কাওসার চৌধুরী, লেখক, গবেষক, নির্মাতা :
মুনশিগঞ্জে ‘আমাদের বাড়ি’ হলেও ‘আমার বাড়ি’ কিন্তু মহেশখালির মাতারবাড়িতেই। বিষয়টি একটু গোলমেলে ঠেকছে তো? জ্বী, পরিষ্কার করে দিচ্ছি এক্ষুণি।
মাতারবাড়িতে আমার জন্ম। আমার চৌদ্দ পুরুষ মাতারবাড়িতে জন্ম নিয়েছেন, মাতারবাড়ির কাদামাটি জল-হাওয়ায় জীবন যাপন করেছেন; অত:পর বিদায় নিয়েছেন।
অপরপক্ষে, আমাদের এক বন্ধু- তাঁদের জন্মস্থান মুনশিগঞ্জে একটি বাড়ি তৈরি করেছেন ক’বছর আগে। আট ভাইবোনের এই বাড়িটির তারা নাম দিয়েছেন- ‘আমাদের বাড়ি’। বন্ধু-মহাশয়ের নিমন্ত্রণে সেই বাড়িতে গিয়েছিলাম গত শীতের সময়ে- সম্ভবত ১৮ জানুয়ারি (২০২৫) শনিবারে। বন্ধুবরের বাড়ির নামটি এতটাই চমকপ্রদ যে, ‘আমার বাড়ি’ আর ‘আমাদের বাড়ি’ নিয়ে চমৎকার একটি ধাঁধা হয়ে গেলো :-) ! বলিহারি- এই নাম যিনি দিয়েছেন।
খুবই সুন্দর একটি বাড়ি করেছেন তারা। বেশ দৃষ্টিনন্দন। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধুটি তাঁদের বাড়ি দেখতে নিমন্ত্রণ করে আসছিলেন। কিন্তু তাঁরই সময়ের সীমাবদ্ধতার কারনে আমার আর যাওয়া হচ্ছিলনা! গত বছরের ডিসেম্বরে অনুজপ্রতীম এক বন্ধুর সাথে গিয়েছিলাম মানিকগঞ্জে; তার নাটকের শুটিং উপলক্ষে। ফিরে এসে বেশ মজা করে লিখেছিলাম সারাদিনের অনুভূতি নিয়ে।

সেটা দেখে আমার এই বন্ধুটি বেশ উদ্দীপ্ত হন, উতলে উঠে তাঁর নিমন্ত্রণের আকাঙ্ক্ষা। সেই নিমন্ত্রণ রক্ষা করতেই সেদিন গিয়েছিলাম তাঁদের বাড়ি- ‘আমাদের বাড়ি’তে।
কথা ছিল খুব সকালেই যাত্রা করবো ঢাকা থেকে। কিন্তু আমারই আলসেমিতে একটু দেরি হয়ে গেলো যাত্রা করতে। বন্ধুটি তার গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন ধানমণ্ডি ২৭ নম্বর সড়কের মাঝামাঝি, বেঙ্গলের উল্টোদিকে। আমি একটু গজগম্ভীর চালে হেলেদুলে কিছুটা দেরিতেই গিয়ে উঠি তার গাড়িতে। গাড়ি চলতে শুরু করে মুনশীগঞ্জের উদ্দেশ্যে।
ও হ্যাঁ, আমার বন্ধুটির সাথে আপনাদের পরিচয়্টাই করিয়ে দেওয়া হয়নি এতক্ষণ; মার্জনা করবেন। উনার নাম আব্দুল হালিম খান। চাকুরী, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যকার সব কম্ম সেরে এখন অবসর জীবন যাপন করছেন অন্য দশজন বাঙালির মতো। তবে উনার সবচেয়ে বড়ো পরিচয়- তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্যালুট হালিম ভাই।
