Logo
শিরোনাম

বাংলাদেশে সুফিবাদ

প্রকাশিত:বুধবার ০৯ মার্চ ২০২২ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

অধ্যাপক . মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন

 

 সুফিবাদ একটি উদার, অসাম্প্রদায়িক, সহনশীল সার্বজনীন প্রেমময় মতবাদ। ব্যক্তিজীবনকে কলুষমুক্ত রাখা; সব ধরনের লোভ, স্বার্থপরতার ঊধর্ে্ব নিজের অবস্থান সংহত রাখা; পারিবারিক জীবনকে শান্তিময় রাখা এবং সামাজিক জীবনকে সুশৃঙ্খল সৌন্দর্যময় রাখার জন্য সুফিবাদের নৈতিক আধ্যাত্মিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। সুফিবাদ মানুষকে সত্যিকারের মানুষ তথা 'ইনসানে কামেল' বা পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। মানব হৃদয়কে প্রকৃত অর্থে এক প্রেমিক হৃদয়ে পরিণত করে সুফিবাদ। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সমাজজীবনে সভ্যতার

বিকাশে মতবাদের রয়েছে অনন্য অবদান।
অলি, সুফি, পীর, ফকির, দরবেশ, গাউস, কুতুব সাধক হিসেবে যারা আমাদের সমাজে পরিচিত; মূলত তাদের মাধ্যমেই সুদূর অতীত থেকে বাংলা ভূখণ্ডে শান্তির ধর্ম ইসলামের প্রচার-প্রসার বিস্তৃতির ধারা অব্যাহত রয়েছে। সুফিবাদের মহান দীক্ষায় উজ্জীবিত হয়েই তারা আমাদের এতদঞ্চলে ইসলামের শান্তির সুবাতাস বইতে দিকপালের মতো অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। পারস্য সাহিত্য এবং ইরানি সুফিবাদের প্রভাবে প্রভাবিত অলি-আউলিয়াদের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়া আমাদের দেশে প্রচারিত হয়। পারস্য সাহিত্যের ভাবধারার শ্রেষ্ঠ সম্পদ এই সুফিবাদে অভিব্যক্তি লাভ করেছে। উমর খৈয়্যাম, ফেরদৌসি, শেখ সাদি, জালালুদ্দিন রুমি, হাফিয শিরাযি, জামি_ সবাই সত্যের পথিক, সাধক, ভাবুক এবং সুফিবাদের প্রত্যক্ষ অনুশীলনকারী।

খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাংলায় তুর্কি শাসন স্থায়িত্ব লাভ করলে উত্তর ভারতীয় সুফি মতবাদের ক্ষীণধারা অর্ধশতাব্দীর মধ্যেই প্রবল ভাব ধারণ করে একটি প্রকাণ্ড নদীতে পরিণত হয়। প্রধানত গঙ্গার উভয় কূল ধরে উত্তর ভারতীয় সুফি মতবাদ বাংলায় প্রবেশ করেছিল। উত্তর ভারতীয় সুফিদের মধ্যে বাংলায় সুফি ভাব ইসলাম প্রচারের জন্য যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি, তাদের মধ্যে খাজা মুইনুদ্দিন চিশতি, খাজা কুতুবুদ্দিন বখতিয়ার খাকি, শেখ ফরিদুদ্দিন গান্জে শকর, নিযামুদ্দিন আউলিয়া, শেখ শরফুদ্দিন বু আলি শাহ কলন্দর, বদিউদ্দিন শাহে মদার, শেখ আহমদ সরহিন্দ মোজাদ্দেদে আলফেসানি প্রমুখ সমধিক প্রসিদ্ধ।

