Logo
শিরোনাম

সুনামগঞ্জ আ. লীগের সভাপতি মুকুট, সম্পাদক পলিন

প্রকাশিত:শনিবার ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

শফিউল আলম,স্টাফ রিপোর্টার:

সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ১১ফেব্রুয়ারি শনিবার দুপুরে 

নুরুল হুদা মুকুটকে সভাপতি ও নোমান বখত পলিনকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। 

জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নতুন কমিটির সভাপতি  ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।

ইতিপূর্বে সুনামগঞ্জের সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশাল মাঠে (প্রকাশ বালুর মাঠে) দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক,হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এনামুল কবির'র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ডা. মুশফিক হোসেন, আজিজুস সামাদ আজাদ ডন। 

এ ছাড়া পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, মুহিবুর রহমান মানিকসহ স্থানীয় নেতারা।

 সকালে জাতীয় সংগীতের সুরে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য ১৯৯৭ সালের পর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয় ২০১৬ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি। এরপর আর সম্মেলন হয়নি। তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম জেলা কমিটির সভাপতি পদে মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক পদে এনামুল কবিরের নাম ঘোষণা করেন। সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান তখন জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিলেন। এনামুল কবির ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও জেলা পরিষদের প্রশাসক।

এর প্রায় দুই বছর পর ৭৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি  ২০১৮সালের ১৬ মার্চ ঘোষণা করা হয় । পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি হিসেবে রাখা হয় নূরুল হুদা মুকুট কে এছাড়াও তিনি জেলা কমিটিতে ১৫ বছর ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের টানা দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তবে তিনি দু'টি নির্বাচনেই নৌকা প্রতীক না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করে নির্বাচিত হয়েছেন।


আরও খবর



করোনার টিকায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

প্রকাশিত:সোমবার ১৩ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

করোনা মহামারি শুরুর পর প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে মুক্তি দিয়েছে কোভিড ভ্যাকসিন বা টিকা। এবার সেই টিকা নিয়ে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার অভিযোগ উঠছে। এ অবস্থায় সমালোচনার মুখে বাজার থেকে তাদের টিকা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে তারা বলছে, চাহিদা না থাকায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

জানা গেছে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে করোনার যে টিকা উৎপাদন করে, তার ব্র্যান্ড নাম ভ্যাক্সজেভ্রিয়া। এরপর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট সেই টিকা উৎপাদনের লাইসেন্স পায়। তারা কোভিশিল্ড নামে সেই টিকা বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশে বাজারজাত করে। সমালেচানার মুখে ইউরোপ মহাদেশে ভ্যাক্সজেভ্রিয়া টিকার বাজারজাতকরণ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

বাংলাদেশের মানুষকে সাড়ে ৫ কোটির বেশি ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা দেওয়া হয়েছে। এই টিকা গ্রহণকারীদের দেহে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখতে বুধবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টি জোরেশোরে সামনে আসায় উৎকণ্ঠায় আছেন এই টিকা গ্রহীতারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে দ্রুত উদ্ভাবিত করোনা টিকা মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়। যেসব টিকা ব্যবহার করা হয়েছে তার একটিও যথাযথ নিয়ম হয়নি। তৈরি ও ব্যবহারের অনুমতিও জরুরি ভিত্তিতে হয়েছিল। কারণ মহামারি মোকাবিলাই সবচেয়ে বড় বিষয় ছিল। কিছু টিকার বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না মর্মে বাজারে ছাড়া হয়েছিল। এসব কারণে দীর্ঘমেয়াদি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা রুটিন ভ্যাকসিনের মতো করোনার টিকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

তাছাড়া টিকা গবেষণায়ও তাড়াহুড়া ছিল। জরুরি অবস্থা বিবেচনায় দ্রুত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অনেক মানুষকে দেওয়ার ফলে পার্শপ্রতিক্রিয়ার বিষয় আমলে নেওয়া হয়নি। করোনা আক্রান্ত এবং আক্রান্ত ছাড়াও টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশ্বব্যাপী অনেক প্রতিবেদন হচ্ছে। তবে করোনার কারণে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না অন্য কারণে হচ্ছে বলা কঠিন। এজন্য সরকারি অর্থায়ন এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ গবেষকদের সমন্বয়ে সঠিক পদ্ধতিতে গবেষণা করতে হবে। তবে যে প্রতিষ্ঠান টিকা দিয়েছে তাদের গবেষণায় রাখা যাবে না।

