Logo
শিরোনাম

হজ করতে গিয়ে ৩১ বাংলাদেশি হাজীর মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ২১ জুন ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

সৌদি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছর হজ করতে গিয়ে সৌদি আরবে মৃত্যু এক হাজার ছাড়িয়েছে। তীব্র তাপদাহের কারণে ওই হজযাত্রীরা মারা গেছেন। মারা যাওয়া হাজীদের মধ্যে ৩১ জন বাংলাদেশি রয়েছেন।

শুক্রবার (২১ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ সম্পর্কিত নিয়মিত বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা ও সৌদি আরব সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্প ডেস্ক।

বুলেটিনে জানানো হয়, মারা যাওয়া হজযাত্রীদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ৬ জন নারী। মক্কায় ২৪ জন, মদিনায় ৪ এবং মিনায় দুজন এবং জেদ্দায় একজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। একজনের পরিচয় এখনও প্রকাশ করতে পারেনি হেল্প ডেস্ক।

হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পর যারা মারা গেছেন তারা হলেন, ঢাকার মোহাম্মদপুরের জহিরুল ইসলাম (৭৩), মাদারীপুর শিবচরে ইদ্রিস খান (৫৬), ঢাকার বাড্ডার উম্মে কুলসুম (৪৭), ঢাকার বংশালের মনির হোসেন (৫৯), কিশোরগঞ্জের ফাতেমা ইয়াসমিন (৫৩), পিরোজপুরের নার্গিস (৬০), ঢাকা নিউ মার্কেটের আমিনুল ইসলাম (৬৫), নোয়াখালীর মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৮), রংপুরের সিদ্দিকুর রহমান (৪৮), ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে মানিক তোফাজ্জল হক (৭০), ঢাকা মোহাম্মদপুরের রওশন আরা বেগম (৭২), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার রেজাউল করিম মন্ডল (৬১), টাঙ্গাইল সদরের আলমগীর হোসেন খান (৭৩)।

এছাড়া হজের আনুষ্ঠানিকাতা শুরুর আগে গত ১২ জুন সৌদিতে দুজন মারা যান। তারা হলেন-মো. শাহ আলম (৭৭) ও সুফিয়া খাতুন (৬২)। তাদের বাড়ি কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ। চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে গত ১৫ মে মো. আসাদুজ্জামান নামে এক হজযাত্রী মারা যান।

মারা যাওয়া অন্য হজযাত্রীরা হলেন- নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার মো. আসাদুজ্জামান (৫৭), মো. ভোলা জেলা মো. মোস্তফা (৯০), কুড়িগ্রাম জেলার লুৎফর রহমান (৬৫), ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের মুরতাজুর রহমান (৬৩), চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার মোহাম্মদ ইদ্রিস (৬৪), ঢাকা জেলার মোহাম্মদ শাহজাহান (৪৮), কুমিল্লা জেলার আলী ইমাম ভুঁইয়া (৬৫), কক্সবাজার জেলা মহেশখালী উপজেলার মোঃ জামাল উদ্দিন (৬৯), কক্সবাজার জেলা রামু উপজেলার মোহাম্মদ নুরুল আলম (৬১), কক্সবাজার জেলা চকরিয়া উপজেলার মাকসুদ আহমদ (৬১), ফরিদপুর জেলার মমতাজ বেগম (৬৩), ঢাকার রামপুরার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম (৫৭), গাইবান্ধা জেলা গোবিন্দপুর উপজেলার মো. সোলাইমান (৭৩), রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শাহজাদ আলী (৫৫) এবং রংপুরে তারাগঞ্জের গোলাম কুদ্দুস (৫৪)।

সৌদি আরবের আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি হজ করতে গিয়ে যদি মারা যান, তাহলে তার মরদেহ সৌদি আরবে দাফন করা হয়। নিজ দেশে আনতে দেওয়া হয় না। এমনকি পরিবার-পরিজনের কোনো আপত্তি গ্রাহ্য করা হয় না। মক্কায় হজ যাত্রী মারা গেলে মসজিদুল হারামে জানাজা হয়।


আরও খবর

১ হাজারই বহাল থাকছে হজ এজেন্সির কোটা

মঙ্গলবার ০৭ জানুয়ারী ২০২৫




নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কে ট্রাক চাপায় ৩ বন্ধুর মৃত্যু

