ট করে পরীক্ষা দিতে রাজি নয়। মেয়েকে দান করেছ, তার সাথে তোমার আর সম্পর্ক নেই! দান করে মেয়েকে কি পর করে দেয়া যায়? তুমি কি বিয়ে দেয়ার পর তোমার মেয়েকে ভিন্ন সম্পর্কে বউদি ডাকতে পারবে? তাহলে গোত্রান্তর কি আসলে মিথ্যা নয়? তোমার মেয়ের গোত্রান্তর হবে কেন বন্ধু? 

শাস্ত্রে কন্যাদানের বিধান আছে, আমরা তা অস্বীকার করছি না। যজ্ঞের পুরোহিতকে স্বালঙ্করা কন্যা দান করলে পুণ্য বেশি হয়। শাস্ত্রে তাই বলা আছে। কিন্তু উপযুক্ত ছেলের কাছে বিয়ে না দিয়ে পুরোহিতকে কন্যাদান করতে কেউ রাজি হয় না। শাস্ত্রে শিশু কন্যাদানকে আরও বেশি মহিমান্বিত করা হয়েছে। আট বছর বয়সী কন্যাদানে পুণ্য অনেক বেশি। অষ্টম বর্ষীয় কন্যার বুড়ো স্বামী মারা গেলে সেই বাচ্চা মেয়েটাকে স্বামীর চিতায় পুড়িয়ে মারলে আরও বেশি পুণ্য অর্জন করা যায়। শাস্ত্রে এসব আছে। কিন্তু সরকার আইন করে সতীদাহ ও বাল্যবিবাহ নিষিদ্ধ করেছে। ভারতে পুরুষের বহুবিবহাও নিষিদ্ধ হয়েছে। এখন কন্যাদানের মতো অসভ্যতা বন্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করার সময় এসেছে। মানুষকে উন্নত হতে হবে, আধুনিক সভ্যতা ও জ্ঞানবিজ্ঞানের সমান্তরালে চলতে জানতে হবে। 

আমি বহুবার শাস্ত্র দেখিয়ে বলেছি, কন্যাদান ছাড়াও বিয়ের বিধান আছে। শাস্ত্রে আট প্রকার বিয়ের বিধান আছে। প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর পারস্পরিক পছন্দে ও সন্মতিতে বিয়ের স্বীকৃতি শাস্ত্রে আছে। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী বিশেষ একটি শাস্ত্রের নির্দিষ্ট কোনো বিধান অনুসরণ করার বাধ্যবাদকতা নেই। 

সনাতন ধর্মে উদ্ভট প্রাচীন কিছু প্রথার নজির যেমন আছে তেমনি প্রথার বাইরে গিয়ে উন্নত হওয়ার তাগিদও আছে। সনাতন ধর্ম প্রগতিশীল। পরিবর্তন ও যুগধর্ম অনুসরণ সনাতন শাস্ত্রে অনুমোদিত। যারা সনাতন শাস্ত্রকে প্রতিক্রিয়াশীলতার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে নারীর জীবনকে দুর্বিষহ করতে চায় এবং হিন্দু নারীদের দাসীর মতো ব্যবহার করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই এবং জয় আমাদের প্রাপ্য।


আরও খবর