Logo
শিরোনাম

সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারী (কঃ) জীবনি

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১১ জুলাই ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

মাজহারুল ইসলাম মাসুম, সিনিয়র সাংবাদিক, লেখক গবেষক :

শাহসূফী হযরত সৈয়দ গোলামুর রহমান বাবা ভান্ডারি পাকভারতে মুসলিম রাজত্বের আমলে বাগদাদ নগর নিবাসী এক বিশিষ্ট সৈয়দ পরিবার দিল্লী শহরে আগমন করেন। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া তাঁদের স্বাস্থ্যের প্রতিকূল হওয়ায় তাঁরা সেই স্থান থেকে বাংলার রাজধানী গৌড় নগরে পদার্পণ করেন।তখন ইলিয়াস শাহী বংশের বিখ্যাত বাদশাহ গিয়াসুদ্দিন আজম শাহ বাংলার পরাক্রমশালী স্বাধীন নরপতি ছিলেন। তাঁর রাজত্বকাল ১৩৮৯ খ্রিস্টাব্দ হতে ১৪০৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ছিল। তিনি অতি ধর্মভীরু ন্যায়পরায়ণ রাজা ছিলেন।

তিনি জগদ্বিখ্যাত পারস্য কবি মাননীয় হাফেজের সাথে পত্রালাপ করতেন। তাঁর সভাসদগণের সকলেই জ্ঞানবান ছিলেন। দরবারে ধার্মিক জ্ঞানীর যথেষ্ট সমাদর ছিল।

কথিত আছে যে, উপরোক্ত বাগদাদ নগর নিবাসী সৈয়দ পরিবারে বহু লোক ধার্মিক, জ্ঞানী, যুদ্ধ-নিপুণ, খোদাভীরু অলি দরবেশ ছিলেন। বাদশাহ তাঁদের অতি সম্মান আদরের সাথে গ্রহণ করেন এবং ব্যক্তিগত উপযুক্ততা অনুসারে শাহী খান্দানের গৃহশিক্ষক, শাহী মসজিদের ইমাম, বিচারালয়ের কাজী এবং সেনানায়ক পদে নিযুক্ত করেন। এইভাবে তাঁরা বংশানুক্রমে প্রায় দুইশত বৎসরের অধিককাল বাংলার রাজধানী গৌড় নগরে পরম সুখে সম্মানের সাথে কালাতিপাত করেন। একসময় গৌড়ের সুলতান যুদ্ধে পরাজিত হন এবং গৌড় নগরে বসন্তরোগ মহামারী রূপে দেখা দেয়। দলে দলে নগরবাসী গৌড় ছাড়তে থাকে। পূর্ব থেকেই গৌড় নগরবাসী সৈয়দ পরিবারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে চট্টলা। উপরোক্ত গৌড়ীয় সৈয়দ পরিবারের অপর সদস্য সৈয়দ সুলতান (১৫৫০খ্রি.-১৬৪৮খ্রি.) মতান্তরে কাজী সৈয়দ হামিদুদ্দিন শাহ গৌড় নগর থেকে চট্টগ্রাম এসে পটিয়া থানার অন্তর্গত চক্রশালায় বসবাস শুরু করেন।

তিনি একজন ইসলাম ধর্ম প্রচারক, প্রসিদ্ধ কামেল পীর ছিলেন। তাঁর বংশধরের মধ্যে সৈয়দ আব্দুল কাদের শাহ অন্যতম। একদা তিনি চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার অন্তর্গত আজিম নগর গ্রামে হিজরত করেন। তাঁরই পুত্র সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহ। সৈয়দ আতাউল্লাহ শাহের পুত্র সৈয়দ তৈয়বুল্লাহ শাহ। সৈয়দ তৈয়বুল্লাহ শাহের তিন পুত্রের মধ্যে মধ্যম পুত্র সৈয়দ মতিউল্লাহ শাহ মাইজভান্ডার গ্রামে বসবাস করেন। এই স্থানে সৈয়দ মতিউল্লাহ শাহের তিনপুত্র জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর তিন পুত্রের মধ্যে সৈয়দ আবদুল করিম আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী সৈয়দা মোশাররফ জান বিবির কোলে ২৭ আশ্বিন হযরত শাহসূফী আল সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী প্রকাশ বাবা ভান্ডারী কেবলা জন্মগ্রহণ করেন। হযরত শাহসূফী মাওলানা আল সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী কেবলা কাবা (.) হযরত কেবলা কাবা (.)-এর স্থলাভিষিক্ত ত্বরীকা- মাইজভান্ডারীয়ার পূর্ণ প্রতিষ্ঠাতা।

