শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
নওগাঁর রাণীনগর ''লিজকৃত সরকারি ভিপি জমিতে নির্মাণ করা দোকান ঘরসহ সরকারি জায়গা'' লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে বেচা-কেনা করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
রানীনগর উপজেলার চক-কুজাইল মৌজায় কুজাইল বাজারে আতাউর রহমান নামে এক ব্যক্তি সরকারের কাছ থেকে লিজ গ্রহণ করে ভিপি ২ শতক জায়গার ওপর নির্মিত একটিমাত্র ইটের বড় দোকান ঘরসহ জায়গা প্রায় ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে কুজাইল গ্রামের হরিদাস চন্দ্রের কাছে বিক্রি করেছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, আইন লঙ্ঘন করে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সরকারি ভিপি জায়গা ও দোকান ঘর কিনলেও স্থানীয় ভূমি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজসে সেই ক্রেতাকেই উল্টো সরকারিভাবে লিজ দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে এর প্রতিকার চেয়ে জায়গার প্রকৃত দখলদার দাবিদার দুর্গাপুর গ্রামের আপন মিনা নামে এক ব্যক্তি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও লিজ বাতিলের দাবি জানিয়ে বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, রানীনগর উপজেলার কুজাইল বাজারে দুই শতক ভিপি সম্পত্তিটি এক সময় দুর্গাপুর গ্রামের আপন মিনার বাবা আমির হোসেন মিনার নামে ছিল। পরিবারের সবাই একত্রে থাকা অবস্থায় আতাউর রহমান মাখন সেই দুই শতক জমিতে ব্যবসা করার জন্য একটি ওষুধের দোকান দেয়। পরবর্তীতে আতাউর রহমান কৌশলে তার নামে লিজ নেয়। নিময় অনুযায়ী সরকারি সম্পত্তি হস্তান্তর এবং ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ। কিন্তু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে সেই দুই শতক ভিপি সম্পত্তি ও জায়গায় নির্মিত দোকান ঘর ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে কুজাইল গ্রামের হরিদাস চন্দ্রের কাছে বিক্রি করেন মাখন। এরপর হরিদাস অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করা সরকারি সেই ভিপি সম্পত্তিটি তার নামে লিজ নেয়ার চেষ্ট চালায়। এক পর্যায়ে সরকারি ওই ভিপি সম্পত্তি হরিদাসের নামে লিজ দেয় ভূমি অফিস।
অভিযোগকারী আপন মিনা জানান, আমার বাবার নামে এক সময় ওই দুই শতক জায়গা ছিল। বাবা সেখানে দোকান চালু করেন। পরে বড় চাচার ছেলে আতাউর রহমান মাখন সেখানে ওষুধের দোকান দেয়। এরপর গোপনে সে ওই জায়গাটি তার নামে লিজ করে নেয়। এরমধ্যে চলতি বছরের জানুযারিতে হটাৎ করে জায়গাসহ দোকান ঘরটি ২৫ লাখ টাকা নিয়ে হরিদাসের কাছে বিক্রি করেন। বিষয়টি জানতে পেরে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিই। এরপর তৎকালীন ইউএনও সরেজমিন তদন্ত করলেও রহস্যজনক কারনে কোন আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি ক্রেতাকেই ওই সম্পত্তি লিজ দেয়া হয়েছে। তাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও লিজ বাতিলের জন্য বুধবার ইউএনও বরাবর অভিযোগ দিয়েছি।
আনিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্রেতা আতাউর রহমান মাখন বলেন, জায়গা একজনের কাছে হস্তান্তর করেছি। টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেনি বলেও দাবি করেন তিনি।
সরকারি সম্পত্তি ক্রেতা হরিদাস চন্দ্র বলেন, আমাদের পাশের দোকান হওয়ায় এবং মাখনের সাথে ভালো সম্পর্কের মধ্যে কিছু টাকা দিয়ে জায়গা ও দোকান ঘর নিয়েছি। ওই জায়গা তার নামে লিজ এবং ডিসিআর দেয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।