প্রকাশিত:শুক্রবার ০৩ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের কেশরহাট নামক এলাকায় অজ্ঞাত ট্রাক চাপায় দুটি মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী মোট ৩ জন বন্ধু যুবকের মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়। নিহতরা সবাই নওগাঁর মান্দা উপজেলার বাসিন্দা। গত বুধবার দিনগত রাতে নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের কেশরহাট এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দূর্ঘটনায় স্পটেই ৩ জনের মৃত্যু হয়। সড়ক দূর্ঘটনার খবর পেয়ে মোহনপুর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের টিম দূর্ঘটনাস্থলে পৌছানোর পরও সে সময় প্রথমে নিহতের নাম-পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তাদের নাম পরিচয় সনাক্ত করার পর স্বজনদের কাছে নিহত ৩ বন্ধু যুবকের মৃতদেহ হস্তান্তর করেন পুলিশ। নিহত ৩জন বন্ধু হলেন, নওগাঁর মান্দা উপজেলার বনকুড়া গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে কাউসার আলী (১৯), দক্ষিণ চকবালু গ্রামের সেকেন্দার আলীর ছেলে কাউসার হোসেন (২০) ও আশরাফ আলীর ছেলে সাহাদৎ হোসেন (১৯)। নিহত ৩জন বন্ধু ২০২৩ সালে এইচএসসি পাশ করেন। মান্দা উপজেলার বনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জব্বার জানান, নিহত ৩ জন বন্ধু গত বুধবার সন্ধার পর দুটি মোটরসাইকেল যোগে রাজশাহী থেকে নিজ বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলাতে ফেরার পথে নওগাঁ টু রাজশাহী মহাসড়কের কেশরহাট এলাকায় পৌছালে সে সময় অজ্ঞাত একটি ট্রাক তাদেরকে চাপাদিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ৩ জন বন্ধুর মর্মান্তিক ভাবে মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর পৌছার পর থেকে এলাকার লোকজনের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছাঁয়া। পরে আইনানুগ পক্রিয়া শেষে নিহত ৩ জন বন্ধু যুবকের মৃতদেহ গ্রামে নিয়ে আসাহয় এবং বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় মান্দা উপজেলার দক্ষিণ চকবালু গ্রামে কাউসার হোসেন ও সাহাদৎ হোসেন এর এবং বেলা ১১টায় কাউসার আলীর জানাজা শেষে তাদের পারিবারিক কবর স্থানে দাফন সম্পূর্ন করা হয়। একই সড়ক দূর্ঘটনায় ৩ জন বন্ধু (যুবকের) মৃত্যুতে তাদের পরিবার, স্বজন ও গ্রামবাসী সহ এলাকাজুড়ে লোকজনের মাঝে শোকের ছাঁয়া নেমে এসেছে।


আরও খবর



নওগাঁয় রাতের অন্ধকারে গ্রাফিতির উপর লিখা "জয় বাংলা" মুছে দিলো ছাত্রদল

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর 20২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

ছাত্রজনতার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গত ৫ আগষ্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। সেদিন আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছিল দেশের বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার মানুষ। এ আন্দোলনে গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা পালন করেছিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা। সে সময় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটে। আর এসব হতাহতের ঘটনার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে রং-তুলি দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় নওগাঁ শহরের বিভিন্ন স্থাপনার দেয়ালে ছবি, গ্রাফিতি ও লেখনিতে তুলে ধরে ছাত্রজনতা। রাতের আধারে সেই গ্রাফিতির উপর কে বা কাহারা "জয় বাংলা" লিখেন। গ্রাফিতির উপর "জয় বাংলা" লেখা মুছে দিলো ছাত্রদলসহ বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। সম্প্রতি ‘জয় বাংলা’কে বাংলাদেশের জাতীয় স্লোগান হিসেবে ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। হঠাৎ করে গত দু'দিন থেকে নওগাঁ শহরের কেডির মোড় ও মুক্তির মোড়সহ বিভিন্ন মোড়ের দেয়ালে যেখানে ছাত্রদের গ্রাফিতি অঙ্কন করা ছিল সেখানে ‘জয় বাংলা’ লেখা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে কে বা কারা এই স্লোগানটি লেখেন। এরপর সে গুলো ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে শুরু হয় নানা জল্পনা-কল্পনা। গত সোমবার দুপুরে সেই ‘জয় বাংলা’ লিখা গুলো স্প্রে পেইন্ট ব্যবহার করে মুছে দেন নওগাঁ জেলা যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও জিয়া সাইবার ফোর্স। এসময় নওগাঁ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ রুহুল আমিন মুক্তার, জিয়া সাইবার ফোর্স নওগাঁ জেলা শাখার আহবায়ক মোঃ এমরান হোসেন, সদস্য সচিব সামিউল ইসলাম পারভেজ, শ্রমিক দল নওগাঁ সদর থানার সভাপতি আরিফুল হক রানাসহ যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জিয়া সাইবার ফোর্স এর নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। নওগাঁ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মোঃ রুহুল আমিন মুক্তার বলেন, ছাত্রজতার গ্রাফিতির উপর রাতের অন্ধকারে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগরা "জয় বাংলা" লিখেছে। এই "জয় বাংলা" যারা কায়েম করার চেষ্টা করছে তাদেরকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগরা আর কখনোই বাংলার মাটিতে দাঁড়াতে পারবে না। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫টি বছর দেশকে গুজবে পরিণত করেছে। উন্নয়নের নামে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। গত ৫ আগষ্টে স্বৈরাচার সরকার পতনের পর ছাত্রলীগের কাঁধে ভর করে নতুন নতুন ষড়যন্ত্র তৈরি করার চেষ্টা করছে। বাংলার মাটিতে তা কখনো বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।