 আল্লাহ প্রেমে বিভোর জন সমাগমের মহা স্বর্গীয় সমারোহে মাইজভান্ডার শরীফে প্রতিবছর ২৭ শে আশ্বিন পবিত্র খোশরোজ উদযাপিত হয়ে থাকে। তিনি শৈশব থেকেই ধর্মের প্রতি আসক্ত ছিলেন। সাত বৎসর বয়স থেকে তাকে নামাজ রোজা অভ্যস্ত দেখা গিয়েছিল। নির্জনতায় প্রিয় শিশু গাউছ গ্রাম্য মক্তবের শিক্ষা সমাপন করে উচ্চতর দ্বীনি এলেম, শিক্ষাকালে ১৫ বৎসর বয়সেছায়েমুদ্দায়ারঅর্থাৎ সারা বৎসর রোজা রাখতেন। মাদ্রাসার ছুটির ফাঁকে ফাঁকে তাঁর জেঠা পীর হযরত কেবলা কাবা (.) এর নিকট প্রায়শঃ হাজির থাকতেন।

করুণাময়ের সান্নিধ্য লাভের অভিলাষে পাঠ্যাবস্থা থেকেই কঠোর সাধনায় রত থাকতেন এবং ২৮ বৎসর বয়সে পীরের রুহানীয়তের যাবতীয় আধ্যাত্মিক শক্তি তাঁর আত্মায় সঞ্চারিত হয়। হযরত ছাহেব কেবলা কাবা (.) নিজ হস্তে স্বীয় জোববা মোবারক তাকে পরিয়ে দেন। অতঃপর বাবাজান কেবলা কাবা (.) আল্লাহ পাকের একত্বের তৌহিদ আহরণে চলে গেলেন পার্বত্য অঞ্চলের গভীর অরণ্যে।

দীর্ঘ ১২ বৎসরকাল সাধনা পরিপূর্ণ করে ফিরে আসেন নিজ বাসস্থান মাইজভান্ডার শরীফে। সাধনা, সংযম আধ্যত্মিক শক্তির প্রভাবে সংসারের সাথে সকল সম্পর্ক ছেদ করে গোশানশীল অবস্থায় থাকেন। দুই বৎসর পর থেকে ২৩ বৎসর যাবত জবান মোবারক বন্ধ রাখেন। সবাই বিস্ময়ে নির্বাক, তাঁর হস্ত মোবারকদ্বয়ে পানি ঢালার অপরূপ দৃশ্য দেখে। পানির উছিলায় মকছুদ পূরণ কত না বেদনা উপশম হত। তিনি আল কোরআনের মর্মকথা, তৌহিদের মূলমন্ত্রে প্রণীত ত্বরীকা মাইজভান্ডারীয়ার নির্দেশিত পথে মানুষকে দিয়েছেন খোদাপ্রাপ্তির সহজ সরল পথের দিশা, জানিয়েছেন রহমানুর রাহিমের অফুরন্ত সওগাত। বাবা ভান্ডারী কেবলা (.) বেলায়ত প্রাপ্তি এবং বুজুর্গীয় গৌরবোজ্জ্বল পূণ্যে মাইজভান্ডার শরীফ ধন্য।

তাঁর আধ্যত্মিক ছোঁয়ায় এসে দ্বীন দুনিয়া দো-জাহানের ত্বরক্কী লাভ করতে দরবারে পাকে আগত মুসলমান ছাড়াও ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে সর্বকালের সকল জায়েরীনদের একমাত্র উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। মাইজভান্ডারী ত্বরীকা নবুয়্যতে মোহাম্মদীয় জাতে পাকে আত্মপ্রকাশ। সেইরূপ এই বেলায়তের ধারা পদ্ধতি অনুযায়ী ফয়েজ বিতরণে সমর্থ। হযরত বাবা ভান্ডারী কেবলা (.) ২২ চৈত্র ১৩৪৩ বাংলা, এপ্রিল ১৯৩৭ ইংরেজী, ২২ মহরম ১৩৫৩ হিজরী রোজ সোমবার সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ৭১ বৎসর মাস বয়সে তাঁর প্রভুর সাথে মহামিলনের ইচ্ছায় চলে গেলেন (ইনালিল্লাহে……..রাজেউন) প্রতি বৎসরই ২২শে চৈত্র লক্ষ লক্ষ শোকাতুর আশেকের আগমনে ভরে উঠে মাইজভান্ডার শরীফের প্রাঙ্গণ। এই পবিত্র দিনে প্রতিটি মুহূর্তে আসক্তজন ‘‘আল্লাহু আল্লাহু’’ জিকিরে মত্ত থেকে স্ব স্ব কামনা বাসনা পূর্ণ করে নিজ নিজ স্থানে ফিরে যায়।


