রিফাত আহমেদ রাসেল, নিজস্ব প্রতিবেদক :
নির্বাচনে জয় লাভের পর মাত্র এক বছরের মাথায় শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে বাবার। মৃত্যুর দেড় মাসে যেতে না যেতেই পদ শূন্য দেখিয়ে তফসিল ঘোষণাও করেছে নির্বাচন কমিশন। ইতিমধ্যে মধ্যে মনোনয়ন দাখিল যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের সময়সীমাও শেষ হয়েছে। তাই বাবার শেষ স্বপ্ন পূরণে বাবার প্রতীক নেই নির্বাচনে নেমেছেন ছেলে।
নেত্রকোণার দুর্গাপুরের বাকজোড়া ইউনিয়ন পরিষদ উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ তালুকদার। বাবা ইয়াকুব আলী তালুকদার ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে বাকলজোড়া ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটরসাইকেল প্রতীকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়। গত ১০ জানুয়ারি শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে মৃত্যু হয় তার।
এই আসলেই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৬ মার্চ। মঙ্গলবার এ আসনে প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ হয়ে। উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ তালুকদার পেয়েছেন বাবার প্রতীক মোটরসাইকেল। প্রতীক পেয়ে আবেগে আপ্লুত হন প্রার্থীসহ কর্মী সমর্থকরাও। বাবার প্রতীককে শ্রদ্ধার সাথে মেনে নিয়ে আজ থেকে নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন ইউসুফ তালুকদার।
গত মঙ্গলবার দুপুরে (২৮ ফেব্রæয়ারী) উপজেলা নির্বাচন অফিসার তপন চন্দ্র শীল তিন জন প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক তুলে দেন।
এছাড়াও বাকি দুজন প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সফিকুল ইসলাম (নৌকা) ও মো. সিরাজুল ইসলাম স্বতন্ত্র (আনারস) প্রতীক পেয়েছেন। প্রতীক পেয়ে প্রার্থী ও কর্ম সমর্থকরা উল্লাসে মেতে উঠেন। কয়েক শতাধিক মোটরসাইকেলে শুভযাত্রা নিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকায় যান প্রার্থীরা।
এর আগে গত (১৯ ফেব্রæয়ারী) উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়ন জমা দেন তিন প্রার্থী। যাচাই বাচাই শেষ ও প্রার্তীরা প্রত্যাহারের সময় শেষ হলেও কেউ প্রত্যাহার করেনি। আগামী ১৬ মার্চ এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবারই প্রথম ইউনিয়নে ২২ হাজার ১শ ৬৭ জন ভোটার ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিবেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী ইউসুফ তালুকদার জানান, আমার বাবা এই আসনে দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এলাকার মানুষের সুখে দুখে তাদের পাশে থেকেছেন। এই অঞ্চলের রাস্তাঘাট যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও তিনি ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছেন। ২০২১ সালের তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ভাগ্যের নির্মাণ পরিহাস মাত্র এক বছরের মাথায় তিনি আমাদের সবাইকে ছেড়ে পরকালে চলে গেছেন। আমরা তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
তিনি আরো বলেন, এই ইউনিয়নবাসীর জন্য আমার বাবা যে স্বপ্ন দেখেছেন সেই স্বপ্ন পূরণেই আমি পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। এবং আমার বাবার মোটরসাইকেল প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকেও ভাগ্যবান মনে করছি। আমি নির্বাচিত হলে এই এলাকার মানুষের জীবন উন্নয়ন ও তাদের সুখে দুঃখে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করব।