মোঃ নাঈম হোসাইন,দশমিনা (পটুয়াখালী) :
বাংলাদেশ সরকারের ঘোষণা এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে তারই ধারাবাহিকতায় ও সরকারের সকল ধরনের সহায়তা পেয়ে দশমিনার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রান্তিক কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে আগ্রহ বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় উপজেলায় এবছর সূর্যমুখী চাষের আবাদ হয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।এই ফসল তদারকি করছেন কৃষি কর্মকর্তা। সূর্যমুখী একটি তৈলজাতীয় ফসল। এর বৃদ্ধি ও রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় দশমিনা উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নে এবছর ৪২ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর বীজ, রাসায়নিক সার, আর্থিক প্রণোদনা, প্রযুক্তিগত বিভিন্ন রকম সহায়তা প্রদান করে আসছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
সরকার ভোজ্য তেল সংকট নিরসনে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্রান্টের মাধ্যমে সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের ব্যাপক সহায়তা করছে। এতে করে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছে প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা।কৃষি বিভাগের দেয়া হাইসান ৩৩ ও বারি -৩ জাতের সূর্যমুখীর চাষ হচ্ছে। রবিশস্য আবাদের পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ কৃষকরা আধুনিক পদ্ধতিতে যুক্ত হচ্ছে সূর্যমুখী চাষে।
দশমিনা সদর ইউনিয়নের নলখলা গ্রামের মো.সেরাজুল ইসলাম, বলেন কৃষি অফিস থেকে বীজ, বিভিন্ন রাসায়নিক সার, আর্থিক প্রণোদনা সহ বিভিন্ন সময় আমাদের মাঠে এসে সুপরামর্শ দিয়েছে। আরও বলেন, এবছর ৮০ শতাংশে জমেিত সূর্যমুখী বীজ চাষে চাষাবাদ ও কীটনাশকসহ ১৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে,যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হয় তা হলে বিক্রি করতে পারবো ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
পূবৃ লক্ষীপুর গ্রামের আরেক কৃষক প্রাণতোষ মন্ডল জানান, আমি ৫০ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। নগদ টাকা ও বিনামূল্যে সার বীজ দিয়ে উপজেলা কৃষি অফিস আমাকে সহায়তা করেছে। উৎপাদন খরচ ও রোগবালাই অন্য ফসলের তুলনায় অনেক কম এবং ভালো ফলন দেখে পার্শ্ববর্তী অন্যান্য কৃষকও আগামীতে এটি চাষের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আমি প্রায় ২৫ হাজার টাকার সূর্যমুখী তেল বীজ বিক্রি করতে পারব। এছাড়াও সূর্যমুখীর খৈল গরু, মহিষের উৎকৃষ্ট মানের খাদ্য।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো.জাফর আহমেদ বলেন, এবছর উপজেলায় সরকারি প্রণোদনা ও বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদেরকে নগদ অর্থসহ সার বীজ দিয়ে সূর্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের আগ্রহী করে তুলছি। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তেল আমদানি নির্ভরতা কমানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছি। তাই উপজেলায় গত বছরের তুলনায় এ বছর দ্বিগুণেরও বেশি জমিতে সূর্যমুখীর চাষাবাদ হয়েছে। আগামীতে এর চাষাবাদ আরও বাড়বে।এছাড়াও চাষিরা এই বীজ বিক্রি করতে কোন সমস্যা হবেনা বলে মনে করেন।কোন ভালো কোম্পানি মাঠ পর্যায়ে এসে এই সূর্যমুখী বীজ ক্রয় করে নিয়ে যাবে এতে করে চাষি আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হতে পারবে।