Logo
শিরোনাম

তাবলীগের দুই গ্রুপকে নিয়ে অস্বস্তিতে প্রশাসন

প্রকাশিত:বুধবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

 নানা মহলের জোর প্রচেষ্টার পরও আজো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি দ্বীন প্রচারে ঐতিহ্যবাহী অরাজনৈতিক সংগঠন তাবলিগ জামাত। ফলে চতুর্থবারের মতো এবারো দুই গ্রুপ আলাদা ইজতেমার আয়োজন করতে যাচ্ছে। আগামী শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) বাদ ফজর থেকে শুরু হচ্ছে স্বাগতিক বাংলাদেশের তাবলিগ মুরব্বি মাওলানা জোবায়েরপন্থীদের বিশ্ব ইজতেমা। আগামী রোববার আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে তাদের ইজতেমা সমাপ্ত হবে। এরপর চার দিন বিরতি দিয়ে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে তাবলিগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ভারতের মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলভীর প্রপ্রৌত্র মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা। তবে সাদ অনুসারীরা এবারের বিশ্ব ইজতেমাকে তাদের ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমা এবং হেফাজতে ইসলামের এটি চতুর্থ বিশ্ব ইজতেমা বলে দাবি করছেন।

এ দিকে দ্বীন (ধর্ম) প্রচারের বৃহত্তর এ সংগঠনের চলমান বিরোধ নিয়ে চরম অস্বস্তিতে রয়েছে দেশের প্রশাসন। ইতঃপূর্বে বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে বেশ কয়েকটি অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। সম্প্রতি রাজধানীর উত্তরায় একটি মসজিদের ভেতর সাদপন্থী একটি জামাতের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটে। এসব ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তিরা। মাওলানা সাদপন্থীরা নিজেদের তাবলিগের মূল ধারার অনুসারী এবং মাওলানা জোবায়েরপন্থীদের বাংলাদেশের ইসলামিক রাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম নিয়ন্ত্রিত বলে দাবি করে থাকেন। অপর দিকে মাওলানা জোবায়ের পন্থীরা মাওলানা সাদ কান্ধলভীর কিছু বিতর্কিত বক্তব্য এবং তাবলিগে তার একক নেতৃত্ব বা আমিরত্বকে অস্বীকার করে তাকে (সাদ) তাবলিগের উসুল বা মূল ধারা থেকে খারিজ বলে দাবি করে থাকেন।

জোবায়েরপন্থীরা শূরায়ে নেজামের (মাসোয়ারা বোর্ড) ভিত্তিতে তাবলিগ জামাতের কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিশ্বাসী। ফলে তারা আলমে শূরা (বিশ্ব পরামর্শসভা) দ্বারা পরিচালিত বলে দাবি করেন। জোবায়েরপন্থীদের এমন দাবিকে স্ববিরোধী উল্লেখ করে সাদ অনুসারীদের বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনে যুক্ত হাজী মনির বলেন, তারাও (জোবায়েরপন্থীরা) যখন তাবলিগের কাজে জামাত নিয়ে বের হন, তখনো তো একজনকে আমির নিযুক্ত করেন। অথচ তারা আমির মানেন না এমন কথা বলা ভণ্ডামি ও ইসলামবিরোধী। কারণ পবিত্র কুরআনেই আমিরের প্রতি আনুগত্যের কথা বলা আছে। নবী রাসূল ও খোলাফায়ে রাশিদীনের আমলেও আমির ছিলেন এবং সবাই আমিরের আনুগত্য করতেন।

এ দিকে তাবলিগ জামাতের এই দ্বিধাবিভক্তির কারণে সাধারণ অনুসারীরাও কারা হকপন্থী তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছেন। তবে সাধারণ অনুসারীদের প্রত্যাশা, দুই গ্রুপ আবারো এক হয়ে আগের মতো একসাথে ইজতেমার আয়োজন করে তাবলিগের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধার করবে। সাধারণ অনুসারীরা দ্বিধাবিভক্তিতে বিশ্বাস না করায় তারা উভয় গ্রুপের ইজতেমায় শরিক হয়ে থাকেন। অপর দিকে সরকারসহ সব মহলই তাবলিগ জামাতকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চায়।