এদিকে টিকা গ্রহণের ফলে মানবদেহে গুরুতর ক্ষতি এবং মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিরুদ্ধে । ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট অ্যাস্ট্রাজেনেকা বিষয়টি স্বীকারও করেছে। 

এক গবেষণা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে কোভিশিল্ড নামে তাদের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের ফলে থ্রম্বোসিস উইথ থ্রম্বোসাইটোপেনিয়া সিনড্রোম (টিটিএস) নামে পরিচিত একটি বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। টিটিএস হলো এমন একটি বিরল অবস্থা, যার ফলে শরীরের অস্বাভাবিক কোনো জায়গায় রক্ত জমাট বাঁধে এবং রক্তে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমে যায়। টিটিএসের উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে গুরুতর মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, পায়ে ফোলাভাব, শ্বাসকষ্ট এবং খিঁচুনির মতো সমস্যা। যদি কেউ টিকা নেওয়ার পর এই লক্ষণগুলো দেখতে পায় তবে তাদের দ্রুত একজন চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করা উচিত।

বাংলাদেশে করোনার বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টিকা গ্রহণ পরবর্তী শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে এমন একাধিক ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অনেকের মনে রাখার ক্ষমতা কমে গেছে। অর্থাৎ ভুলে যাওয়া প্রবণতা বাড়ছে। অনেকের সামান্য পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, শারীরিক দুর্বলতা, ঘুম কমে যাওয়া, অবসাদগ্রস্ততা, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের সমস্যা দেখা দিয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভোগা ব্যক্তিদের টিকা নিয়ে পুরোনো ও বিরল রোগব্যাধি ফের মাথাচাড়া দিয়েছে।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে টিকাদান কর্মসূচিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে আয়োজিত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা টিকার বিরল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে। তৈরি হয়েছে বিতর্ক। এমন পরিস্থিতিতে বড় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। নিজেদের করোনা টিকা সারা বিশ্ব থেকে প্রত্যাহার করছে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা গ্রহণকারীদের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বৈশ্বিক এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে দেশের প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না জানব দেশে কতটুকু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না। তবে আমরা এটি নিয়ে কনসার্ন (উদ্বিগ্ন)। 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গবেষণার অংশীদার নিউজিল্যান্ডভিত্তিক গবেষণা সংস্থা জিভিটিভি জানিয়েছে, করোনার অন্যান্য ব্র্যান্ডের টিকাগুলো হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক ও রক্তে নানা ধরনের জটিলতা বাড়ায়। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে এ পর্যন্ত ১৩ ধরনের শারীরিক জটিলতার রেকর্ড করেছেন গবেষকরা।

গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডাটা নেওয়ার্কের একদল গবেষক এই গবেষণা করেছেন। মার্চের প্রথম সপ্তাহে গবেষণা প্রবন্ধটি প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী ভ্যাকসিন। গবেষণায় বিশ্বের ১৩টি দেশে ৯ কোটি ৯০ লাখ মানুষের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে যারা এমআরএন টিকা ফাইজার, এন-বায়োটেক কিংবা মর্ডানা টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ নিয়েছেন তাদের একাংশ মায়োকার্ডিটি নামক হৃৎপিণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।

 এছাড়া যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৃতীয় ডোজ সম্পন্ন করেছেন তাদের একাংশ পেরি-কার্ডিটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। যারা এই সমস্যায় আক্রান্ত হয় তাদের হৃৎপিণ্ডের কার্ডিয়াক মাংসপেশিতে সমস্যা হয়। এছাড়া ফাইজার মর্ডানার টিকার ডোজে রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়া জিবিএস এবং মায়োলিটিসির মতো শারীরিক সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায় ২ দশমিক ৫ গুণ। মায়োলিটিসে আক্রান্তরা মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের প্রদাহে ভোগেন। তবে টিকা নেওয়া বেশির ভাগ মানুষই যে এসব সমস্যায় ভোগে বিষয়টা এমনো নয়- বলেছেন গবেষকরা। 

