Logo
শিরোনাম

তীব্র গরমে নাকাল দার্জিলিংয়ের পর্যটকরা

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০১ জুন ২০২৩ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

গরমের ছুটিতে বহু পর্যটকের গন্তব্য হয় দার্জিলিং, না হয় সিকিম। কিন্তু এবার গরম থেকে রেহাই পেল না পাহাড়ও। মে মাসে এত গরম কখনো দেখেনি শৈলশহর দার্জিলিং। তাপমাত্রার সব রেকর্ড এবার ভাঙল।

ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, পর পর দুদিন দার্জিলিংয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রির বেশি। মঙ্গলবার ২৫.৪ ও বুধবার ২৫.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৬ ডিগ্রি বেশি। মঙ্গলবার কালিম্পংয়ের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।

রেকর্ড ভেঙেছে পড়শি শৈলশহর গ্যাংটকেও। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছয় ২৫.৯ ডিগ্রিতে, বুধবার পারদ উঠে যায় ২৬.১ ডিগ্রিতে। দার্জিলিংয়ের মতো সর্বকালীন রেকর্ড না ভাঙলেও, বুধবার ২৩ বছরের উষ্ণতম দিন কাটিয়েছে সিকিমের রাজধানী। সর্বশেষ ২০০০ সালের ১৪ মে তাপমাত্রা পৌঁছেছিল ২৬.১ ডিগ্রিতে। তারপর এবার।

ভারতীয় আবহাওয়া ভবনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান, অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, বৃষ্টি হচ্ছে না। আকাশ একেবারে পরিষ্কার। চড়া রোদের ফল এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি।

রোদের প্রভাব পড়েছে বাকি অঞ্চলেও। পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, উত্তর-দক্ষিণ দিনাজপুর তো বটেই, শিলিগুড়িতেও চল্লিশের উপর তাপমাত্রা। তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি জলপাইগুড়ি, কোচবিহারেও।

ভারতের আবহাওয়া দফতরের ইঙ্গিত, জুনের ৬-৭ তারিখের দিকে গরম আরও বাড়তে পারে।


আরও খবর



উৎসবের রঙে রঙিন রাজধানীর সড়ক

প্রকাশিত:রবিবার ১৪ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

চৈত্র সংক্রান্তির রাতে আলপনা উৎসবে মাতলো রাজধানীবাসী। একসঙ্গে দুই শতাধিক শিল্পী আর কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে রঙিন হয়েছে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের পিচঢালা পথ। আনন্দ ভাগাভাগি করে অংশগ্রহণকারীদের শপথ, সাম্প্রদায়িকতার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

ষড়ঋতুর ছয়টি রঙয়ে রঙিন পিচঢালা রাজপথ। বুকজুড়ে আলপনা, তাতে জ্বলজ্বলে প্রিয় বাংলা ভাষার অমূল্য অক্ষর। চাঁদের আলোয় বিশাল আকাশের নিচে একমনে শিশুদের হাতে হাতখড়ি বাংলা নতুন বছর বরণের আলপনা।

তুলির নকশায় শুধু সৌন্দর্যই ফুটে ওঠেনি, এতে মিশেছে বাঙালির হাজার বছরের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি আর প্রাণের উচ্ছ্বাস।

শুধু কি শিল্পীর হাতে তুলি? ১৪৩১ কে বরণ করতে নিয়ন আলোতে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নামে হাজারো মানুষের ঢল। নিজ হাতে রঙ-তুলি টেনে নিয়ে ভালোবাসা আর আনন্দ ভাগাভাগিতে শামিল হন নগরবাসী। অবাক হয়ে তারাই জানালেন শেষ যে কবে এমন উৎসবে শামিল হয়েছেন তা ঠাহর করা মুশকিল। বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাসে মাতে শিশু, তরুণ-তরুণীরা।

আলপনা উৎসবের এই মাহেন্দ্রক্ষণে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চিরচেনা সংস্কৃতি বজায় রাখার ডাক দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী।

আলপনার পাশাপাশি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলা গানের সুর আর নাচের তালে শামিল হন নগরবাসী।


আরও খবর



থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ সমঝোতা ও চুক্তি সই

প্রকাশিত:শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ০৮ মে ২০২৪ |

Image

থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে পাঁচটি কূটনৈতিক দলিলে স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট বা অভিপ্রায়পত্র রয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এসব দলিলে স্বাক্ষর করেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে থাই প্রধানমন্ত্রী জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।

দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করার জন্য থাইল্যান্ডকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরই দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সমুদ্রবন্দর কেন্দ্রিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে দুসিত প্রাসাদের অ্যামফোর্ন সাথার্ন থ্রোন হলে রাজা ও রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। সাক্ষাৎকালে তারা কুশল বিনিময় এবং দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

এদিন সকালে জাতিসংঘের এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার আগ্রহপত্রসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড।