তাবলিগের ঐক্য অক্ষুণ্য থাক এটাই আমরা চাই : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
গত ২২ জানুয়ারি টঙ্গীতে ইজতেমার প্রস্তুতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত ফলো-আপ সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেন,
বিশ্ব ইজতেমা আমাদের কাছে একটা গর্বের বিষয় ছিল। সারা পৃথিবীতেই আমাদের এই ইজতেমাটা সবার কাছে অত্যন্ত প্রিয় ছিল, সারা বিশ্ব থেকে লোক আসত। এই ইজতেমা বাংলাদেশের একটা ঐতিহ্য। বাংলাদেশে একটা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে এই ইজতেমার মাধ্যমে। এই জিনিসটা অক্ষুণ্য থাক এটাই আমরা চাই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিরোধ মিটানোর জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। অনেক পানি গড়িয়েছে। আমরা বহু জায়গায় আপনাদের (তাবলিগ মুরব্বিদেরকে) পাঠিয়েছি। কিন্তু আপনাদের মনোভাবটা পরিবর্তন হয় নাই। সেজন্য আমরা কষ্ট পেয়েছি।

উত্তরায় মসজিদের ভেতর অপ্রীতিকর ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, মসজিদে আল্লাহর ঘরে গিয়েও আপনারা দখল বেদখল করেন, আমাদের লজ্জায় মাথা হেড হয়ে যায়। আপনাদের কাছে রিকোয়েস্ট থাকবে আপনারা এই কর্মটা থেকে বিরত থাকবেন। সবাই মিলেমিশে থাকবেন। আমাদের সেই শিক্ষাটাই দিবেন, আল্লাহর দাওয়াতের কথাটা আমাদের যেভাবে শিক্ষাটা দিচ্ছেন। আমাদের মিলেমিশে থাকার শিক্ষাটাও আপনারা দিবেন। তিনি বলেন, উত্তরায় যে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে এবং বিভিন্ন জায়গাও এই ঘটনাগুলো ঘটে। আপনাদের কাছে বিনীতভাবে অনুরোধ করব আপনারা এই ঘটনাগুলো ঘটাবেন না। মিলেমিশ চলতে পারার জন্যই আপনাদের আবার রিকোয়েস্ট করব।

 

তিনি বলেন, আমরা মনে করি আপনারা যদি আবার এক প্লেটে একসাথে ওয়াসিফ-জুবায়ের সাব খেতে পারতেন। আমরা যদি এটি দেখে যেতে পারতাম তাহলে আমরা খুব খুশি হতাম। সভায় এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ধর্মপ্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ করে বলেন, আপনি নেতৃত্ব দেন এই দুই গ্রুপ জুবায়ের সাব ও ওয়াসিফ সাবকে মিলিয়ে দিতে পারেন কিনা। এক টেবিলে এক প্লেটে খাওয়ায়ে দিতে পারেন কিনা। তাহলে আমরা আপনাদের অনেক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাব।

মন্ত্রী এ সময় বলেন, আমি জুবায়ের গ্রুপকে একটু পরিষ্কার করে বলতে চাই, আপনারা কিন্তু প্রথম আসছেন। প্রতিবারই আপনাদের দাবি অনুযায়ী প্রথমবার মাঠটা আপনাদের দেয়া হয়। সেই দাবি রক্ষা করে আপনাদের যেভাবে সম্মান দেয়া হয়েছে ঠিক সেই সম্মানের সাথে তাদের (সাদপন্থীকে) মাঠটা বুঝিয়ে দিবেন। যাতে কোনো রকম ভাঙচুর না হয়, তারা যেন কোনো ক্লেইম না করেন। এটা আপনাদের কাছে আমার রিকোয়েস্ট থাকবে। তিনি বলেন, আমরা গতবারও শুনেছি কিছু ভাঙচুরও হয়েছে, কিছু জিনিস খোয়া গিয়েছে। আরো নানান ধরনের কথাবার্তা শুনছি। আমরা চাই আপনারা সুন্দরভাবে তাদের মাঠটা বুঝিয়ে দিবেন।