আরও খবর



নিষিদ্ধ না হলে আ’লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা নেই

প্রকাশিত:সোমবার ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

সরকার বা আদালত যদি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করে তাহলে দলটির নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ‘ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন’ উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, এখন নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। ডানে বামের বা বহির্বিশ্বের কোনো চাপ নেই। এখন আমরা বিবেকের চাপে আছি। এ দেশে ভালো নির্বাচন করাও সম্ভব, খারাপ নির্বাচন করাও সম্ভব।

বিগত নির্বাচন কমিশনকে শাস্তির আওতায় আনার চিন্তাভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা নির্বাচন সংস্কার কমিশনের বিষয়। আমরা ওনাদের সুপারিশনামা এখনও পাইনি। তবে আমাদের কমিশনের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো চিন্তা করা হচ্ছে না। সিদ্ধান্তও নেই।

সিইসি বলেন, আমরা ভোটারদের আস্থাহীনতা দূর করব। এ জন্য বাড়ি বাড়ি যাব। ৬ মাসের মধ্যে এই কাজ শেষ করব। ভোটার তালিকা থেকে যারা বাদ পড়ে গেছে তাদের অন্তর্ভুক্ত করব।

তিনি বলেন, আপনাদের বলতে চাই এবারের নির্বাচন আগের মতো হবে না। এ জন্য আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা লাগবে।

গণ-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া দল আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না সেটি নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানা আলোচনা চলছে। বাংলাদেশে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্ররা বিভিন্ন সংস্কার করে অনুষ্ঠিতব্য আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে সুযোগ না দেওয়ার কথা বলছে। ছাত্র নেতাদের দাবি, জুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত পতিত আওয়ামী লীগকে নির্বাচন করার সুযোগ যেন না দেওয়া হয়।


আরও খবর



সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা সাময়িক

প্রকাশিত:শনিবার ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তটি সাময়িক। তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলাপ করে দ্রুতই এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) মন্ত্রণালয়টির জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসানের পাঠানো এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

ওই বার্তায় বলা হয়, সুপ্রিয় সাংবাদিক ভাইবোন, আসসালামু আলাইকুম। শুভ সকাল। সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত চলমান থাকার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকারের বিষয়ে উপরিউক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্তটি সাময়িক। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সভা করে দ্রুত এ বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।


আরও খবর



ভারতীয় গণমাধ্যমের কড়া সমালোচনা

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:বুধবার ২২ জানুয়ারী ২০২৫ |

Image

সম্প্রতি বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে ওপারে ভারতের সুখদেবপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে উত্তেজনা দেখা দেয়। গত ৬ জানুয়ারির পর কুঁড়িগ্রাম ও নওগাঁ সীমান্তের ওপারেও কাঁটাতারে বেড়া তৈরির চেষ্টা করে বিএসএফ। মোট পাঁচটি পয়েন্টে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের অভিযোগ করে বার্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) । তবে বাংলাদেশের প্রতিবাদের মুখে শনিবার (১১ জানুয়ারি) বেড়া নির্মাণ বন্ধ করে দেয় বিএসএফ।

উত্তেজনার সময় বাংলাদেশের সীমন্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি বাংলাদেশে সীমান্তে টহল বাড়িয়ে দেয়। বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে সীমান্ত এলাকার সাধারণ মানুষও পাহারায় অংশ নেয়। মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এখন কোনো উত্তেজনা নেই এবং পরিস্থিতি মোটামুটি স্বাভাবিক অবস্থায় আছে।

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ফটোকার্ড প্রচার করে দাবি করা হয়েছে, “সীমান্তে সংঘর্ষ: বাংলাদেশি আহত ১: ভারতের নিহত ১৮ জন”। উক্ত ফটোকার্ড প্রচার করা কিছু পোস্টের ক্যাপশনে দাবিকৃত নিহত ১৮ জন সদস্যকে বিএসএফ সদস্য বলে দাবি করা হয়েছে।