পরিচয়টা হয়েছিলো বেঙ্গলেই-‘বঙ্গীয়’ সাংষ্কৃতিক সংগঠনের প্রাণ পুরুষ, লেখক কামরুল ইসলামের মাধ্যমেই। সেই থেকে শুরু। হালিম ভাই বেশ সদালাপী, আড্ডাবাজ এবং মহৎ হৃদয়ের অধিকারী।
ফিরে আসি আমাদের মুনশিগঞ্জ-যাত্রায়। ভেবেছিলাম মাঝপথে রাস্তার পাশে কোন ছাপরা দোকানে চা-পান করবো এটা-ওটা দিয়ে। কিন্তু হালিম সাহেবের নিষেধে আমরা সরাসরি চলে যাই মুনশিগঞ্জেই। উনি লোভ দেখালেন বাড়ীতে পৌঁছে খেজুর রস আর পিঠাপুলি দিয়ে সকালের নাশ্তা করার। কিন্তু বিধি বাম! কী একটা কারনে সেটা আর হয়ে উঠেনি সেদিন! চা আর বিষ্কুট দিয়েই নাশ্তা-পর্ব সমাপ্ত হলো।

এবারে বাড়িটি ঘুরে দেখার পালা।
বাড়িটি যতটা না সুন্দর তার চাইতে দশ গুণ বেশী সুন্দর বাড়ির চারপাশের বিস্তৃত পরিবেশ আর আয়োজন। ফুলের বাগান আর ফল-ফলারের গাছের পাশাপাশি পারিবারিক আড্ডা, বনভোজনের আয়োজন আছে বিশাল এই প্রান্তরে। কয়েক বিঘা জমির উপোরে গড়ে উঠা এই কমপ্লেক্সের অন্যতম আয়োজন হলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি পারিবারিক মিলনায়তন এবং অনন্যসাধারণ একটি পাঠাগার।
এই পাঠাগারের পাশ দিয়েই বয়ে গেছে অসাধারণ সুন্দর একটি নদী- ইছামতি। যদিও প্রায় শুকনো তখোন- অনেকটাই হাজামজা! কিন্তু চোখ বন্ধ করে একটু অনুভব করার চেষ্টা করলেই বোঝা যায়- বর্ষাকালে এই ইছামতির স্রোতের তেজ আর প্রমত্ত্বতা কতখানি থাকে! নিশ্চয়ই দু’কূল ভাসিয়ে উন্মাদিনীর মতো বয়ে চলে বর্ষাকালে! আহা নদী, আহা বর্ষা; আহা আমার বাংলাদেশ!
পাঠাগারের পাশে, নদীর কোলঘেঁষেই তৈরি হয়েছে একটি আড্ডা-চত্ত্বর। অনেকটাই শান-বাঁধানো পুকুর ঘাটের আদলে। বাড়ির সমতল উচ্চতা থেকে একটু নিচে- অনেকগুলো সিঁড়ি-ধাপ নেমে গেছে ইছামতিতে, একদম পানির স্তর পর্যন্ত! আশেপাশে বিভিন্ন জাতের ক’টি গাছ আর তার পাশে কিছু লতাগুল্ম- একটি মায়া (illusion) তৈরি করে রেখেছে অলক্ষ্যে! সে এক ‘ভয়ানক সুন্দর’ পরিবেশ! দেখেই মনটা ভরে যায়। ইচ্ছে হলো, থেকে যাই ক’টা দিন! এই ঘাটে বসেই গোধুলি আর সূর্যাস্তটা দেখবো। গভীর রাতে তারাভরা আকাশটা একটু দেখবো প্রাণভরে। কল্পনায় শুনবো ইছামতির ভরা যৌবনের তরঙের ধ্বণি! আর, প্রাণখুলে একটু গান গাইবো বেসুরো গলায়! ……কিন্তু বাসনাটুকু কেন জানি প্রকাশ করতে মন উঠলোনা :-) ! চেপে গেলাম! আহারে মন, অবুঝ মন!