বাংলাদেশ এবং থাইল্যান্ড সরকারি পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতিসংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারে। পাশাপাশি শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ), সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্কসংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে পারে দুই দেশ।


আরও খবর



স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ঢাকার বাতাস

প্রকাশিত:শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪ |

Image

জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। রাজধানী ঢাকাও দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণের কবলে। মাঝে মাঝে বৃষ্টি হলে শহরটির বাতাসের মানে কিছুটা উন্নতি হয়। কিন্তু কয়েক দিনের তীব্র গরম আর শুষ্ক আবহাওয়ায় ঢাকার বাতাস স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, ১৫৭ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে মেগাসিটি ঢাকা, যা অস্বাস্থ্যকর হিসেবে বিবেচিত।

তবে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় ২২৫ স্কোর নিয়ে শীর্ষে রয়েছে ভারতের দিল্লি শহর। এ ছাড়া দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু শহরের স্কোর ১৭৬, তৃতীয় অবস্থানে থাকা মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন শহরের স্কোর ১৬৩ আর ১৫৭ স্কোর নিয়ে পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর শহর।

একিউআই স্কোর শূন্য থেকে ৫০ ভালো হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি হিসেবে গণ্য করা হয়; আর সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বিবেচিত হয় ১০১ থেকে ১৫০ স্কোর। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে তাকে অস্বাস্থ্যকর বায়ু বলে মনে করা হয়।

২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই স্কোরকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ এবং অসুস্থ রোগীদের বাড়ির ভেতরে এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে। এছাড়া ৩০১ থেকে ৪০০-এর মধ্যে থাকা একিউআই ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়, যা নগরের বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

সাধারণত একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি ধরনকে ভিত্তি করে; যেমন: বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

বায়ুদূষণ গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে থাকে। এটা সব বয়সি মানুষের জন্য ক্ষতিকর। তবে শিশু, অসুস্থ ব্যক্তি, প্রবীণ ও অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য বায়ুদূষণ খুবই ক্ষতিকর।


আরও খবর



বেড়েছে ঋণ পরিশোধের চাপ

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

উন্নয়ন সহযোগীদের দেয়া ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। গত মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরের ৯ মাসে শুধু ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদই ব্যয় বেড়েছে ১১৭ শতাংশ। সরকারের দেয়া উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি ঠিক রাখতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে ঋণ নেয়ার প্রবণতাও। অর্থনীতিবিদদের মতে, ঋণ ব্যয়ে দূরদর্শিতা দেখাতে না পারলে সুদের জালে আটকে যাবে দেশের উন্নয়ন।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ খরচ ছাড়িয়েছে ১০০ কোটি ডলার। গত রোববার (২১ এপ্রিল) দেশের বৈদেশিক ঋণের হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ-এ ৯ মাসে বাংলাদেশকে কেবল সুদ বাবদ উন্নয়ন সহযোগীদের পরিশোধ করতে হয়েছে ১০৫ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। গত অর্থবছর এ সুদ বাবদ গুনতে হয়েছে ৪৮ কোটি ৫৯ লাখ ডলার।

স্বাভাবিকভাবেই বছর ব্যবধানে বেড়ে গেছে সুদাসলে ঋণ শোধ বাবদ ব্যয়। ইআরডির তথ্য, গত নমাসে সব মিলিয়ে ২৫৭ কোটি ১৫ লাখ ডলার সুদ ও আসল গুনতে হয়েছে। আগের বছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ১৭৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদাসল পরিশোধ বাবদ খরচ আগের বছরের ‍তুলনায় বেড়েছে ৮৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে বিভিন্ন ঋণের আসল পরিশোধ করা হয়েছে ১৫১ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

তবে এ সময়ে ঋণ প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতিও অনেক বেশি পেয়েছে বাংলাদেশ। ৭২৪ কোটি ২১ লাখ ডলার ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নয়ন সহযোগীরা। গত বছরের তুলনায় যা ১৩৫ শতাংশের বেশি। গত অর্থবছরের একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩০৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলার।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃপ্তির ঢেকুর না তুলে, তা যেন ব্যয় করা হয় লাভজনক প্রকল্পে। সেই সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে অর্থব্যয়ে স্বচ্ছতা।

অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবীর বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সহজ শর্তে ঋণ পাওয়া যাবে না। তাই যতটুকু ঋণ পাওয়া যাবে তার সঠিক ব্যবহার করতে হবে। অপচয় রোধ করতে হবে। না হলে সুদের জালে আটকে যেতে পারে বাংলাদেশের উন্নয়ন।

যে সব প্রকল্প দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সহায়তা করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে, এমন প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ নেয়ার তাগিদ দেন অর্থনীতিবিদরা।