তাবলিগের দুই গ্রুপের কর্মকাণ্ডে আমি লজ্জিত , মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী :
একই সভায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেন,
আপনাদের কর্মকাণ্ডে আমি নিজেই খুব লজ্জা পাচ্ছি। আমরা মানুষকে বুঝাই, শিখাই যাতে এরকম না হয়। আমাদের যদি আরেকজন ভুল ধরেন এটা আমাদের জন্য লজ্জার। আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব লজ্জিত। আমি তাবলিগের সাথে সম্পৃক্ত হিসেবে প্রত্যাশা করি, আমাদের আচার-আচরণে এরকম ভুল আর হবে না। তিনি বলেন, দশটা মতভেদ হতেই পারে, দশজন উগ্র হতে পারে তাতে অসুবিধা কী? আমাদেরও তো হয়। তাই বলে একজন যাওয়ার সময় একটা কিছু ভেঙে যাবে বা এমন কিছু আচরণ করে যাবে যা আরেকজনের কাছে কষ্টদায়ক হয়।

 

আমরা চাই না তাবলিগের এই বিভেদটা আগামী দিনের জন্য থাকুক , ধর্মপ্রতিমন্ত্রী :
একই সভায় ধর্মপ্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক বলেন,
তাবলিগ জামাতকে সারা বাংলাদেশের মানুষ বিশ্বাস করে, সহযোগিতা করে। আজকে দুটি গ্রুপ হওয়ার কারণে অনেক অসঙ্গতিপূর্ণ কাজকর্ম হচ্ছে, যা সত্যিকারে আমাদের খুব কষ্ট লাগে, বিবেকে বাধা দেয়। আমরা আল্লাহকে রাজিখুশি করার জন্য দ্বীনের কাজ করি। অথচ সেখানে আমাদের মধ্যে বিভেদ অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, আমরা চাই না এই বিভেদটা আগামী দিনের জন্য থাকুক। আপনাদের মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আমরা চাই আপনাদের ঐকমত্য পোষণকল্পে আগামীতে এই বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামীতে কোথাও কোনো রকম ত্রুটিবিচ্যুতি এক তিল পরিমাণও যাতে পরিলক্ষিত না হয় উভয় পক্ষের কাছে বিনয়ের সাথে অনুরোধ থাকবে।

আপনাদের নিয়ে আমরা অস্বস্তিতে থাকি , পুলিশ প্রধান : একই সভায় পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন তাবলিগ জামাতকে উদ্দেশ করে বলেন, একটা সময় ছিল আপনারা বলতেন আপনাদের সাহায্যের দরকার নাই। আপনারাই সব ব্যবস্থা করতেন। আমরা তখন খুব স্বস্তিতে থাকতাম এবং তবলিগ জামাতকে সাহায্য করা আমরা একটা ইবাদত মনে করেছি। এখন যে অবস্থা হয়েছে তাতে আপনাদের নিয়ে আমরা অস্বস্তিতে থাকি। আপনারা দুইজন একসাথে বসেন না এমন একটা অবস্থা হয়েছে। তিনি বলেন, এই জিনিসগুলো যাতে আর না হয়, আমরা একটা চমৎকার পরিবেশ দেখতে চাই। যৌথভাবে আপনারা আবারো তবলিগ জামাতের আয়োজন করবেন। একটি সুন্দর পরিবেশ হবে এমন আগামীর আশায় রইলাম।