এই চত্ত্বরে বসলে অনেক দূর পর্যন্ত দৃষ্টি চলে যায়- বিনা বাধায়। ঢাকা শহরে বসে তো জানালায় ফুচকী দিয়ে টুকরো টুকরো ভাঙ্গা ভাঙ্গা আকাশ দেখতে হয়! কিন্তু এই আড্ডা-চত্ত্বরে বসে দৃষ্টি মেলে ধরলেই বোঝা যায়- ‘আকাশ’ আজও তার আগের মাপেই আছে- দিগন্তজোড়া! কোন ‘কাট-ছাট’ করতে পারেনি কেউ; দখল করতে পারেনি এতটুকু! নদী দখলদার কিংবা ভূমি-দস্যুরা এখানটায়, এই আকাশের কাছে এসে- একদম ধরা, caught হয়ে গেছে :-) !
জেনেছি, একাত্তরে এই নদী দিয়েই যাতায়াত করেছে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ। কখনো এখান থেকে ওখানে; আবার কখনোবা গিয়েছে কোন অপারেশনে। হালিম ভাইয়ের বোনের মুখে শুনেছি- একাত্তরে উনি নিজেই নাকি ৮/১০টি মুরগী রান্না করে, প্রচুর পরিমানে রুটি সেঁকে রেখে দিতেন মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। রাতের কোন এক প্রহরে মুক্তি-সেনা কিংবা তাদের লোকজন এসে নিয়ে যেতো সেসব খাবার। উনাদের মা দু’হাত তুলে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করতেন মুক্তিফৌজের নিরাপত্তা আর সাফল্যের জন্য।
উনাদের পরিবারের অনেকেই কোন না কোনভাবে যুক্ত ছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। আমি উনাদের সবাইকে অভিবাদন জানাই। কিন্তু হালিম ভাই এই চ্যাপ্টারটা কেনো জানি একটু ‘চেপে যেতে’ চান কখনো-সখনো! কী কারনে এটা করেন- জানি না, বুঝিনা! হয়তো আমার সাথে ‘মজা’ করেন; কিংবা আমায় একটু বাজিয়ে দেখেন এই বিষয়ে :-) !
কেনো এত ভয়, কীসের এতো ভয়, কাকে এতো ভয়- আমি বুঝতে পারিনা! মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে একাত্তরে ‘শপথ’ গ্রহনের সময়, নিজের জীবনটা আগাম ‘উৎসর্গ’ করেই তো যুদ্ধে গিয়েছিলো প্রতিটি যোদ্ধা। যুদ্ধের মাঠেই তো চলে যেতে পারতো ‘প্রাণ’! সে ক্ষেত্রে, স্বাধীনতা পরবর্তী বিগত ৫৩ বছর তো বরং আমাদের extended life, অতিরিক্ত কিংবা সম্প্রসারিত জীবন কেটেছে- বলতে হবে!
কতো বড়ো সৌভাগ্যবান আমরা! শুধু এইটুকুর জন্যই তো দেশের মাটি এবং মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা জানানো উচিৎ! উচিৎ, মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে হাজারো কৃতজ্ঞতা জানানো।
আচ্ছা বলুন তো, এই গ্রহের ক’খানা দেশ ‘যুদ্ধ’ করে স্বাধীন হয়েছে? খুবই অল্পক’টা মাত্র! এই সাতচল্লিশের কথাই ধরুণ না। ১৪ আগস্টে, আপোষে বৃটিশের পতাকা নেমেছে আর পাকিস্তানের পতাকা উঠেছে। ১৫ আগস্টে বৃটিশের পতাকা নেমেছে আপোষে, আর ভারতের পতাকা উড়েছে আকাশে। এরপরে দুই দেশের সাথে হ্যাণ্ডশেক করে বৃটিশরা তাদের রাজতরীতে চড়ে পাড়ি দিয়েছে নিজদেশে। এইতো কাহিনী!
