বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি নিম্নচাপের প্রভাবে তিন দিন ধরে ভারী বর্ষণে সুন্দরবন ও উপকূলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া সিরাজগঞ্জ ও কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সড়কে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
হাতিয়া (নোয়াখালী) : নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার সুখচর, নলচিরা, তমরোদ্দি, সোনাদিয়া, নিঝুম দ্বীপসহ নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা অতি জোয়ারে ডুবে গেছে। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের জোয়ারে বেড়িবাঁধের ভেতর-বাইরের বিভিন্ন গ্রাম ও কয়েকটি বাজার ৩-৪ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে পানিবন্দি এলাকার জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে।
মোংলা (বাগেরহাট) : মোংলা সংলগ্ন সাগর ও সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ভোর থেকে আবারও বৃষ্টিপাত শুরু হয়। রাতে থেকে থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হলেও ভোর থেকে মুষলধারে বর্ষণ শুরু হয়। মোংলা সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মোংলা সংলগ্ন সাগর এবং সুন্দরবন উপকূলীয় এলাকায় কয়েক ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে।
শরণখোলা (বাগেরহাট) : সুন্দরবনে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঝুঁকিতে রয়েছে বন্যপ্রাণী। সাগর উত্তাল থাকায় বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরারত শতাধিক ট্রলার সুন্দরবনের দুবলার চর, মেহেরআলী, আলোরকোলসহ বন সংলগ্ন বিভিন্ন খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। বলেশ্বর নদের পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কমপক্ষে ২-৩ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শরণখোলার ৩৫/১ পোল্ডারের বেড়িবাঁধের বাইরে রায়েন্দা বাজার পূর্ব মাথা, বান্দাঘাটা, কদমতলা, গাবতলা, বগী, তেরাবেকা ও শরণখোলা বাজার সংলগ্ন এলাকার সহস্রাধিক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। ফসলি জমি, মাছের ঘের, ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে।
রাজাপুর (ঝালকাঠি) : ঝালকাঠির রাজাপুরে তিন দিনের বৃষ্টিতে দুর্ভোগে পড়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। মঙ্গলবার ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। সকাল ৮টা থেকে নামে অবিরাম ধারায়। ফলে বৃষ্টিতে ভোগান্তি বাড়ে। উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা, বিষখালি নদীতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। সোমবার বাদুরতলা বাজারের ছয়টি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রশি ছিড়ে নদীর মধ্যে চলে গেছে পল্টুনও। সুগন্ধা-বিষখালিসহ জেলার ১১টি নদ-নদীর জোয়ারের পানিতে নদী তীরবর্তী নিচু এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে শহরের মুজিব সড়ক, এস এস রোড, নিউ ঢাকা রোড, বাহিরগোলা রোড, কান্দাপাড়া রোডসহ বিভিন্ন সড়ক ও মহল্লায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরবাসীকে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও অফিসগামীরা। যানবাহন সংকটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের।
কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়া শহরের নিম্নাঞ্চলসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শহরের কোর্টপাড়া, কাটাইখানা মোড়, হাসপাতাল মোড়, বড়বাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েন। কুষ্টিয়ায় আবহাওয়া অফিস বলছে, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৬ দশমিক ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।