আইজিপি আরো বলেন, ইতঃপূর্বে যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছে তা পরস্পরের প্রতি সম্মানবোধ রেখে সবাই বাস্তবায়ন করব। গতবারও শুনেছি এক পক্ষ যখন আরেক পক্ষকে মাঠ বুঝিয়ে দেয় তখন ভেঙে দেয়। আমরা আদব-লেহাজ-তমিজ আপনাদের কাছ থেকে শিখব। তাবলিগে যারা আছেন আপনাদের কাছ থেকে আমরা শিখেছি। এখন আপনাদের মাঝে এসব কী হচ্ছে? আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কী শিখবে? এটা আপনাদের কাছে একটা নিবেদন থাকবে। আমরা আপনাদের কাছ থেকে যে জিসিনগুলো শিখি আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম আমাদের শিশুদের আমরা তা শিখাই। এখন আমরা কী শিখব আপনারা আজ আমাদেরকে বলে যাবেন।


আরও খবর



শৃঙ্খলা ভঙ্গের তালিকায় আওয়ামী লীগে শ্রেষ্ঠ যাঁরা

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

সদরুল আইন, প্রধান প্রতিবেদক:

আওয়ামী লীগের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের যে সমস্ত নেতারা যোগ্যতার চেয়ে অতিরিক্ত পেয়েছেন তারাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন, দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করেছেন, দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।

 যুগে যুগে আওয়ামী লীগের জন্য এটি একটি বাস্তবতা। 

খন্দকার মোশতাক কখনোই আওয়ামী লীগের এত বড় নেতা হওয়ার কথা ছিল না। যোগ্যতার বাইরে বঙ্গবন্ধু তাকে সামনের দিকে এনেছিলেন এবং খুনি মোশতাক তার চরম বিশ্বাসঘাতকতার মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, অযোগ্যরা সবসময় বিশ্বাসঘাতক হয়।

 সবাই মোশতাকের মতো বড় মাপের বিশ্বাসঘাতক না হলেও বিভিন্ন সঙ্কট দেখা গেছে, আওয়ামী লীগে যারা অযোগ্য, আওয়ামী লীগে যারা যত বেশি পেয়েছে তারাই দলের শৃঙ্খলার প্রতি ততটাই বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন। 

এক এগোরোর সময় হঠাৎ করে বড় হয়ে যাওয়া নেতারাই আওয়ামী লীগের জন্য সবচেয়ে বড় বিপদের কারণ হয়ে গিয়েছিল। আর এবার উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়স্বজনরা নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না, তখন সেই সিদ্ধান্ত যারা লঙ্ঘন করেছেন তাদের একটি বড় অংশই হলো অনেক বেশি পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা। 

 যদি এবারের উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের যে সমস্ত মন্ত্রী এবং এমপিরা দলীয় সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করেছেন তাদের হিসাব খতিয়ে দেখি তাহলে দেখব যে, বেশির ভাগই আছেন যারা অনেক বেশি আওয়ামী লীগ থেকে পেয়েছেন। 

এদের মধ্যে ড. আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন ২০০০ সালের দিকে। যোগদান করেই তিনি মনোনয়ন পেয়েছেন, নির্বাচন করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পেয়েছেন। ২০০৯ সালে তিনি মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালেও তিনি মন্ত্রী ছিলেন এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবেও তিনি এখন দায়িত্ব পালন করছেন। 

এত অল্প সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগে এত কিছু পেয়ে যাওয়া নিঃসন্দেহে সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর এই সৌভাগ্যের প্রতিদান তিনি দিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশ অমান্য করে তার খালাতো ভাই হারুন অর রশীদ হীরাকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে।

শাজাহান খান আরেকজন যিনি আওয়ামী লীগে এসে প্রাপ্তির ঝুড়ি পূর্ণ করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, মন্ত্রী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দাপুটে নেতা হিসেবে তিনি পরিবহন সেক্টরে আধিপত্য  দখল করেছেন। আর এবার নির্বাচনে তিনি তার ছেলে আসিফুর রহমান খানকে প্রার্থী করেছেন। 

একরামুল করিম চৌধুরী সেই বিরল ভাগ্যবান আওয়ামী লীগের নেতা যিনি আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কথা বলে এবং স্থানীয় এলাকায় দলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েও আওয়ামী লীগ সভাপতির আপাত্য স্নেহের কারণে এখনও রাজনীতিতে টিকে আছেন। 

