Logo
শিরোনাম

আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি

প্রকাশিত:রবিবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ জানুয়ারী ২০25 |

Image

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী শিক্ষাবিদ :

 

কখনো কখনো নিজেকে চিনতে পারিনা | হ্যাংলা পাতলা একটা মানুষ এসেছিলাম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে | তখন ভাবতাম, আমি শিক্ষক হিসেবে এসেছি | সময় যত গড়িয়েছে ততই বুঝেছি শিক্ষক হওয়া খুব কঠিন, বরং যতই দিন যাচ্ছে ততই বুঝতে পারছি আমি শেখাতে আসিনি, শিখতে এসেছি | আমি শিক্ষক হতে পারিনি, তবে ছাত্র হবার চেষ্টা করছি |

তখন চোখে চশমা ছিলোনা, এখন কানের উপর ভর করে দু'চোখে চশমা জায়গা দখল করে নিয়েছে | যখন চোখে চশমা ছিলোনা তখন ব্ল্যাকবোর্ড আর সাদা চক ছিল সম্বল | বই হাতে কখনো ক্লাসে ঢুকবোনা, নিজেই একটা বই হবার চেষ্টা করবো, এমন একটা চিন্তা নিয়েই আমার এখানকার যাত্রাটা শুরু হয়েছিল | জানিনা নিজে বই হতে পেরেছি কিনা, তবে যাদের ছাত্র হিসেবে পেয়েছি তারাই আমার কাছে এক একটা বই, এক একটা বিস্ময় হয়েছে | ওদের পড়াতে গিয়ে, নিজে শিখেছি | শিখতে গিয়ে বুঝেছি, শিক্ষক হওয়া হয়তো আর কখনো হয়ে উঠবেনা | অদ্ভুত মনে হলেও সত্য, এখনও শিক্ষক হতে পারিনি, তবে চেষ্টা করে যাচ্ছি | হয়তো এই চেষ্টাটা আমৃত্যুই চলতে থাকবে, কিন্তু শিক্ষক হওয়ার পিপাসাটা কখনোই মিটবেনা |

গবেষণার কিছুই জানতাম না, এখনো জানিনা | এখনও গবেষণা শিখছি, আমার ছাত্ররাই আমাকে শেখাচ্ছে | ওদের নতুন নতুন চিন্তা, নতুন নতুন আইডিয়া, নতুন নতুন স্বপ্ন, আমাকেও বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে আগ্রহী করছে | ওদের মতো এতো মেধাবী আমি নই, ওদের চিন্তার গতির সাথে আমার চিন্তার গতি কখনোই পেরে উঠেনি, বরং ওদের চিন্তা আমার চিন্তাকে এগিয়ে নিয়েছে | আমার কাছে আমার ছাত্ররাই আমার শিক্ষক, আমি তাদের ছাত্র | আর শিক্ষকরা মেধাবী হলে গবেষণায় ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ নেই | বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে মনে হয়েছিল, গতানুগতিক শিক্ষাদানের মধ্যেই বুঝি শিক্ষা বন্দি হয়ে থাকবে | কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে ততই বুঝেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের চেয়েও বড় নতুন নতুন জ্ঞানের জন্ম দেওয়া | কিন্তু সেটাতে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কতটা এগিয়েছে, সেটা হয়তো ভাবনার বিষয় | সেখানে আত্মসমালোচনটা খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ | কিন্তু আত্মসমালোচনাতে আমরা ভয় পাই, যতটা সাহসী আমরা আত্মপ্রচারে | এর সাথে ক্ষমতার অসুখও এখন প্রায় সবার শরীরে বাসা বেঁধেছে | শরীরের রোগ সরানো যায়, মনের রোগ সারানোর কোনো ওষুধও নেই, চিকিৎসাও নেই |

তখন শুনেছি, গবেষণা করার পরিবেশ এই দেশে নেই | গবেষণা করতে দামি দামি যন্ত্রপাতি লাগে, অনেক অর্থের বাজেট লাগে | এতো অর্থ, এতো দামি যন্ত্রপাতি কেনার কি আমাদের সাধ্য আছে | এমন সময়টাতেই আমার ছাত্ররাই খুব কম বাজেটে আধুনিক যন্ত্রপাতি ডিজাইন করেছে, তৈরী করেছে | | গবেষণার অধরা স্বপ্ন ওদের সৃজনশীল সৃষ্টি দিয়েই মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে | সেই ধারা এখনও অব্যাহত আছে | ওদের এখন দেখছি, মলিকুলার ডিনামিক্স, ডেনসিটি ফাংশনাল থিওরি, মেটল্যাবের মতো জটিল জটিল বিষয়গুলো কত সহজে সমাধান করছে | তখন আমি মাথায় হাত দিয়ে চুলগুলোকে এলিয়ে নিচ্ছি, যদি চুলগুলো নড়াতে গিয়ে আমার ভোঁতা মগজটাই নতুন করে নড়েচড়ে উঠে !