কিন্তু একাত্তরে আমরা আপোষ করে দেশ নেইনি। যুদ্ধ করে জিতেছি। নয় মাসের যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেই পেয়েছি স্বাধীনতা। কিন্তু তিরিশ লক্ষ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে এই জন্যে। দুই লক্ষ মা-বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে! এক কোটি মানুষ শরণার্থীর জীবন যাপন করেছে ভারতে। লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহারা হয়েছে দেশের ভেতরেই। বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছে। দেশের মানুষ নির্যাতনের শিকার হয়েছে, মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছে তারা- দখলদার পাকিস্তানি বাহিনী আর রাজাকার আলবদরদের হাতে!
** এত ত্যাগ তিথিক্ষার পরেই তবে আমরা অর্জন করেছি কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। অর্জন করেছি আমাদের মানচিত্র, আমাদের সঙ্গীত আর লাল-সবুজ পতাকা। আমরা দাম দিয়ে কিনেছি বাংলাদেশ, কারো দানে নয়।
আমার দৃঢ বিশ্বাস- হালিম ভাই হয়তোবা আমাকে একটু উষ্ণ করবার জন্যই আমাকে খুঁচিয়েছেন প্রসঙ্গটি ওভাবে উত্থাপন করে! যাক।
হালিম ভাইদের বাড়ীতে সবচাইতে ঋদ্ধ যে বিষয়টি আমার নজরে এসেছে- সেটা হলো উনাদের পাঠাগার। খুবই সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার এটি। হালিম ভাইয়ের কাছেই জেনেছি- এই পাঠাগারের জন্ম ১৯৬৯ সালের ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ, ১৩৭৬ বঙ্গাব্দ)। সেই থেকে আজ অব্দি এই পাঠাগারে বই সঞ্চিত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার। বাংলা সাহিত্যের হেন কোন কবি-লেখক বাকী নেই- যার বই এই পাঠাগারে স্থান পায়নি।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম থেকে শুরু করে বঙ্কিম, শরৎচন্দ্র, জীবনানন্দ, পঞ্চকবি, পঞ্চ পাণ্ডব- সবার বই-ই আছে এই পাঠাগারে। তারাশংকর বন্দোপাধ্যায়, শীর্শেন্দু, বুদ্ধদেব বসু, বুদ্ধ দেব দাস গুপ্ত, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, জয় গোস্বামী- কার গ্রন্থ নেই ওখানে! আমাদের দেশের শওকত ওসমান, সৈয়দ শামসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, ইমদাদুল হক মিলন, হুমায়ূন আহমেদ, হাসান হাফিজ, আবুল হাসান, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, শওকত আলী, আকতারুজ্জামান ইলিয়াস, মুহম্মদ জাফর ইকবালসহ প্রায় প্রতিটি লেখকের বই এই পাঠাগারকে করেছে সমৃদ্ধ। বাংলাদেশী লেখকদের অধিকাংশরাই কিন্তু নিজেদের উদ্যোগেই এই পাঠাগারে তাদের বইয়ের 'সেট' প্রদান করেছে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
এমন সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার নিয়ে আমার একটি অভিমান আছে, অনুযোগ আছে হালিম ভাইদের কাছে। এমন একটি পাঠাগার- সীমাবদ্ধ হয়ে আছে সপ্তায় মাত্র দুই দিনের মধ্যে! অর্থাৎ হালিম ভাইদের কেউ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে অর্থাৎ শুধুমাত্র শুক্র-শনিবারে বাড়িতে গেলেই কেবল এই পাঠাগারটি খোলা হয়ে থাকে। ভাইদের মধ্যে কেউ না গেলে ওই দুই দিনসহ পুরো সপ্তাহ-ই বন্ধ থাকে পাঠাগারটি!