আর তার প্রতিদান তিনি দিলেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে শাবাব চৌধুরীকে সুবর্ণচর উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করে।

সাহাদারা মান্নান আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা কৃষিবিদ মুহাম্মদ আব্দুল মান্নানের সহধর্মিণী। কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এক এগোরার সময় সংস্কারপন্থী ছিলেন। বাংলাদেশের পচাঁত্তর পরবর্তী রাজনীতিতে শেখ হাসিনা যাদেরকে টেনে তুলে পাদপ্রদীপে এনেছেন তাদের মধ্যে ছিলেন প্রয়াত আব্দুল মান্নান অন্যতম।

 ২০০৬ সালে সংস্কারপন্থি হওয়ার পরও শেখ হাসিনা তাকে বগুড়া থেকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন এবং আওয়ামী লীগে তিনি কিছুটা কোণঠাসা থাকলেও দল থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়নি। বরং তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে মনোনয়ন দিয়ে শেখ হাসিনা তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। 

আর সেই সহানুভূতির পুরস্কার হল সাহাদারা মান্নানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

বাংলাদেশে যদি সৌভাগ্যবান কোন আওয়ামী লীগার থাকেন তার মধ্যে অন্যতম হলেন আ হ ম মোস্তফা কামাল। তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শুয়ে বসে দিন কাটিয়েছেন। তবু শেখ হাসিনা তার সব অত্যাচার সহ্য করেছেন। অর্থনীতির বারোটা বাজানোর পরও আ হ ম মোস্তফা কামালকে মন্ত্রিসভা থেকে বের করে দেওয়া হয়নি। 

আর তার পুরস্কার তিনি দিয়েছেন দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে। তার আপন ছোট ভাই এবার উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। 

জাহিদ মালেক হলেন আওয়ামী লীগের ভাগ্যবান এক ব্যক্তি, যিনি রাজনীতিতে কোনো রকম ত্যাগ তিতিক্ষা না করেই অনেক কিছু পেয়ে গেছেন। বিশেষ করে তার বাবা ছিলেন স্বৈরাচারের দোসর এবং স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে কর্নেল মালিকের মতো স্বৈরাচারের দোসরদেরকে ছাত্র জনতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিল।

 সেই কর্নেল মালেক পরবর্তীতে আওয়ামী লীগে যোগদান এবং তার সূত্র ধরে জাহিদ মালেক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান মানিকগঞ্জ থেকে।

 তিনি ২০১৪ সালে প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৮ সালে পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি এখন আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটিরও সদস্য। অথচ তিনি কিনা দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাইকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করেছেন।

গাজীপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের নেতা এবং জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি এতোই ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনা তাকে তিনবার দলের জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হিসেবে অলঙ্কৃত করেছেন। মন্ত্রী হিসেবে তিনি কতটুকু সফল হয়েছেন সেটি সাধারণ জনগণ ভালো মতোই জানেন। 

কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর পর একজন জেষ্ঠ্যতম মন্ত্রী হয়েও তিনি দলের সিদ্ধান্ত লঙ্ঘন করে তার ভাতিজা মুরাদ কবীরকে কালিয়াকৈর উপজেলায় প্রার্থী করেছেন। 

অপরদিকে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সালে সাবেক মন্ত্রী এড রহমত আলী মনোনয়ন না কেনায় মনোনয়নের স্বর্ণ দুয়ারে পা রাখেন জেলার সাধারন সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ।

উত্তাল জনসমুদ্রের কাফেলায় দাড়িয়ে তিনি প্রথমবারের মত মনোনয়ন পেলেও এমপি হয়ে তিনি তার চিরায়ত সততার জায়গা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়েন।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর  প্রয়াত এড রহমত আলীর প্রতি শ্রদ্ধার উপহার হিসেবে তার কন্যা রুমানা আলী টুসিকে সংরক্ষিত আসনের এমপি করেন শেখ হাসিনা।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করেন।