জানতে চাইলে জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ বলেন, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা দেখেছি করোনা আক্রান্তদের জিবিএস হয়েছে। একইভাবে জিবিএস রোগীরও কোভিড শনাক্ত হয়েছে। করোনা জিবিএসের মতো একটি ভাইরাল ইনফেকশন। যেসব ভাইরাসে জিবিএস হয় সেগুলো আগে থেকেই জানা। তবে দেশে করোনার সঙ্গে জিবিএসের সরাসরি সম্পর্কের নজির নেই। তাই করোনাভাইরাস জিবিএসে আক্রান্ত করতে পারে কিনা সেটি এখনো বোঝা যাচ্ছে না। এটি নিয়েও দেশে-বিদেশে নির্দিষ্ট করে গবেষণা হওয়া দরকার।

জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. লেলিন চৌধুরী বলেন, করোনা টিকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের গবেষণায় যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা উঠে এসেছে সেটি বিরল রোগ টিটিএস। বাংলাদেশে করোনা টিকা গ্রহীতাদের এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। তাই উদ্বেগের কিছু নেই। তিনি বলেন, মাহামারির ভয়াবহতায় পুরো বিশ্ব উদ্বেগে ছিল। দীর্ঘ হচ্ছিল মৃত্যুর মিছিল। তখন আশার আলো নিয়ে আসে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার, মর্ডানা ও জনসনের মতো টিকা। এখন যাদের টিকা নিয়ে জটিলতা হচ্ছে তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসা নিতে হবে।


আরও খবর



তীব্র তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার উপায়

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

আবহাওয়া অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, কোনো এলাকায় যদি তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে তাহলে তাকে বলে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড এই গরমে মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাপমাত্রা হলে তা যেকোনো স্বাস্থ্যবান লোকের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাই তীব্র এই গরমে সুস্থ থাকার জন্য কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা জরুরি-

১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানি ধীরে ধীরে পান করুন। ঠান্ডা ও বরফজাতীয় পানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এই সময়ে খুব বেশি ঠান্ডা পানি পান করলে মানবদেহের ছোট রক্তনালিগুলো ফেটে যেতে পারে।

২. বাইরে যখন তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রিতে পৌঁছে যায়, তখন আপনি বাইরে থেকে ঘরে ফিরে কখনোই ঠান্ডা পানি পান করবেন না। সব সময় ধীরে ধীরে উষ্ণ পানি পান করুন।

৩. যদি বাইরে থাকার সময় হাত-পা রোদের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে বাসায় ফিরেই তড়িঘড়ি হাত-পা ধোবেন না। এক্ষেত্রে গোসল বা হাত-পা ধোয়ার আগে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।

৪. তীব্র গরমের এই সময়ে যতটা সম্ভব বাইরে বের না হওয়াই ভালো। বিশেষ করে বেলা ১১টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। এই সময়ে ঘরে থাকাই ভালো।

৫. বাইরে বের হতে হলে ছাতা, টুপি সঙ্গে রাখুন। পা ঢাকা জুতা ও হালকা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন। স্কিন টাইট বা সিনথেটিক কিছু পরবেন না।

৬. তৃষ্ণার্ত বোধ না করলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি পান করুন। সব সময় পানীয় সঙ্গে রাখুন।

৭. শরীরে অস্বস্তি হলে ওআরএস স্যালাইনে পান করতে পারেন। বাড়িতে শরবত, ফলের রস, লাচ্চি বানিয়েও পান করতে পারেন। এভাবে শরীরকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখতে হবে।

৮. বাইরে বের হলে বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না। যাদের পেশার জন্য রাস্তায় রোদে থাকতেই হবে, তারা কিছু সময় অন্তর ছায়া বা ঠাণ্ডায় থাকার চেষ্টা করুন।

৯. যারা বেশি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে থাকেন, যাদের কনকনে ঠান্ডা পানি পানের প্রবণতা থাকে এবং গরম থেকে বেরিয়েই দীর্ঘ সময় এসি ঘরে কাটান তাদের অসুখ চট করে ধরে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রচণ্ড গরম থেকে এসে এসি ঘরে ঢোকার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আবার এসি থেকে বেরিয়েও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে।

১০. হিট স্ট্রোক ও হিট ক্র্যাম্প এড়াতে শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে তাকে ছায়ায় বা অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে যান। চোখে-মুখে পানির ঝাপটা দিন। পারলে ঠান্ডা পানিতে গা স্পঞ্জ করিয়ে দিন।