‘‘বায়াত’’ শব্দটি আরবি শব্দ। এর আভিধানিক অর্থ বিক্রি হওয়া। যাকে ত্বরীকতের পরিভাষায় পীরের হাতে হাত রেখে চাদর ধরে বা পাগড়ী ধরে গুনাহ হতে তাওবাকরতঃ আবদ্ধ হওয়াকে কথ্য ভাষায় মুরিদ বলা হয়। এই মুরিদ আল্লাহ রাসূলের সমস্ত নিয়মনীতির মাধ্যমে পীরের নির্দেশনা পরামর্শ মেনে চলে।


ত্বরীকাতে কামিয়াব হওয়ার পূর্বশর্ত হল নিজ মুর্শিদের প্রতি একান্ত মহববত। একত্ববাদ আন্তরিক আকর্ষণ থাকা। মুর্শিদের প্রতি ভক্তি তাজিমে থাকাই প্রধান আদর্শ বা শর্ত। ‘‘হযরত মাওলানা আল সৈয়দ গোলামুর রহমান আল হাসানী আল মাইজভান্ডারী প্রকাশ বাবা ভান্ডারী কেবলার দেখানো সহজ-সরল পথ অবলম্বন করে সেই সংস্পর্শ তৌহিদের অনুকূলে যে গমন করতে থাকবে ‘‘ইনশাল্লাহ’’ অনতিবিলম্বে সেই নূরে মোহাম্মদীর নূরকে চিনতে সক্ষম হব।
হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় করো, তাঁর সকল নবী আসমানী কিতাব, কেয়ামত তকদীরের উপর পরিপূর্ণ ঈমান আনয়ন কর। খাঁটি অন্তরে দ্বীন ইসলাম তাওহীদে সমর্পিত হও এবং তৎ পর্যন্ত পৌঁছিতে উছিলা বা অবলম্বন খোঁজ। আল্লাহ মাদের সবাইকে সেই তওফীক দান করুন।


আরও খবর



গাজায় ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কারে লাগতে পারে ১৪ বছর

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রায় সাত মাস ধরে চলা ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক যুদ্ধে অবিস্ফোরিত গোলাবারুদসহ বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ অপসারণ করতে প্রায় ১৪ বছর সময় লাগতে পারে। শুক্রবার জাতিসংঘের মাইন অ্যাকশন সার্ভিসের (ইউএনএমএএস) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পেহর লোধাম্মার এই ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।

গাজার ক্ষমতাসীন ইসলামি শাসক গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ২৩ লাখ মানুষের সংকীর্ণ ও উপকূলীয় অঞ্চলটিকে মরুভূমিতে পরিণত করেছে। বর্তমানে সেখানকার বেশিরভাগ বেসামরিক মানুষ গৃহহীন, ক্ষুধার্ত এবং রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।

জেনেভায় এক ব্রিফিংয়ে পেহর লোধাম্মার বলেছেন, যুদ্ধের ফলে প্রায় ৩ কোটি ৭০ লাখ টন ধ্বংসাবশেষ ব্যাপক ঘনবসতিপূর্ণ ওই অঞ্চলে পড়ে আছে।

তিনি বলেন, গাজায় পাওয়া অবিস্ফোরিত গোলাবারুদের সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা প্রায় অসম্ভব। তারপরও ধ্বংস হওয়া ভবনগুলোর ধ্বংসাবশেষসহ পুরো ধ্বংসস্তূপ নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে পরিষ্কার করতে ১৪ বছরের মতো সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তা বলেছেন, ‌‌‘‘আমরা জানি, সাধারণত স্থল বাহিনীর ছোড়া গোলাবারুদের অন্তত ১০ শতাংশ অবিস্ফোরিত ও বিকল অবস্থায় থেকে যায়। আমরা ১০০টি ট্রাক ব্যবহার করে ১৪ বছর ধরে পরিষ্কার কাজ চালানোর কথা বলছি।’’

গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের শত শত যোদ্ধা গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে ঢুকে এক হাজার ২০০ জনকে হত্যা ও আরও ২৫৩ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রাখে। গাজায় হামাসের হাতে এখনও ১২৯ জন জিম্মি রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়।

হামাসের হামলার জবাবে ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। এই যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন; যাদের মধ্যে অন্তত দুই-তৃতীয়াংশই নারী ও শিশু।

সূত্র: রয়টার্স


আরও খবর



কবিগুরুর ১৬৩ তম জন্মবার্ষিকী

প্রকাশিত:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

উদয়দিগন্তে ওই শুভ্র শঙ্খ বাজে। মোর চিত্তমাঝে, চির-নূতনেরে দিল ডাক/পঁচিশে বৈশাখ। এভাবে চির নতুনের মধ্যে নিজের আবির্ভাবক্ষণকে অনুভব করেছেন কবিশ্রেষ্ঠ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। চেয়েছেন সূর্যের দীপ্তি দিয়ে ভুবনকে আলোকিত করতে, নিজেকে উন্মোচন করতে।

আমৃত্যু কর্মযজ্ঞের মধ্য দিয়ে ধাবমান রবীন্দ্রনাথ হয়ে উঠেছেন হাজার বছরের পথিকৃৎ বাঙালি। তার কাব্যছন্দ, সুরের ডালা আর সরল লেখনীর মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে প্রত্যেক বাঙালির। এ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তিনি প্রেরণা দিয়েছেন আমাদের। মুক্ত স্বদেশে এসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম ভাষণেই মনে করেছিলেন তাকে, অশ্রুসিক্ত নয়নে বলেছিলেন, কবিগুরু, তুমি এসে দেখে যাও, তোমার বাঙালি আজ মানুষ হয়েছে...।

আজ পঁচিশে বৈশাখ। বাংলা সাহিত্যের অনন্য প্রতিভা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মদিন। ১৬২ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল তার জন্মদিনের। তবু বাঙালি মানসে এখনো তিনি দিবাকরের মতো সমান সমুজ্জ্বল, তার কিরণ এতটুকু ম্লান হয়নি।

প্রতি বছরই এ দিনটি আসে, চলেও যায়; কিন্তু আমাদের নতুন করে দিয়ে যায় আত্মপরিচয়ের তাগিদ। আত্মশক্তির উদ্বোধনের আহ্বান, মানুষ আর প্রকৃতিকে ভালোবাসার বারতা। কালবৈশাখীর মত্ত মেখে বন্ধহীন বেগে। অম্লান নূতন হয়ে অসংখ্যের মাঝপানে এক দিন তুমি এসেছিলে এ লিখিলে নব মল্লিকার গন্ধে, সপ্তপর্ণ-পল্লবের পবন-হিল্লোল-দোল ছন্দে, খামলের বুকে। সেই যে নূতন তুমি, তোমারে ললাট চুমি, এসেছি জাগাতে বৈশাখের উদ্দীপ্ত প্রভাতে। হে নূতন, দেখা দিক্ আবার জন্মের প্রথম শুভক্ষণ।

জন্মদিনের আড়ম্বর নিয়ে কবি নিজেই ১৩৪৩ সালে প্রবাসী পত্রিকায় লিখেছেন, খ্যাতির কলরবমুখর প্রাঙ্গণে আমার জন্মদিনের যে আসন পাতা রয়েছে, সেখানে স্থান নিতে আমার মন যায় না। আজ আমার প্রয়োজন স্তব্ধতায় শান্তিতে।

রবীন্দ্রমোদীরা মনে করেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা ও বাঙালির অহংকার। অসাধারণ সব সাহিত্যকর্ম দিয়ে তিনি বিস্তৃত করেছেন বাংলা সাহিত্যের পরিসর। অসত্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াইয়ে, জীবন-সংগ্রামের প্রতিটি ক্রান্তিকালে আমাদের পাশে থাকেন রবীন্দ্রনাথ।