তিনিও শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এবারের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থি করেছেন নিজের আপন বড় ভাই জামিল হাসান দুর্জয়কে।

একই সাথে শিল্প শহর শ্রীপুরের সকল মিল ইন্ডাস্ট্রির কান্ডারী করেছেন জামিল হাসান দুর্জয়কে।এমন বাস্তবতা এখন গাজীপুর-৩ আসনের সর্বত্রই।

এরকম তালিকা অনেকে দীর্ঘ। যারাই যত বেশি সুযোগ পেয়েছেন তারাই তত বেশি দলের শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।শেখ হাসিনার বিশ্বাসের অমর্যাদা করেছেন। এটাই আওয়ামী লীগের একটি বড় ট্রাজেডি।


আরও খবর



সাত ধরনের মোটরযানের কর মওকুফ

প্রকাশিত:বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

মোটরযান নিবন্ধন বা ফিটনেস নবায়নকালে ৭ ধরনের মোটরযানের অগ্রিম কর মওকুফ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ৮ এপ্রিল এনবিআর করনীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত স্পষ্টীকরণ চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ১৫৩ (৫) অনুযায়ী ওই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ধারা মোটরযান নিবন্ধন বা ফিটনেস নবায়নকালে কোনো প্রকার অগ্রিম কর সংগ্রহ প্রযোজ্য হবে না। আর ওই সুবিধা পাওয়ার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কোনো সনদের প্রয়োজন হবে না।

জানা গেছে, সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ (স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বলতে সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ); সরকার বা স্থানীয় সরকারের অধীন কোনো প্রকল্প, কর্মসূচি বা কার্যক্রম; কোনো বৈদেশিক কূটনীতিক, বাংলাদেশে অবস্থিত কোনো কূটনৈতিক মিশন, জাতিসংঘ ও ইহার অঙ্গ সংগঠনের দপ্তরসমূহ; বাংলাদেশের কোনো বিদেশি উন্নয়ন অংশীদার এবং ইহার সংযুক্ত দপ্তর বা দপ্তরসমূহ; সরকারের এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান; সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধারা অগ্রিম কর সুবিধার তালিকায় আছে।

উল্লেখ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত ব্যক্তিগত গাড়ির অগ্রিম কর ১৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার, ১৫০০ সিসির বেশি; কিন্তু ২০০০ হাজার সিসির কম এমন গাড়ির অগ্রিম কর ৩০ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার, ২০০০ সিসি থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির জন্য ১ লাখ, ৩০০০ সিসি থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং এর বেশি সিসি হলে দুই লাখ টাকা অগ্রিম কর দিতে হয়।

তবে, দেশে ব্যবহৃত গাড়ির প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি ১৫০০ সিসির কম।


আরও খবর



আলোকিত সেরা নারীর সম্মাননা পেলেন মাধবদীর আমেনা বেগম জোৎস্না

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

নরসিংদীর প্রতিনিধি : নারী উদ্যোক্তা ও সমাজ সেবায়ক বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। 

মাধবদী পৌরসভার ১-২-৩ নং  ওয়ার্ডের ৪ বার নির্বাচিত সাবেক কাউন্সিলর আমেনা বেগম জোসনা দীর্ঘদিন যাবত সমাজ সেবায় নিজ স্বর্গ করে রাত দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে তাছাড়া প্রত্যাশা ট্রেডার্স এর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেছেন অপরদিকে অবহেলিত নারীদের নিয়ে কাজ করেছেন তাদেরকে স্বাবলম্বী করতেও ক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং রাজনীতি অঙ্গন রেখেছে বিশেষ ভূমিকা তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের মাধবদী শহর শাখা  সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব রত রয়েছেন। 

শেরে বাংলা একে ফজলুল হক গবেষণা পরিষদের উদ্যোগে গত ৮ মার্চ  বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে সেরা নারী উদ্যোক্তা ২০২৪ নির্বাচিত হন।