সুফিদের কয়েকটি দল পাক-ভারত উপমহাদেশে আগমন করেন মুসলিম সামরিক শক্তির আবির্ভাবের পূর্বে। বাংলাদেশেও তাদের আগমন হয় সেই যুগেই। প্রথম দলের সাফল্য দেশের বিস্তৃতির পরিপ্রেক্ষিতে সুফিদের সেই অনুপ্রবেশের ধারা অব্যাহত থাকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। মুসলিম শাসনামলে সেই ধারা শাসকশক্তি শরিয়তের সহযোগিতায় প্লাবিত করে দেয় সারা বাংলাদেশ। মুসলিম যুগে বঙ্গদেশ সুফি সাধকদের সংস্পর্শে ভালোভাবেই এসেছিল। বাংলার একটা বৈশিষ্ট্য আছে। বাংলার ভৌগোলিক সংগঠন হয়েছিল পলিমাটির স্তরে স্তরে। দিনে দিনে আমরা সেই স্তরের ইতিহাস আবিষ্কার করে বিস্মৃত হয়ে চলেছি। বাংলার ধর্ম সম্বন্ধেও সেই একই কথা। ধর্মতত্ত্বের বিশ্লেষণে স্তরের পর স্তরের ইতিহাস আবিষ্কৃত হবে। বিশুদ্ধ বৈদিক ধর্ম বাংলায় স্বীকৃত হয়নি। পুরোহিতের মন্ত্রে, পূজার উপকরণে এবং বরণ ডালায় কত সভ্যতার কত ভাবধারার মিলন মিশ্রণ! এসব সম্ভব হয়েছিল বাংলার উদার মানস ক্ষেত্রের জন্য।

বাংলায় মুসলিম রাজশক্তির অভ্যুদয়ের আগে দশম একাদশ শতাব্দীতে এবং দ্বাদশ শতাব্দীর প্রথম পাদে যারা বাংলাদেশে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন, সেসব নিবেদিতপ্রাণ আত্মপ্রচারবিমুখ সুফি মুবালি্লগদের মধ্যে সর্বাগ্র গণ্য হলেন শাহ সুলতান মাহিসওয়ার (রহ.) তার পুরো নাম মির শাহ সৈয়দ সুলতান মাহমুদ বালখি মাহিসওয়ার (রহ.) বগুড়া জেলার মহাস্থানে তার পবিত্র মাজার অবস্থিত। তিনি ৪৩৯ হিজরি মোতাবেক ১০৪৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় আগমন করেন। শাহ সুলতান বালখি মাহিসওয়ার পরবর্তীকালে আরও অনেক অলি-দরবেশদের মাজার থাকায় পৌণ্ড্রবর্ধনের পরিবর্তে মহাস্থানকে 'মাস্তানগড়' অথবা 'মহাস্থান' নামে আখ্যায়িত করা হয়েছে। সুফি মাহিসওয়ার মৎস্যাকৃতির বাণিজ্য জাহাজে সমুদ্রপথ অতিক্রম করে বাংলায় আগমন করে সন্দ্বীপে অবস্থান নেন। অতঃপর কিছুকাল পর সুদৃশ্য জনাকীর্ণ ঢাকার হরিরামপুর নগরে আসেন। তথাকার হিন্দু রাজা বলরামকে তিনি পরাস্ত করেন।তার অলৌকিকত্বে মুগ্ধ হয়ে রাজার মন্ত্রী ইসলাম গ্রহণ করে মাহিসওয়ার কর্তৃক সিংহাসনে আরোহণ করেন। তারপর তিনি বগুড়ায় আসেন এবং রাজা পরশুরাম কর্তৃক প্রদত্ত ভূমিতে আস্তানা গড়ে তোলেন। কিন্তু রাজা পরশুরাম সুফি মাহিসওয়ারের সঙ্গে বিবাদে এমনকি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন এবং নিহত হন। মাহিসওয়ার তার অলৌকিক শক্তি আর আত্মবিশ্বাস অসীম সৎ সাহসের অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়ে প্রবল ক্ষমতাধর অত্যাচারী রাজাদের পরাস্ত করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন। ইসলামের বিজয় নিশান ওড়াতে পেরেছিলেন। তার সততা, ন্যায় ধর্মপ্রবণতা বিজয়ে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তার সম্পর্কে অনেক জনশ্রুতি এখনও স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে প্রচলিত রয়েছে।