রবীন্দ্রনাথ বাংলা ভাষাকে যে ঐশ্বর্য দান করেছেন, তাতে এই ভাষা জ্ঞান-বিজ্ঞানের চর্চা, সব ভাব-অনুভূতির প্রকাশ এবং নির্মল হাস্য-কৌতুকের বাহন হতে সমর্থ হয়েছে। দেড়শ বছর পেরিয়েও কবি আমাদের মাঝে চিরজাগরুক হয়ে আছেন।

রবীন্দ্রনাথ একাধারে কবি, কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার, সংগীত রচয়িতা, সুরস্রষ্টা, গায়ক ও চিত্রশিল্পী। সৃষ্টিশীলতার সমান্তরালে তিনি ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি ও সমাজভাবনা সমানভাবেই চালিয়ে গেছেন। বিশ্বভারতী তার বিপুল কর্মকাণ্ডের একটি প্রধান কীর্তি। অনেকেই মনে করেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাতেই মূলত সার্থক বাংলা ছোটগল্পের সূত্রপাত। মাইকেল মধুসূদন দত্ত ও বিহারীলালের লেখনীর মাধ্যমে বাংলা কবিতায় আধুনিকতার সূচনা হলেও রবীন্দ্রনাথের হাতেই তা পূর্ণতা পায়। একইভাবে রাজা রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের হাতে জন্ম নেওয়া বাংলা গদ্যকেও তিনি চূড়াস্পর্শী সাফল্য দান করেন।

গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের জন্য ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। সাহিত্যে নোবেল বিজয়ী তিনিই প্রথম এশীয় ও একমাত্র বাঙালি লেখক।

রবীন্দ্রসাহিত্য, বিশেষত রবীন্দ্রসংগীত বাঙালির কাছে আলোকবর্তিকা হয়ে দেখা দিয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর তার গানই (আমার সোনার বাংলা) বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মর্যাদায় অভিষিক্ত হয়েছে। এ ছাড়া তার অনেক গান মুক্তিযুদ্ধের সময় অনুপ্রাণিত করেছিল বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের।


আরও খবর



বৈশাখের প্রভাবে ইলিশের দাম চড়া

প্রকাশিত:শুক্রবার ১২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

আর একদিন পরই পহেলা বৈশাখ। বাংলা নতুন বছরের পয়লা দিনটি বিভিন্নভাবে উদযাপন করা হয়। দিনটিকে কেন্দ্র করে মঙ্গল শোভাযাত্রা থেকে শুরু করে পান্তা-ইলিশ শোভা পায় বাঙালির পাতে। ঐতিহ্যবাহী এই উৎসবকে কেন্দ্র বাজারে ইলিশের প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়। কিন্তু চাহিদার তুলনায় এবার সরবরাহ কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের দাবি, বর্তমানে ইলিশ কম ধরা পড়ায় বাজারে সরবরাহ কম। বৈশাখ উপলক্ষে চাহিদা গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে কিন্তু সে তুলনায় সরবরাহ বাড়েনি।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে পয়লা বৈশাখের প্রভাব পড়েছে ইলিশের দামে। জুরাইন, যাত্রাবাড়ী ও সূত্রাপুরের মাছ বাজারে  ৭০০ ও ৮০০ গ্রাম ওজনের জাটকা ইলিশ বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এক কেজির চেয়ে একটু বড় ইলিশ একবারেই কম। ইলিশ, চিংড়ি, রুইসহ অল্প কিছু মাছও পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। সবজি ও মুরগির বাজারে ক্রেতা কম।

সরজমিনে দেখা গেছে, প্রতিকেজি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। ৭০০ গ্রাম ইলিশ ১ হাজার ২০০ টাকা, ৮০০ গ্রাম ইলিশের দাম রাখা হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। আর ১ হাজার টাকায় মিলছে ৫৫০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ। ছোট চিংড়ি প্রতিকেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যাত্রাবাড়ী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আবদুল হক বলেন, ঈদের ছুটিতে বেশিরভাগ মানুষ শহর ছেড়ে বাড়িতে চলে যাওয়ায় বাজারে ক্রেতা নেই। ক্রেতা না থাকায় বেশিরভাগ দোকানি অলস সময় পার করছেন। আর বাজারে ইলিশের সরবরাহ কম থাকায় দামও একটু বেশি।