উপলক্ষে আয়োজিত সম্মাননা প্রধান অনুষ্ঠানে শারীরিক অসুস্থতার কারণে উপস্থিত থাকতে না পারায় । উক্ত সংস্থাটির প্রতিনিধির মাধ্যমে তার কাছে  সম্মাননা স্বরূপ সনদ প্রধান ও ক্রেস্ট  পৌঁছে দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে তিনি জানান আমি নারী ও সমাজের জন্য কাজ করে যাচ্ছি এবং যাব আমি মনে করি এটা আমার দায়িত্ব প্রত্যেক নারী স্বাবলম্বী হবে নিজের পায়ে দাঁড়াবে এটাই আমার উদ্দেশ্য কি পেলাম কি পাব এটা কখনো ভাবি নি তবে এই সম্মাননা আমাকে আর উৎসাহিত করেছে উক্ত সংস্থাটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।


আরও খবর



গরমে নানা অসুখের রোগী বাড়ছে হাসপাতালে

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

রাজধানীসহ সারাদেশে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ। একদিকে বৈশাখের অসহনীয় গরমে চারদিকে হাঁসফাঁস অবস্থা। অন্যদিকে গত কয়েকদিনের কড়া রোদের সঙ্গে ভ্যাপসা গরমে সর্দি-কাশি, ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্তদের চাপ বাড়ছে রাজধানীসহ সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে। 


এছাড়াও জন্ডিস, হিট স্ট্রোক, সর্দি-জ্বর নিয়েও হাসপাতালে ছুটে আসছেন রোগীরা। তবে বেশি অসুস্থ হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা।  তাদের সুরক্ষায় রোদ পরিহারের পাশাপাশি যত্রতত্র পানি, রাস্তার পাশের খোলা জুস-শরবত পান থেকে বিরত থাকা এবং পচা বাসী খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এমনকি ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীতে জনসমাগম বাড়লে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা তাদের।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর মহাখালির আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) বা কলেরা হাসপাতাল প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫শ রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়াও বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল এবং  মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও  রোগী সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ বেড়েছে।

 

কলেরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাধারণত এই হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে দুশ থেকে আড়াইশ  ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যা  চারশ ছাড়িয়েছে।গত ১০ দিনে সাড়ে ৪ হাজারের বেশি রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন বলেও গেছে।


রাজধানীর শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের গরমে শুধু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে

দুই শতাধিক শিশু ভর্তি হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং মুগদা হাসপাতালের শিশু বিভাগেও ইতোমধ্যে রোগীতে সব শয্যা পূর্ণ হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 


প্রচণ্ড এ গরমের মধ্যে শিশুদের সুরক্ষায় যথাসম্ভব বাসায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন প্রচণ্ড গরমে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়েছে উল্লেখ করে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, গত কয়েকদিনের গরমে ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এক্ষেত্রে অন্যান্য বয়সীদের তুলনায় শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। বর্তমানে আমার হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শুধু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ভর্তি আছে ১৬ জন। এছাড়া জ্বর, সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়ার রোগী তো আছেই। অন্যান্য সময়ের তুলনায় আক্রান্তের এ হার আমরা অস্বাভাবিক বলছি।


তিনি বলেন, ঈদ-পরবর্তী সময়ে ফুড পয়জনিং (খাদ্যে বিষক্রিয়া) রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। একই সঙ্গে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও আমরা বেশি পাচ্ছি। এজন্য অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি বাসায় পানি খাওয়ানোর ক্ষেত্রেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যতটুকু সম্ভব পানি ফুটিয়ে, এরপর ফিল্টার করে পান করা নিরাপদ।