বাংলাদেশের সুফি-দরবেশদের মধ্যে চট্রগ্রামে সৈয়দ আহম্মদ উল্লাহ মাইজভান্ডারি, অন্যতম

সিলেটের শাহজালাল ইয়ামেনি এক বিশিষ্ট স্থান অধিকার করে আছেন। তিনি ১২২৭ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় আগমন করেন। মরক্কোর তাঞ্জানিয়াবাসী বিখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা ৭৪৫ হিজরি মোতাবেক ১৩৪৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলা পরিভ্রমণে এসে শাহজালালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তার মতে, শাহজালাল ইয়ামেনি ছিলেন তার সময়ের সর্বশ্রেষ্ঠ অলি। ইবনে বতুতার এই সাক্ষাতের পরের বছরই হজরত শাহ জালাল ইন্তেকাল করেন। দেশে ইসলাম বিস্তৃতির জন্য বাংলার মুসলমান এই স্বনামখ্যাত সুফি-দরবেশের কাছে প্রভূত পরিমাণে ঋণী। তিনি যে শুধু নিষ্ক্রিয় স্থাণুর মতো সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী ছিলেন তাই নয়, বরং তিনি একাধারে ধর্মপ্রচারক যোদ্ধা ছিলেন। খ্রিস্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীর দ্বিতীয় পাদে পূর্ববঙ্গ পশ্চিম আসাম একদিকে যেমন তার রণ-দুন্দুভি-নিনাদে মুখরিত হয়ে উঠেছিল, ঠিক তেমনি অপরদিকে তার প্রচার তৎপরতায় মেতে উঠেছিল। এই বিশাল ভূভাগে তিনিই সর্বপ্রথম উল্লেখযোগ্যরূপে সনাতন ইসলামের বীজ বপন করেছিলেন;

তাই এখনও বাংলার মুসলমানরা শত শত পল্লীগাথায় তার স্মৃতি রক্ষা করে চলেছেন। সিলেটের তদানীন্তন হিন্দু রাজা গৌর গোবিন্দের অমানুষিক অত্যাচারে বুরহানুদ্দিন নামক এক মুসলমান অত্যাচারিত হয়ে গৌড়ের সুলতানের শরণাপন্ন হলে সুলতান ফিরোজ শাহ দেহলভি রাজা গৌর গোবিন্দের শাস্তিদান মানসে সিকান্দার গাজিকে বিরাট বাহিনীসহ সিলেটে প্রেরণ করেন। এই বাহিনীর সহযোগী শক্তি হিসেবে শাহজালালও যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং রাজা গৌর গোবিন্দকে পরাজিত করেন। ফলে রাজা পলায়ন করেন এবং সিলেট সর্বপ্রথম মুসলমান কর্তৃক বিজিত হয়। শাহজালাল (রহ.) ধর্ম প্রচারে বাকি জীবন সেখানেই কাটিয়ে দেন। ইবনে বতুতা বলেন, এই পার্বত্যাঞ্চলের অধিবাসীরা শাহজালালের কাছ থেকে ইসলামের দীক্ষালাভ করেন এবং জন্য তিনিও তাদের মধ্যে বসবাস করেছিলেন।

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে ইসলামের প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে হজরত সৈয়দ শাহ মাখদুম রুপোস প্রাতঃস্মরণীয় হয়ে আছেন। রাজশাহী শহরের পাশে পদ্মা নদীর উত্তর তীরে দরগাপাড়া মহল্লায় তার পবিত্র মাজার অবস্থিত। তিনি সুলতান হোসেন শাহের রাজত্বকালে বাংলায় আগমন করেন এবং তৎকালীন মুসলিম সমাজে প্রচলিত ধর্মীয় কুসংস্কার, কুআচার অন্ধবিশ্বাসকে দূর করার অভিলাষে আত্মপ্রাণ উৎসর্গ করেছিলেন।
বাংলার দক্ষিণাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা যশোর এলাকায় পবিত্র ইসলামের প্রচার-প্রসারে অভূতপূর্ব অবদান রেখে যিনি ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, তিনি হলেন হজরত খানে আযম খান জাহান আলি। বড়পীর আবদুল কাদের জিলানির বংশধর খান জাহান আলি (রহ.) সুদূর তুরস্ক থেকে প্রথমে দিলি্ল পরে গৌড়ে এসে