তবে রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধান থেকে জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করলেও কোনো সংঘর্ষে ১৮ জন বিএসএফ সদস্য নিহত হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। প্রকৃতপক্ষে কোনোরকম নির্ভরযোগ্য তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আলোচিত দাবিটি প্রচার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ফটোকার্ড পর্যবেক্ষণ করলে প্রচারিত ফটোকার্ডে কোনো গণমাধ্যমের লোগো বা নামের উল্লেখ পাওয়া যায়নি। সাধারণত কোনো গণমাধ্যম কোনো ফটোকার্ড প্রকাশ করে থাকলে, প্রচারিত ফটোকার্ডে গণমাধ্যমটির নাম বা লোগোর সংযুক্তি থাকে৷ তবে, প্রচারিত উক্ত ফটোকার্ডটিতে এমন কোনো গণমাধ্যমের নাম বা লোগোর উল্লেখ পাওয়া যায়নি, যা থেকে বুঝা যায় যে আলোচিত ফটোকার্ডটি গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়নি।

তবে, কিছু পোস্টের মন্তব্য সেকশনে দৈনিক নগর বার্তা নামের একটি ওয়েবসাইটে গত ১১ জানুয়ারিতে প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়। উক্ত প্রতিবেদনটি পর্যবেক্ষণ করলে কথিত সংবাদটির ফিচারে আলোচিত দাবির ফটোকার্ডটির সংযুক্তি পাওয়া যায় যেখানে লেখা রয়েছে ‘বিস্তারিত কমেন্টে’।

কথিত এই সংবাদ প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ‌গত কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সংঘটিত এক সশস্ত্র সংঘর্ষে চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সীমান্তের বাংলাদেশ অংশে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে বিএসএফ সদস্যদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বাংলাদেশি এক বিজিবি সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন, এবং ভারতের ১৮ জন বিএসএফ সদস্য নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

সংঘর্ষের সূত্রপাত: সূত্র জানায়, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে কিছুক্ষণ অবস্থান করছিল। বিজিবি এ বিষয়ে আপত্তি জানালে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। বাংলাদেশি পক্ষের বক্তব্য বিজিবি’র এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, বিএসএফের পক্ষ থেকে প্রথমে গুলি চালানো হয়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি পাল্টা গুলি চালাতে বাধ্য হয়। এতে ভারতের পক্ষ থেকে বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়। ভারতের আজাইরা প্রতিক্রিয়া: ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে দাবি করা হয়েছে, তাদের বাহিনীর সদস্যরা নিরস্ত্র অবস্থায় সীমান্তে টহল দিচ্ছিল। তাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। তবে এ অভিযোগ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করেছে।

পরবর্তী অনুসন্ধানে এ বিষয়ে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চ করলে আলোচিত দাবিটির সপক্ষে কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।

তবে, সাম্প্রতিক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও লালমনিরহাটে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে দুইজন বাংলাদেশি আহত হওয়ার বিষয়ে জানা গেছে। এর সঙ্গে সীমান্তে কোনো সংঘর্ষের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। গত ১১ জানুয়ারিতে দেশের একটি প্রথম সারির সংবাদ পত্রে প্রকাশিত একটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ গুরুতর আহত হয়েছেন।

গত ১০ জানুয়ারি রাতে উপজেলার আজমতপুর সীমান্ত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত তরুণের নাম মো. শহিদুল ইসলাম (২২)। ৫৯ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, শিবগঞ্জের আজমতপুর সীমান্তের ওপার থেকে ফেনসিডিল নিয়ে আসার পথে ভারতের ভেতরে বিএসএফের গুলিতে শহিদুল ইসলাম আহত হন। পরে আহত অবস্থায় তিনি বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন।

এছাড়া, গত ১৩ জানুয়ারি আরেকটি সংবাদ পত্রে প্রকাশিত আরেকটি সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লালমনিরহাটের পাটগ্রামে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে শহিদুল ইসলাম (৪২) নামে এক বাংলাদেশি আহত হয়েছেন। গত শনিবার (১১ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিজিবি ও স্থানীয়রা জানায়, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের মেইন পিলার ৮৫৯ নম্বরের ৪ নম্বর সাব পিলারের কাছে কাশিরডাঙ্গা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে গরু আনছিলেন ৫-৬ জনের চোরাকারবারি দল। এ সময় সীমান্তে টহলরত ভারতের ১৬৯ রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের বুড়াবুড়ি ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্যরা পাঁচ রাউন্ড গুলি ছোঁড়ে। এতে শহিদুলের পায়ে গুলি লাগে। তার সঙ্গীরা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন এবং রংপুরে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য।

তবে, উক্ত কোনো ঘটনাতেই বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সংঘর্ষ বা ১৮ জন বিএসএফের নিহতের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি।

সুতরাং, সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সংঘর্ষে ১৮ জন ভারতীয় বা বিএসএফ সদস্য নিহত হয়েছেন শীর্ষক দাবিটি মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।


আরও খবর