সাংগ্রাই মঙ্গল শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে বান্দরবানে শুরু হয়েছে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় স্থানীয় রাজার মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে সাংগ্রাই মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রায় ১২টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায় পৃথক পৃথকভাবে শোভাযাত্রা বের করেন। পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপির নেতৃত্বে পাহাড়ি সম্প্রদায়ের শত শত নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী এবং নেতা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট এ সভাকক্ষে বয়োজোষ্ট পূজা অনুষ্ঠিত হয়। পাহাড়িদের তিন দিনব্যাপী এই উৎসব চলবে।
প্রতি বছরই বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায় ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে উদ্যাপন করে মাহা সাংগ্রাই উৎসব। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলার ১১টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পাহাড়ি জাতিসত্ত্বার মধ্যে মারমা জনগোষ্ঠী সাংগ্রাই নামে এ উৎসব পালন করে। করোনার কারণে গত দুই বছর উৎসব পালন করতে পারেনি। তবে এবার বান্দরবানের মারমা সম্প্রদায় নতুন বর্ষকে বরণ করে নিতে ব্যাপক আয়োজন করেন।
পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি বলেন, বান্দরবান একটি সম্প্রীতির জেলা। বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি পার্বত্য জেলার সব সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই উৎসব মিলেমিশে এবং শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব উপভোগ করেছে। ধর্ম যার যার। তবে উৎসব আমাদের সবাই। পাহাড়ি-বাঙালির সম্প্রীতির বন্ধন রয়েছে- একে অপরের মঙ্গল কামনা করি।
সাংগ্রাই উৎসব উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি থেওয়াং (হ্লাএমং) জানান, গত বুধবার সকালে রাজার মাঠ প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয় এবং শোভাযাত্রা শেষে বয়োজ্যেষ্ঠ পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আজ সকালে মিনি ম্যারাথন দৌড়, বিকালে পবিত্র বুদ্ধমূর্তি স্নান, রাতব্যাপী পিঠা তৈরি উৎসব, ১৫ এপ্রিল বিকালে বান্দরবানের উজানীপাড়া সাঙ্গু নদীর চরে মৈত্রী পানি বর্ষণ, ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, তৈলাক্ত বাঁশ আরোহন ও সবশেষে ১৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিহারে বিহারে হাজার প্রদ্বীপ প্রজ্বালন ও সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী এই সাংগ্রাই উৎসবের।