আরও খবর



গরমে বাড়ছে নিউমোনিয়ার প্রকোপ

প্রকাশিত:বুধবার ২৪ এপ্রিল 20২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪ |

Image

তীব্র তাপপ্রবাহে বেশি অসুস্থ হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। রাজধানী ঢাকার শিশু হাসপাতালে বেড়েছে রোগীর চাপ। আউটডোরে গত কয়েকদিনে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে গড়ে তিন থেকে চারশ। জ্বর-সর্দি ও ডায়রিয়া নিয়ে বেশি শিশু আসছে হাসপাতালটিতে। তবে ভর্তি হচ্ছে বেশি নিউমোনিয়া নিয়ে। নিউমোনিয়ার প্রকোপ সাধারণত শীতে বাড়লেও এবার গরমের কারণেও বাড়ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।


হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্যমতে, গরমের তীব্রতা বাড়ার আগে দৈনিক ৭শ থেকে ৮শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসতো। তবে এই মুহূর্তে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যাজমা, সাধারণ ঠান্ডা সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১১শ থেকে ১৩শ রোগী আউটডোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। এই মুহূর্তে হাসপাতালটিতে নিউমোনিয়া নিয়ে ভর্তি ৮৭ জন।

সম্প্রতি বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের প্রধান গেটে ঢুকতেই হাতের বাম দিকে থাকা ভবনে টিকিটের জন্য অপেক্ষমাণ স্বজনরা। ভবনের টিকিট কাউন্টারের সামনে প্রচুর ভিড়। এখান থেকে অভিভাবকরা তাদের সন্তানের জন্য টিকিট কেটে জরুরি বিভাগ কিংবা আউটডোরে দেখাতে অপেক্ষা করছেন। অনেকে আবার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য টাকা পরিশোধ করে টেস্টের জন্য বসে আছেন। হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, সবগুলো ওয়ার্ডই রোগীতে পূর্ণ।

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের দুই নম্বর ওয়ার্ডের ১৬ নম্বর সিটে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে ৯ মাস বয়সী তাহমিদা আক্তার। তার দেখভাল করছেন মা। পাশে দাঁড়িয়ে আছেন চাচা জাকির হোসেন। তিনি বলেন, আমরা ভোলা থেকে এসেছি। একমাস ধরে নিউমোনিয়ায় ভুগছে তাহমিদা। প্রথমে অসুস্থ হলে তাকে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কিছুদিন পর সুস্থতা অনুভব করলে বাসায় চলে আসে। এর কিছুদিন পর আবারও সমস্যা দেখা দেয়। এরপর শিশু হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখানে ছয়দিনের মতো ভর্তি আছে।

ঠান্ডা-জ্বর নিয়ে হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ১৫ নম্বর সিটে চিকিৎসা নিচ্ছে দুই বছর চার মাস বয়সী হুমাইরা। ঢাকায় মহাখালী ডিওএইচএস এলাকার বাসিন্দা তারা। পাশে বসা মা সাবিনা আক্তার। তিনি বলেন, মেয়ের হঠাৎ করে জ্বর-সর্দি কাশি শুরু হয়। এরপর পাতলা পায়খানা হলে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে অনেক শিশু। এদের মধ্যে পাঁচ ধরনের সমস্যা নিয়ে বেশি আসছে রোগীরা। যেমন সর্দি-জ্বর, শরীরে র্যাশ ওঠা, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও অ্যাজমা। এসব রোগীর মধ্যে নিউমোনিয়ায় আক্রান্তরা বেশি ভর্তি হচ্ছে। শয্যা সংকটের কারণে বেশির ভাগ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অন্য সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে।

শিশু হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফারহানা আহমেদ বলেন, তীব্র গরমে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন শিশু ও বৃদ্ধরা। এসময়ে শিশুদের জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, টাইফয়েড, ডায়রিয়া, গরমে হওয়া বিভিন্ন চর্মরোগ, নিউমোনিয়া আমরা বেশি পাচ্ছি। গত কিছুদিনের দাবদাহে সমস্যাটা আরও বেশি বেড়েছে।

গরমে শিশুদের প্রচুর ঘাম হয়। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় দ্রুত। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও থাকে কম। যে কোনো কিছু মুখে দেয়, সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে খায় না, বাইরের বিভিন্ন খাবারে তাদের আগ্রহ বেশি থাকে। এসব কারণে বাচ্চারা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। এছাড়া ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি তো হচ্ছেই।

তিনি বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নীতি মানতে হবে। যেমন ফুটানো পানি পান করা, একদম ঠান্ডা পানি না পান করে হালকা ঠান্ডা পানি মিশিয়ে খাওয়া, বাইরে যাওয়ার সময় পানির বোতল নিয়ে যাওয়া এবং বাইরের খাবার না খাওয়ানো। বাইরে থেকে এসে ঘাম মুছে দেওয়া। প্রতিদিন নরমাল পানি দিয়ে গোসল করানো। এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির পাশাপাশি বাচ্চাদের মৌসুমি ফলের রস খাওয়ানো উচিত।