বসবাস করেন।
ছাড়াও আরও অনেক সুফি-সাধক বাংলায় আগমন করেন এবং পূর্বে সিলেট-চট্টগ্রাম থেকে পশ্চিমে বর্ধমানের মঙ্গলকোট এবং দক্ষিণে বাগেরহাট ছোট পাণ্ডুয়া থেকে উত্তরে দিনাজপুর জেলার কাঁটাদুয়ার পর্যন্ত সুবিশাল এলাকা ছিল তাদের কর্মক্ষেত্র।


লেখক গবেষক; শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


আরও খবর



স্বজনদের কাছে ফিরলেন এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

 ডিজিটাল ডেস্ক:অবশেষে স্বজনদের কাছে ফিরেছেন জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হওয়া এমভি আবদুল্লাহর ২৩ নাবিক।

 মঙ্গলবার (১৪ মে) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে নাবিকদের নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায় এমভি জাহান মনি-৩। 

এর আগে দুপুর ১২ টার দিকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থেকে নাবিকদের নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়  জাহাজটি।

পরে ২৩ নাবিককে বরণ করে নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ সময় নাবিকদের স্বজনরাও উপস্থিত ছিলেন। বন্দরে পৌঁছার পর সেখানে উপস্থিত সকলের প্রতি হাত নেড়ে অভিবাদন জানান নাবিকরা। 

বন্দরে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শেষে যে যার বাড়ির উদ্দেশ্যে নাবিকদের রওনা দেয়ার কথা।

এর আগে, দুপুর ১২ টার দিকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া থেকে নাবিকদের নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এমভি জাহান মনি-৩। 

সোমবার বিকেলে নাবিকদের নিয়ে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজটি কুতুবদিয়া বহির্নোঙরে ভিড়ে। সেখানে চলছে চুনাপাথর খালাস কার্যক্রম। ‘এমভি আবদুল্লাহ’র দায়িত্ব নিয়েছে নতুন ২৩ নাবিক।

গত ১২ মার্চ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা পরিবহন করে আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। ১৪ এপ্রিল ভোরে মুক্তিপণ পাওয়ার পর জলদস্যুমুক্ত হয় জাহাজটি।

পরে জাহাজটি ২২ এপ্রিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছায়। সেখানে কয়লা খালাসের পর আরেকটি বন্দর থেকে ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর লোড করার পরে জাহাজটি ৩০ এপ্রিল ভোরে আরব আমিরাত ত্যাগ করে।


আরও খবর



কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ১০ চুক্তি স্বাক্ষর

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ |

Image

দ্বৈতকর পরিহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পারিক সহযোগিতার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও কাতার।

মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের করবী হলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির উপস্থিতিতে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়।

চুক্তিগুলো হলোউভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষাসংক্রান্ত চুক্তি, দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকিসংক্রান্ত চুক্তি, আইনগত বিষয়ে সহযোগিতাসংক্রান্ত চুক্তি, সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি এবং দুদেশের ব্যবসা সংগঠনের মধ্যে যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠনসংক্রান্ত চুক্তি।

আর সমঝোতা স্মারকগুলো হলোকূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক, শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক এবং বন্দর ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক।

এর আগে সকাল সোয়া ১০টায় কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে তাকে ফুল দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে কার্যালয়ের শিমুল হলে একান্ত বৈঠক হয় তাদের। দুপুরে চামেলী হলে দুদেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী ও আমির।


আরও খবর



তিন দিনব্যাপী বর্জ্যের প্রদর্শনী করবে ডিএনসিসি

প্রকাশিত:শুক্রবার ১০ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে খালে, ড্রেনে ও যত্রতত্র ফেলে দেওয়া বর্জ্যের তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনীর আয়োজন করতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মুখপাত্র মকবুল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে খালে, ড্রেনে ও যত্রতত্র ফেলে দেওয়া বর্জ্যের তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনীটি ডিএনসিসি নগর ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত হবে। ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম আগামীকাল (শনিবার) সকালে প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