ব্ল্যাকবোর্ড-চকের যুগ গেলো, হোয়াইট বোর্ড-মার্কার পেনের যুগ গেলো, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের যুগ গেলো, এখন এসেছে স্মার্ট বোর্ড | খুব আনস্মার্ট আর বোকা মানুষ আমি, স্মার্ট বোর্ডে পড়াতে গিয়ে যখন প্রায় প্রতিদিন খেই হারিয়ে ফেলি, তখন আমার এখনকার মেধাবী ও সম্ভাবনাময় ছাত্ররাই আমাকে শিখিয়ে দিচ্ছে কত সহজে স্মার্ট বোর্ড ব্যবহার করে সারা পৃথিবীর জ্ঞানভাণ্ডারকে হাতের নাগালে আনা যায় | ওদের কাছে শিখতে গিয়ে খুব আনন্দ পাচ্ছি, গর্বিত হচ্ছি, ওরাও আমার মতো বোকা একটা ছাত্র পেয়ে আনন্দ পাচ্ছে | শিক্ষার মধ্যেই তো আনন্দ, যে শিক্ষায় আনন্দ নেই, সেই শিক্ষা মূল্যহীন | বড় বড় মনীষীদের কথা | খুব ছোট একটা মানুষ আমি | কিন্তু যখন দেখছি আমার ছাত্ররা দেশ ছাড়িয়ে সারা পৃথিবী জয় করে চলেছে, তখন চোখে আনন্দ অশ্রু, গর্বিত বুক | সন্তানরা যখন এগিয়ে যায় বাবারা তখন সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হয়ে উঠে |

আমি ঝুলন্ত তারার মতো, কখনো কেঁদেছি, কখনো হেসেছি, কখনো অভিমান করেছি কিন্তু জীবনের সবচেয়ে পরম পাওয়াগুলো আমার প্রিয় সন্তানরাই দিয়েছে | আমি ঝুলন্ত তারা, যেদিন আকাশ থেকে খসে পড়বো, সেদিনও ওদের জীবনজয়ের জয়োধ্বনিগুলো কান পেতে শুনবো | আমার মতো একটা সাধারণ মানুষকে কেউ হয়তো মনে রাখবেনা, এটাই প্রকৃতির নিয়ম, সময়ের স্রোতে সব যে হারিয়ে যায়, তবে জীবনের অনেক না বলা কথা থেকে যাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গে তরঙ্গে |

আমি হয়তো মানুষ না, ছিলামও না, হয়তো আমি একটা চিত্রকরের কল্পনায় আঁকা ছবি | আমি কাঁদছিনা, আমি বৃষ্টিতে কল্পনায় হাটছি, বৃষ্টিতে কাঁদতে গেলে বৃষ্টি সেই কান্না খেয়ে ফেলে, হাসিমুখটা তখন বেরিয়ে আসে | হয়তো কান্না লুকিয়ে হাসির চেষ্টাটাই জীবন | জীবন খুব কঠিন একটা বিষয়, এর পরীক্ষাটাও কঠিন, কারণ জীবনের পরীক্ষায় পাশ-ফেল নেই |


আরও খবর

আমাদের মফস্বল সাংবাদিকতা ও কিছু কথা

মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪




বছরের প্রথম দিনেই নওগাঁর সড়কে ঝড়লো ২ জনের প্রাণ

প্রকাশিত:বুধবার ০১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ জানুয়ারী ২০25 |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রির্পোটার :