অথচ উনাদের গ্রামে আছে ছয়টি স্কুল এবং একটা কলেজ। এখানকার শিক্ষার্থীরা এই পাঠাগারের ‘উপকার’ থেকে বঞ্চিত থাকে সপ্তায় প্রায় পুরো সাত-দিনই। তথাকথিত ‘গ্লোবালাইজেশনের’ নামে, ‘ডিজিটালাইজেশনে’র নামে আমাদের তরুণরা এমনিতেই বই থেকে দূরে! সারাক্ষণ পড়ে থাকে মোবাইল ফোন কিংবা ইন্টারনেটে! সে জায়গায় এতবড়ো সুযোগ থাকার পরেও শুধুমাত্র যথাযথ উদ্যোগের অভাবে এত সমৃদ্ধ পাঠাগারটি নির্জীব হয়ে আছে; পড়ে আছে মৃত!
তারওপরে, ওখানে যেতে হলে উনাদের বাড়ির ‘প্রাইভেসী’ ভেঙ্গে যেতে হয় লাইব্রেরীতে। কারন, লাইব্রেরীর লোকেশনটাই হয়েছে ওভাবে। এই প্রাইভেট লোকেশন ওখানে ‘পাঠক-সাধারণে’র অভিগম্যতা বিঘ্ন করেছে নিদারুনভাবে।
হালিম ভাইয়ের প্রতি আমার বিনীত অনুরোধ থাকবে- সর্ব সাধারণের জন্য, বিশেষত গ্রামের স্কুল এবং কলেজের শিক্ষার্থীদের অভিগম্যতা নিশ্চিত করার জন্য যা করা প্রয়োজন- সেটা করবেন। নইলে এতবড়ো, মহান এই আয়োজন হয়ে পুড়বে নিষ্প্রাণ নির্জীব এবং অর্থহীন! আমি আশা করবো, আমার বিনীত অনুরোধটি হালিম ভাই আন্তরিক বিবেচনায় রাখবেন।
এই পাঠাগারের সবচেয়ে মূল্যবান সংগ্রহটি হলো- আমাদের বাহাত্তরের সংবিধানের একটি কপি। যাদের জানা নেই তাদের জন্য বলছি, বাহাত্তরের সংবিধান কিন্তু ছাপানো কোন সংবিধান/গ্রন্থ নয়! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে শিল্পী আব্দুর রউফ এই পুরো সংবিধানটি হাতেই লিখেছিলেন।
এই সংবিধানের প্রতিটি পাতায় কিন্তু আলপনা করা আছে। এই সংবিধানের অঙ্গসজ্জা করেছিলেন শিল্পী হাশেম খান। পুরো কর্মটির তত্ত্বাবধানে ছিলেন শিল্পী জ্যনুল আবেদীন। অংকনের কাজটি করেছিলেন শিল্পী জুনাবুল ইসলাম, সমরজিৎ রায় চৌধুরী এবং আবুল বারাক আলভী।
আরো চমকপ্রদ বিষয় হলো- এই সংবিধানে- তিয়াত্তরে নির্বাচিত ৩০০ (তিন’শ) জন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষর খচিত আছে। আগ্রহীরা এর একটি কপি নিজের সংগ্রহে রাখতে পারেন। এটা বাজারে পাওয়া যায়।
কথায় কথায় লেখাটি অনেক বড়ো হয়ে গেলো। জানিনা, সবাই পুরো লেখাটি পড়তে আগ্রহী হবেন কীনা। তারপরেও বলছি- এই পর্যন্ত যারা দাঁতে দাঁত চেপে পড়ে ফেলেছেন- তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। য়ামি তাঁদের অভিবাদন জানাই।
অনেক ভালো থাকুন বন্ধুগণ। তবুও ভালো থাকুন সবাই।
হালিম ভাইকে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই- ‘আমাদের বাড়িতে’ নিয়ে যাবার জন্যে। আপনাদের জয় হোক হালিম ভাই।
বাঙালির জয় অবশ্যম্ভাবী।
জয় বাংলা। শুভরাত্রি।
-----------------------------------
আমার নিজের ছবিগুলো বাদে বাকী ছবিগুলো আমারই তোলা।