অন্যদিকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আরেকটি অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি, যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। ডেঙ্গু মোকাবিলায় শহরজুড়ে যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এডিস মশার প্রজনন স্থল এবং পরিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ পরিত্যক্ত পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, আইসক্রিমের কাপ, ডাবের খোসা, অব্যবহৃত টায়ার, কমোড ও অন্যান্য পরিত্যক্ত দ্রব্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কিনে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ডিএনসিসি।

প্রতিটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের কার্যালয়ে গিয়ে যে কেউ এসব পরিত্যক্ত দ্রব্য জমা দিয়ে নগদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রতিটি ওয়ার্ডের ক্রয় করা পরিত্যক্ত দ্রব্য প্রতিদিন নিয়মিতভাবে সংগ্রহ করে পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিকটবর্তী এসটিএস (সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন)-এ অপসারণ করবে। জনগণকে সম্পৃক্ত করে প্রতিটি ওয়ার্ডকে পরিচ্ছন্ন করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সংস্থাটি।

কোন পরিত্যক্ত দ্রব্যতে কত টাকা পর্যন্ত দেবে সে বিষয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চিপসের প্যাকেট বা সমজাতীয় প্যাকেটপ্রতি ১০০টির জন্য ১০০ টাকা করে মূল্য দেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। একইভাবে আইসক্রিমের কাপ, ডিসপোজেবলব গ্লাস, কাপ ১০০টির ১০০ টাকা, অব্যবহৃত পলিথিন প্রতি কেজি ৫০ টাকা, প্রতি ডাবের খোসা ২ টাকা, মাটি, প্লাস্টিক, মেলামাইন, সিরামিক ইত্যাদির পাত্র প্রতিটির জন্য ৩ টাকা করে দেবে ডিএনসিসি।

এ ছাড়া পরিত্যক্ত টায়ার প্রতিটি ৫০ টাকা, পরিত্যক্ত কমোড, বেসিন ইত্যাদি প্রতিটির জন্য ১০০ টাকা, পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের দ্রব্য প্রতি কেজি ১০ টাকায় কিনে নেবে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।


আরও খবর



ঢাকা ছাড়লেন ডোনাল্ড লু

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image


ডিজিটাল ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দুই দিনের সফর শেষে ঢাকা ছেড়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ভোর পৌনে ৪টায় তাকে বহনকারী বিমানটি শাহজালাল বিমানবন্দর ত্যাগ করে।এই সফরে তিনি সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের কয়েকটি বৈঠক এবং মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

ডোনাল্ড লু ঢাকা সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের দেওয়া এক নৈশভোজে যোগ দেন। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। ডোনাল্ড লু নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন।


বসুন্ধরা স্পোর্টস কমপ্লেক্স ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ টি টোয়েন্টি জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সঙ্গে ক্রিকেট প্রীতি ম্যাচে অংশ নেন ডোনাল্ড লু।

মঙ্গলবার ঢাকা পৌঁছে তিনি নাগরিক সমাজ, সাংবাদিক ও পরিবেশকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রাতে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বাসভবনে বৈঠক করেন। সেখানেই ছিল নৈশভোজের আয়োজন।

বুধবার তিনি পররাষ্ট্র সচিব, পরিবেশমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও বৈঠক করেন। যৌথ ব্রিফিংয়ে ডোনাল্ড লু বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন চায় যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, গত ১৪ মে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন ডোনাল্ড লু। ঢাকায় আসার আগে তিনি ভারত ও শ্রীলঙ্কা সফর করেন।

চলতি বছর ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর ডোনাল্ড লুর এটাই ছিল প্রথম ঢাকা সফর।