নওগাঁয় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনা। বছরের প্রথম দিনেই সড়কে ঝড়লো আরো দু'জনের প্রাণ, আহত ৪ জন। মর্মান্তিক এসড়ক দূর্ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকাল ১১ টারদিকে নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলাধীন নওগাঁ টু নজিপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের খুন্তির মোড় নামক এলাকায়। নিহতরা হলেন, মহাদেবপুর উপজেলার পশ্চিম খাঁপুর গ্রামের মৃত ইসাহাক সরদারের ছেলে মোশারফ হোসেন এবং মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হেলথ এসিসটেন্ড আফতাব উদ্দীন। এছাড়া আহতরা হলেন,মোটরসাইকেল চালক মহিনগর গ্রামের মোবারক হোসেনের ছেলে আরিফ হোসেন, পঞ্চগড় জেলার চকপাড়া গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে আনসার আলী,  নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার পাটিচরা গ্রামের ইলিয়াছ আলীর মেয়ে সীতা, ধামইরহাট উপজেলার হেরেম সোনাদিঘী গ্রামের নিমাইয়ের ছেলে বাতরাজ। স্থানীয়রা জানায়, যাত্রীবাহী একটি বাস ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসকে ওভারটেক করার সময় পাশের সংযোগ রাস্তা থেকে হঠাৎ করেই একটি মোটরসাইকেলের সড়কে উঠলে এসময় বাসটি নিয়ন্ত্রন হাড়িয়ে  মোটরসাইকেলে সাথে সংঘর্ষ ও যাত্রীবাহী বাসটি উল্টেপড়ে। এতে দূর্ঘনাস্থলেই মোশারফ হোসেনের মৃত্যু হয়। স্থানিয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান। আহতদের মধ্যে গুরুতর আহত আফতাব উদ্দীনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। 

সড়ক দূর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ

মোঃ হাশমত আলী বলেন, সড়ক দূর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ইতি মধ্যেই দূর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।


আরও খবর



রাজধানীতে পটকা ও আতশবাজির আগুনে দগ্ধ ৫

প্রকাশিত:বুধবার ০১ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

ইংরেজি বর্ষবরণের আনন্দ উদযাপনে পটকা ও আতশবাজি পোড়ানোর সময় রাজধানীতে পাঁচ জন দগ্ধ হয়েছে; তাদের মধ্যে তিনজন শিশু।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের পর বিভিন্ন সময়ে তারা ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা নিয়েছে। একটি শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার (১ জানুয়ারি) সকালে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, আগুনে ফারহান নামে ৮ বছর বয়সী একটি শিশুর শরীরের ১৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।

এছাড়া শিফান মল্লিকের (১২) শরীরের ১ শতাংশ, সম্রাটের (২০) শরীরের ১ শতাংশ, শান্তর (৪৩) শরীরের ২ শতাংশ এবং তাফসির (৩) নামে এক শিশুর শরীরের ২ শতাংশ পুড়ে গেছে।

ডা. শাওন বলেন, দগ্ধরা ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে হাসপাতালে এসেছেন। থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ও পটকা পোড়ানোর সময় তারা আগুনে দগ্ধ হয়েছে। তাদের একজন শরীরের ১৫ শতাংশ বার্ন নিয়ে এসেছে। বয়স্ক হলে তেমন আশঙ্কা ছিল না, শিশু তাই তার অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বছরের শেষ রাত উদযাপনের এমন বিপত্তি এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পটকা-আতশবাজির বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কয়েকদিন আগেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকেও বারবার অনুরোধ করা হয়েছে, পটকা ফাটিয়ে যেন শব্দ ও বায়ুদূষণ করা না হয়।

তবে ঢাকাবাসী তা কানে তোলেনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকেই পাড়া মহল্লার চারপাশে শুরু হয়ে যায় হৈ চৈ, থেমে থেমে ভেসে আসতে থাকে পটকার শব্দ। ঘড়ির কাঁটা ১২টায় পৌঁছালে তা চরমে ওঠে। রাতের আকাশ আলোকিত হয়ে ওঠে আতশবাজির রঙিন আলোয়।

গত কয়েক বছরে এরকম উদযাপনের রাতে জ্বলন্ত ফানুস থেকে অগ্নিকাণ্ডও ঘটেছে অনেক জায়গায়।

২০২২ সালে পটকা ও আতশবাজির বিকট শব্দে অসুস্থ হয়ে পড়ে তানজীম উমায়ের নামের ৪ মাস বয়সী এক শিশু। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।


আরও খবর

মেট্রোরেলের সময়সূচি পরিবর্তন

শুক্রবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি উৎসব

মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারী ২০২৫




সবজির স্বস্তি তেল-চালে ম্লান

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ জানুয়ারী ২০25 |

Image

দুই সপ্তাহ ধরে সবজির বাজারে স্বস্তি রয়েছে। বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে। তবে চাল, মাছ ও মুরগি ও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় হতাশ সাধারণ ভোক্তারা। আজ শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, পণ্য পরিবহনে দলীয় কর্মীর চাঁদাবাজি কমে গেছে। বাজারেও তেমন কেউ ঝামেলা করছে না। এ ধারা অব্যাহত থাকলে দাম আরও কমবে।

বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৫০-৬০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ২০-৩০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, কহি ৫০ টাকা ও পটোল ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, গাজর ৪০-৫০ টাকা, ক্ষিরাই ৫০ টাকা, টমেটো ১২০-১৩০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।

এ ছাড়া প্রতি কেজি ধনেপাতা ৩০ টাকা, পেঁয়াজের কালি ৩০-৪০ টাকা, নতুন আলু ৫০ টাকা ও পুরাতন আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০-৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।

দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও। বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০-৮০ টাকায়, আর পাইকারিতে ৪০-৬০ টাকা। এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১০ টাকা, পাটশাক ১০-১৫ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১০ টাকা, ডাঁটাশাক ১০-১৫ টাকা, কলমিশাক ১০ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকায়।

বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহও বেড়েছে। এর প্রভাবে কমছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম ছিল ৭০-৮০ টাকা। তবে গতকাল ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এ ছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে আমদানি করা ও দেশি পুরোনো পেঁয়াজেও কেজিতে ৩০ টাকা দাম কমেছে। গতকাল এক কেজি আমদানি করা পেঁয়াজ ৫০-৬০ টাকায় ও দেশি পুরোনো পেঁয়াজ ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হয়।

এদিকে বাজার নিয়ন্ত্রণে গত সেপ্টেম্বরে ডিম ও মুরগির দাম বেঁধে দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সে সময় উল্টো দাম বেড়ে অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে এ দুটি পণ্যের বাজার। নানা অভিযান ও সভা শেষে ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে এলেও ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে ফের উত্তাপ বাড়ছে মুরগির বাজারে। যা এখনও চলছেই।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০-৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম। অন্যান্য মুরগির দামও ঊর্ধ্বমুখী। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি মুরগি ৫৫০-৬০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৩০-২৪০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকায়। আর জাতভেদে প্রতি পিস হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৬৫০ টাকায়।

৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে আট টাকা বাড়ায় ভোজ্যতেল কোম্পানিগুলো। এরপর দুই সপ্তাহ পার হলেও বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি। বিক্রেতারা জানান, কোম্পানিগুলো স্বল্পসংখ্যক বোতলজাত সয়াবিন দিচ্ছে, তবে তা ভোক্তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। বাজারে দুই সপ্তাহ আগে চালের দাম কেজিতে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছিল। বর্তমানে সেই দামেই স্থিতিশীল রয়েছে।

ভরা মৌসুমেও বাড়ছে চালের বাজারে অস্থিরতা। সব ধরনের চাল কেজিতে সর্বোচ্চ ৪ টাকার মতো বেড়েছে। মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের এক ক্রেতা বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় আমন ধান উঠেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কঠোর হতে হবে।

খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে মিল পর্যায়ে চালের দাম বাড়তি। এর প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারেও। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির বিক্রেতা জানান, চালের দাম অনেক বেড়ে গেছে। গত দুই সপ্তাহে চিকন চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৮ টাকা এবং মোটা ও মাঝারি চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে।

বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট ৭৪-৭৮ টাকা, আটাইশ ৬০-৬২ টাকা, মোটা স্বর্ণা ৫২-৫৬ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১২০-১২৫ টাকায়।

স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। মাছ বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। বাজারে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা, কোরাল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ১৮০ থেকে ২৩০ টাকা ও তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।


আরও খবর

বাড়তি ভ্যাট পুনরায় বিবেচনা করা হচ্ছে

শুক্রবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

রাজধানীর কাঁচাবাজারে ফিরেছে স্বস্তি

শুক্রবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৫




মেডিকেল কলেজে আসন বাড়ছে না

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৭ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ জানুয়ারী ২০25 |

Image

অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, মেডিকেল কলেজে আসন বৃদ্ধি নয়, সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অধিক সংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের কথা ভাবছে সরকার। প্রয়োজনে সমন্বয় করা হবে কলেজগুলোকে।

শুক্রবার সকালে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল কলেজ কেন্দ্রে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, আমি যদি ভালো শিক্ষক না পাই, তাহলে ভালো ডাক্তার কোত্থেকে তৈরি হবে। এজন্য প্রয়োজননির্ভর ডাক্তার তৈরি করতে হবে।