প্রচণ্ড গরমের কারণে শুধু শিশুরাই নয়, বড়রাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন উল্লেখ করে প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ,  প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ সময়ের  বলেন, বেশি গরমের কারণে শুধু শিশুরাই নয়, বড়রাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা ডায়বেটিস, কিডনিসহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগে ভোগেন, তাদের ঝুঁকিও কোন অংশে কম নয়। তবে গরমের সময় যারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে কাজ করেন তাদের জন্য ঝুঁকিটা অনেক বেশি। তারা ডিহাইড্রেশন (পানিশূন্যতা) ঝুঁকিতে থাকেন, হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন; ডায়রিয়া আর সর্দি-কাশি তো আছেই। এজন্য একটানা এক ঘণ্টার বেশি রোদে থাকা যাবে না।


তিনি বলেন, গরমে এই সময়ে বাইরে না যাওয়াই ভাল। আর বাইরে গেলে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে। সম্ভব হলে পরিমাণ মতো লবণ মিশিয়ে পান করা উচিত। আরও ভালো হয় যদি দু-একটা ওরস্যালাইন খাওয়া যায়। কারণ, গরমে ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে লবণ বের হয়ে যায়। যদি গরমের সময় বাইরে বের হতে হয়, তাহলে ছাতা ব্যবহার করতে হবে এবং একটু ঢিলেঢালা কাপড় পরা ভাল। কারণ, জামা-কাপড় বেশি টাইট হলে শরীর থেকে গরমটা সহজে বের হতে পারে না।


ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, গরমের এই সময়ে অনেকে পিপাসা মেটাতে রাস্তাঘাটের লেবুর শরবত, আখের শরবতসহ নানা ধরনের পানীয় পান করেন। অথচ এগুলোতে ব্যবহার হওয়া পানি বিশুদ্ধ কি না, আমরা কেউই জানি না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ পানি বিশুদ্ধ হয় না। এগুলো খেয়েই মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। শুধু পানি আর শরবত নয়, এ সময়ে বাইরের সবধরনের খোলা খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে। গরমে বের হওয়ার সময় অবশ্যই বাসা থেকে বেশি তাপে ফোটানো ও ফিল্টার করা পানি বোতলে করে নিয়ে বের হতে হবে।


আর গরমের এই সময়ে শিশু ও বয়স্কদের ব্যাপারে বাড়তি সর্তকতার পরামর্শ এ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের।




আরও খবর



চাঁদপুরে অর্ধশত গ্রামে উদযাপিত হলো ঈদুল ফিতর

প্রকাশিত:বুধবার ১০ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলার অর্ধশত গ্রামে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টায় হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

এ জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা জাকারিয়া চৌধুরী। অন্যদিকে সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদরাসা মাঠে সকাল সাড়ে ৯টায় ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন মাওলানা আরিফুল্লাহ চৌধুরী।

এদিকে, সকাল ৯টায় জেলার ফরিদগঞ্জ টোরামুন্সিরহাট বাজার জামে মসজিদেও মাওলানা মাহবুবুর রহমান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, মতলব উত্তর উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানী এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলার আরও কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা এ ধর্মীয় উৎসবে সামিল হোন।

এর আগে গত ১১ মার্চ সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রোজা পালন শুরু করেন এসব মানুষ।

চাঁদপুরে হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরীফের পীরজাদা পীর ড. বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী জানান, এ দেশে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও দুই ঈদ পালনের প্রবর্তক মরহুম মাওলানা ইসহাক (রহ.)। ১৯২৮ সাল রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের নিয়ম চালু করেন। তারপর থেকে সেই ধারা দেশের বিভিন্ন দরবার শরীফের পীরের অনুসারি এবং সচেতন মুসল্লিরা পালন করছেন।

উল্লেখ্য, বিগত ১৯২৮ সালে জেলার হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) প্রথমে তার নিজ গ্রামে এবং পরে তার অনুসারীরা এমন নিয়ম মেনে রোজা রাখা শুরু করেন। সেই ধারাবাহিকতায় ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আযহা উদযাপন করছেন তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি এবং মতলব উত্তর উপজেলা মিলিয়ে প্রায় অর্ধশত গ্রামে প্রায় শতাব্দিকাল ধরে এভাবে রোজা এবং ঈদ উদযাপন হচ্ছে।


আরও খবর