আরও খবর



হজ ভিসায় সৌদির নতুন বিধি-নিষেধ

প্রকাশিত:সোমবার ০৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

হজ ভিসা নিয়ে নতুন নিয়ম আনলো সৌদি আরব। এখন থেকে এই ভিসা দিয়ে শুধু জেদ্দা, মদিনা ও মক্কা শহরে ভ্রমণ করা যাবে। তাছাড়া অনুমতি ছাড়া মক্কায় জনসাধারণের প্রবেশাধিকারেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সৌদি সরকার। সারা পৃথিবী থেকে আসা হজযাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই এসব নিয়ম জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সৌদির জননিরাপত্তা বিভাগ।

সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুধু হজ ভিসা দিয়ে চলতি বছর হজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা জেদ্দা, মদিনা ও মক্কা শহরে ভ্রমণ করতে পারবেন। নির্ধারিত শহরগুলোর বাইরে ভ্রমণের জন্য এই ভিসা বৈধ হবে না। তাছাড়া এখন থেকে মক্কায় প্রবেশের জন্য অবশ্যই অনুমতিপত্র সঙ্গে রাখতে হবে। এমনকি সৌদি নাগরিকদেরও।

হজের সময় মক্কার পবিত্র স্থানগুলোতে কাজ করার অনুমতি পাওয়া ব্যক্তি, মক্কার স্থানীয় অভিবাসী, পবিত্র হজ পালনের অনুমতিপত্র বা তাছরিহ্ ব্যতীত যে কাউকে আপাতত মক্কায় প্রবেশ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। নির্দেশনা অমান্যকারীদের মক্কায় প্রবেশের চেকপয়েন্ট থেকে ফেরত পাঠানোর পাশাপাশি শাস্তিও দেওয়া হতে পারে।

মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, হজ ভিসা শুধু হজ মৌসুমের জন্যই বৈধ। তাছাড়া নতুন নিয়মে এই সময়ের মধ্যে হজ ভিসা নেওয়া ব্যক্তিদের ওমরাহ পালন বা যেকোনো ধরনের আর্থিক বা অবৈতনিক কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আর এসব বিধি-নিষেধ লঙ্ঘনকারীরা ভবিষ্যতে হজে অংশ নেওয়ার অনুমতি না-ও পেতে পারেন। সেই সঙ্গে নিয়ম অমান্যকারীকে সৌদি আরব থেকে বের করেও দেওয়া হতে পারে।

এদিকে, উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) দেশগুলো ছাড়া যেসব আন্তর্জাতিক দর্শনার্থী হজ পালন করতে চান, তাদের ওপর হজ ভিসা নেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে সৌদি সরকার।

এদিকে, নুসুক ও তাওয়াক্কলনা অ্যাপ থেকে ভ্রমণের জন্য ডিজিটাল কার্ড বা অনুমতিপত্র নেওয়ার ব্যবস্থা রেখেছে সৌদির হজ মন্ত্রণালয়। পবিত্র স্থানগুলোতে ঢুকতে হলে ও বিভিন্ন শহর ঘুরে দেখতে হলে হজযাত্রীদের অবশ্যই কার্ডটি দেখাতে হবে।

এই কার্ড কীভাবে পাওয়া যাবে, তা হজযাত্রীদের ভিসা ইস্যু হওয়ার পরে সংশ্লিষ্ট হজ অফিস থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে। তাছাড়া হজ পারমিট ইস্যু হওয়ার পর অভ্যন্তরীণ হজযাত্রীরা সেবা প্রদানকারীদের কাছ থেকে এই কার্ড পাবেন।

প্রক্রিয়াটি আরও সহজ করতে সৌদির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভিসা প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক রেজিস্ট্রেশন চালু করেছে হজ ও ওমরাহবিষয়ক মন্ত্রণালয়। আবেদনকারীদের অবশ্যই ৭ ধু আল হিজ্জাহ বা ১৩ জুলাইয়ের মধ্যে নিবন্ধন করতে হবে। তবে হজযাত্রীদের কোটা পূরণ না হলে, ওই সময়ের পরও নিবন্ধনের সুযোগ মিলতে পারে।


আরও খবর