আজ সকাল ১০টায় দেশের ১৯টি কেন্দ্রের একাধিক স্থানে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত চলে ভর্তি পরীক্ষা।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশে মেডিকেল কলেজ রয়েছে ১১০টি। এর মধ্যে সরকারি ৩৭টি ও বেসরকারি ৬৭টি। এ ছাড়া একটি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ও পাঁচটি বেসরকারি আর্মি মেডিকেল কলেজ রয়েছে।

২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন এক লাখ ৩৫ হাজার ২৬১ জন শিক্ষার্থী। আর কোটাসহ মেডিকেলে মোট আসন রয়েছে পাঁচ হাজার ৩৮০টি। এ হিসাবে চলতি বছর আসনপ্রতি লড়ছেন ২৫ শিক্ষার্থী।


আরও খবর



বাতাসে দ্রুত ছড়াচ্ছে দাবানল

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:সোমবার ২০ জানুয়ারী ২০25 |

Image

ছয় দিনের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উল্টো দিক পরিবর্তন করে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। এর মধ্যে ঝড়ো বাতাসের পূর্বাভাসে দেওয়ায় নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগুনে এ পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

দাবানল নতুন করে মোড় নিয়েছে ব্রিটেন উডস এবং সান ফার্নান্দো ভ্যালির দিকে। পালিসেডস, ইটন, কেনেথ, লিডিয়া, হার্স্ট এবং আর্চারের অনেক এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে প্যালিসেইডসে দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়েছে।

কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, সম্প্রতি সান্তা আনা নামে ঝড়ো বাতাসের গতি কিছুটা কমায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আশার আলো দেখা গিয়েছিল। সপ্তাহ শেষে অপেক্ষাকৃত ‘শান্ত থাকা’ শুষ্ক সান্তা আনা বাতাস রোববার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত আবার তীব্র হবে। যার গতিবেগ ৬০ মাইল অর্থাৎ ৯৬ কিমি পর্যন্ত পৌঁছাবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে দাবানল আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনার স্থানীয় সময় রোববার দাবানলের আগুনে ২৪ জন মারা যাওয়ার তালিকা দিয়েছে। এছাড়া ১৬ জনের নিখোঁজের কথা জানিয়েছে।

বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে চারটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে প্যালিসেইডস দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়েছে। আগেই এই দাবানলে পুড়েছে ২২ হাজার একর এলাকা। ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্যালিসেইডস দাবানল মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।

নতুন করে এই আগুন বৃদ্ধি পাওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্যালিসেইডস দাবানল ও লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চলে এটন দাবানল নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতির কথা জানিয়েছিলেন। এ দুই দাবানলকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা হচ্ছে। দুই দাবানলে একত্রে ১৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভৌগোলিক হিসাবে এই আয়তন নিউইয়র্কের ম্যানহাটান এলাকার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।

ছয় দিনের দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে ৪০ হাজার একরেরও বেশি এলাকা। আগুনের গ্রাসে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়েছে ১২ হাজারের বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা। উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষ।

অস্বাস্থ্যকর বাতাসের জন্য স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া এবং বাসিন্দাদের মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া অধিদফতর আগামী সপ্তাহের জন্যও লস অ্যাঞ্জেলেস ও সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের সতর্কতা জারি করেছে।

দমকল বাহিনীর কর্মীরা লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং বিধ্বংসী দাবানলের বিস্তৃতি কমানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন।

বিমান এবং হেলিকপ্টার থেকে একযোগে আকাশ থেকে পানি ফেলে ম্যান্ডেভিল ক্যানিয়নে কর্মরত দমকল বাহিনীর কর্মীদের সহায়তা করে প্যালিসেড দাবানল আটকানোর চেষ্টা করছে।

সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানল : লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসে প্যালিসেড ও ইটনের অগ্নিকান্ড ইতোমধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দাবানল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এই দুই দাবানলে যৌথভাবে ৮৫ বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড পুড়িয়েছে এবং প্রায় ১০ হাজার স্থাপনা ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেস ও এর আশপাশের এলাকাগুলোতে দাবানলের কারণে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার মানুষকে নিরাপদ অবস্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে হাজার হাজার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং দশ হাজারেরও বেশি হেক্টর ভূখণ্ড পুড়ে গেছে।


আরও খবর