শিশু হাসপাতালে রোগীর চাপ সামাল দিতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গরম এলে আমাদের হাসপাতালে রোগীর চাপ বেড়ে যায়। ভর্তিও হচ্ছে অনেক বেশি রোগী। এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে আমরা রোগীদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করি।

নিউমোনিয়া রোগীদের ক্ষেত্রে আমরা ৭-৮ দিন চিকিৎসা দেই। বর্তমানে পাঁচদিনের মধ্যে তাদের অবস্থা উন্নতির দিকে গেলে ছুটি দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। এতে পরিবারের জন্যও ভালো এবং অন্য নতুন রোগীও ভর্তি হতে পারে। বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় গড়ে শতাধিক রোগী আমাদের ভর্তি করানোর প্রয়োজন হচ্ছে। তাদের জন্য আসন খালি করতে অন্য একশজনকে ছাড়তে হয়। আমাদের একটা ওয়ার্ডের কাজ চলছিল। সেখানে ২৬টি সিট আছে। সেগুলো আজ থেকে চালু হলে আরও ২৬ জন রোগী ভর্তি হতে পারবে।

তিনি বলেন, আমরা ইমার্জেন্সি অবস্থার জন্য একটা ইমার্জেন্সি ফাইটার্স নামে দল গঠন করেছি। তারা জরুরি অবস্থায় চিকিৎসা দেবে। এছাড়া রিজার্ভ চিকিৎসকও রাখা হয়েছে। এক মাসের শিশুদের ক্ষেত্রে যেন কোনো লাইন না থাকে সে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। এই গরমে তাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।

পরিচালক বলেন, ১৯ জনের মতো নিউমোনিয়া রোগী গত ২৪ ঘণ্টায় (২২ এপ্রিল) ভর্তি হয়েছে। এখন ৮৭ জন নিউমোনিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি। আমরা এবছর বেশি নিউমোনিয়া রোগীর চিকিৎসা করছি। জানুয়ারি মাসে ৫১৪ জনের মতো, ফেব্রুয়ারিতে ৫৫৫, মার্চে ৫৩৩ আর চলতি মাসে এখন পর্যন্ত তিনশজনের মতো নিউমোনিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এটি পাঁচশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সে তুলনায় আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি কম। এ মাসে মাত্র পাঁচজন ডায়রিয়া নিয়ে ভর্তি হয়েছে। এই মুহূর্তে ডায়রিয়া রোগী তেমন ভর্তি হচ্ছে না। যারা আসছেন তাদের আউটডোরে চিকিৎসা দিচ্ছি। গতকাল ৫৩ জন রোগী আউটডোরে ডায়রিয়া সমস্যা নিয়ে এসেছিল। তাদের মধ্যে থেকে মাত্র একজনকে ভর্তি করা হয়েছে।

নিউমোনিয়া সাধারণত ঠান্ডাজনিত সমস্যা। এখন গরমের সময়ে নিউমোনিয়ার সমস্যা বেশি দেখা দিচ্ছে কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২০২২ সালের পর থেকে নিউমোনিয়া রোগী আমাদের এখানে বাড়ছে। তবে এটা পুরো বাংলাদেশের চিত্র নাও হতে পারে। এত বেশি নিউমোনিয়া রোগী আসার পেছনে একটি বড় কারণ হতে পারে আমাদের হাসপাতালে নিউমোনিয়ার জন্য একটি তলা ডেডিকেটেড করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে ৩৩টি বিছানা আছে। এর মধ্যে ১৬টি সাধারণ বিছানা, বাকিগুলো রেসপিরিটরি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র। আর তিনটি কেবিন আছে।

তিনি বলেন, সাধারণত ঠান্ডায় নিউমোনিয়া হলেও গরমেও নিউমোনিয়া বাড়ছে। ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যায় যেসব শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের নিউমোনিয়া হয়ে যায়। এছাড়া গরমে শিশুরা ঘামে। আর বাবা-মা যদি সেটায় নজর না দেয় ঘাম শরীরে শুকিয়ে যাবে। এতে শরীরের ভেতর ঠান্ডা হয়ে আসে। তখন রক্ত চলাচল কম হয়। এসময় ভাইরাস-ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে শিশুদের নিউমোনিয়া হতে পারে।

পরিচালক আরও বলেন, গরমে অনেক শিশুর আইসক্রিম, বরফের মতো ঠান্ডা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এতে গলা ঠান্ডা হয়ে যায়, পরে সেখানে ব্যাকটেরিয়া বা আভাইরাস আক্রমণ করে। সেখান থেকে ফুসফুসে যায়। এতেও নিউমোনিয়া হতে পারে শিশুদের।

 


আরও খবর