আরও খবর

দাম বাড়ল জ্বালানি তেলের

সোমবার ০৬ মে ২০২৪




আরও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে মিয়ানমারে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে তুমুল সংঘাত চলছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর। শিগগিরই দেশটিতে চলমান এ গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তের ওপার থেকে আরও রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়তে পারে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলেও।

জাতীয় সংসদ ভবনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জননিরাপত্তা বিভাগের এক প্রতিবেদনে এমন আশঙ্কার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগামী মে মাসেই মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে টেকনাফে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের অনুপ্রবেশের ঘটনাও বৃদ্ধি পেতে পারে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমার সীমান্তে যুদ্ধাবস্থার কারণে সেখানে আগ্নেয়াস্ত্র সহজলভ্য হয়েছে। ফলে সন্ত্রাসী দল বা গোষ্ঠী আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যবহার করতে পারে। মিয়ানমারের পাশাপাশি আরাকান আর্মি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলেও উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে বলে। সেইসঙ্গে মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালান পণ্যের সরবরাহ আরও বেড়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদনে আরও কয়েকটি ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী জোটের সঙ্গে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর লড়াই চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ে পর্যুদস্ত হয়ে প্রাণ বাঁচাতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের টেকনাফে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ও বিজিপির পাঁচ শতাধিক সদস্য। এর মধ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ৩৩০ জন সেনা ও বিজিপি সদস্যকে জাহাজে করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আর সবশেষ গত ২৫ এপ্রিল নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয় আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ২৮৮ সেনা ও বিজিপি সদস্যকে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনের (ইউএনএইচসিআর) হিসাব অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর মোট ৯ লাখ ৯ হাজার ২০৭ জন রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে বাংলাদেশে। এর মধ্যে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ও বালুখালি বর্ধিত ক্যাম্পে রয়েছে ৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৪৬ জন। অন্যান্য ক্যাম্পে রয়েছে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮৩৪ জন রোহিঙ্গা। এর বাইরে ৬ হাজার ৮২৭ রোহিঙ্গা অবস্থান করছে হোস্ট কমিউনিটি তথা কক্সবাজারের স্থানীয় বাংলাদেশি সমাজের সঙ্গে।

বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি ও দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সংসদীয় কমিটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সব বাহিনীকে আরও সচেতন ও সতর্ক থেকে কাজ করার সুপারিশ করেছে। এছাড়া মাদক নির্মূলে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি কঠোরভাবে কিশোর গ্যাং দমন করার সুপারিশ করেছে কমিটি।


আরও খবর



প্রাথমিকে স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

সারা দেশে সব রেকর্ড ভেঙে দাবদাহের পারদ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। পুরো এপ্রিল মাস এমন দৃশ্যই দেখেছে সারা দেশ। অসহ্য গরমে জনজীবনে নেমে এসেছে অস্বস্তি। খুব একটা বৃষ্টির দেখাও মেলেনি। ফলে বিপাকে পড়েছে মানুষ ও প্রাণীকূল।

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গত কয়েকদিন সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন সময়সূচিতে পাঠদান চলছিল। গরম কমে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় বিদ্যালয়ও ফিরছে স্বাভাবিক সময়সূচিতে। মঙ্গলবার (৭ মে) থেকে শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী আগের সময়সূচিতে পুরোদমে চালু হচ্ছে ক্লাস।

সোমবার (৬ মে) বিকেলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার থেকে দেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়, শিশু কল্যাণ ট্রাস্টের প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর লার্নিং সেন্টারে শ্রেণি কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী চলবে।

বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী ক্লাসের সময়সূচি

বছরের শুরুতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যে বর্ষপঞ্জি প্রকাশ করেছিল, সে অনুযায়ী- এক শিফটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হবে সকাল ৯টায়, চলবে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত। দুই শিফটের বিদ্যালয়ে প্রথম শিফট শুরু হবে সকাল ৯টায়, শেষ হবে দুপুর ১২টা ১৫ মিনিটে। দ্বিতীয় শিফটে ক্লাস চলবে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত।

তবে ঢাকা মহানগরীর জন্য পরিপত্র অনুযায়ী নির্ধারিত সময়সূচি প্রযোজ্য হবে। অন্যদিকে প্রাক-প্রাথমিকের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা সময়সূচি নির্ধারণ করবেন।


আরও খবর