১১. পুরোনো বা বাসি খাবার এড়িয়ে চলুন।

১২. প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করুন।


আরও খবর

ঈদে বালুচর এর পাঞ্জাবি

রবিবার ৩১ মার্চ ২০২৪

বালুচরে শীতের পাঞ্জাবি-কটি

বুধবার ২০ ডিসেম্বর ২০23




আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ |

Image

তাপদাহে পুড়ছে দেশ। দিনদিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। প্রখর তাপে বিপর্যস্ত জনজীবন। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় নতুন করে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার জন্য হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুরর রশিদ স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।

এতে আরও বলা হয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আরও ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে জনজীবনের অস্বস্তি বাড়তে পারে।

এর আগে, গত ১৯ এপ্রিল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রথমবার তিন দিনের হিট এলার্ট জারি করা হয়েছিল।

এদিকে সোমবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহী, টাঙ্গাইল, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। শ্রীমঙ্গল ও চাঁদপুর জেলাসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

এ ছাড়া একই সময়ে ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।


আরও খবর



১৫টি রুটে যত বাড়ল ট্রেনের ভাড়া

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ |

Image

৩২ বছর ধরে চলমান রেয়াত সুবিধা বাতিল করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর মাত্র ১০ দিন পরই বেড়ে যাবে রেল এর ভাড়া।

আগামী ৪ মের জন্য ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে ট্রেনে ভ্রমণের জন্য আসন কিনতে হবে রেয়াত সুবিধা ছাড়া। ওই দিনের আসন বিক্রি শুরু হবে বুধবার (২৪ এপ্রিল) থেকে। কারণ, ট্রেন ভ্রমণের ১০ দিন আগে অগ্রিম আসন বিক্রি করে থাকে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

সোমবার (২২ এপ্রিল) এক গণবিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ১৯৯২ সালে বাংলাদেশ রেলওয়েতে দূরত্বভিত্তিক ও সেকশনভিত্তিক রেয়াতি দেওয়া হয়। ২০১২ সালে সেকশনাল রেয়াত বাতিল করা হলেও দূরত্বভিত্তিক রেয়াত বলবৎ থাকে। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়েতে যাত্রীবাহী ট্রেনগুলোতে ভাড়া বৃদ্ধি না করে শুধু বিদ্যমান দূরত্বভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে বিদ্যমান দূরত্বভিত্তিক রেয়াত প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি আগামী ৪ মে থেকে কার্যকর করা হবে।

দূরত্বভিত্তিক রেয়াতি সুবিধায় ৩২ বছর ধরে মূল ভাড়ায় ১০১-২৫০ কিলোমিটার ভ্রমণে ২০ শতাংশ, ২৫১-৪০০ কিলোমিটারে ২৫ শতাংশ ও ৪০১ কিলোমিটার বা এর বেশি দূরত্বের জন্য ৩০ শতাংশ ছাড় দিয়ে আসছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে। আর্থিক চাপ ও লোকসান কমাতে এখন এ সুবিধা প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সরকারের যাত্রীসেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানটি। এর পাশাপাশি ট্রেনে অতিরিক্ত সংযোজিত কোচ ও আবেদনের মাধ্যমে রিজার্ভ করা আসনের ভাড়াও বাড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে রিজারভেশন চার্জের ভিত্তিতে অতিরিক্ত সংযোজিত কোচ ও আবেদনের মাধ্যমে রিজার্ভ করা নন-এসি কোচের আসনে ব্যয় বাড়ছে মূল ভাড়ার ২০ শতাংশ এবং এসি কোচের আসনের বাড়ছে ৩০ শতাংশ।

এদিকে বাংলাদেশ রেলওয়ের অপারেশন বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বাংলাদেশ রেলওয়ের টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি এরইমধ্যে সারা দেশে স্টেশন-টু-স্টেশন রেয়াত সুবিধা বাদ দিয়ে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির হিসাবের ভিত্তিতে ১ হাজার ৩৪টি স্টেশন-টু-স্টেশনে নির্ধারিত নতুন ভাড়ায় এরই মধ্যে রেলওয়ের বাণিজ্যিক বিভাগের মাধ্যমে অনুমোদনও দেওয়া হয়েছে।

১৫টি প্রধান রুটে যত বাড়ছে ট্রেনের ভাড়া

সহজ-সিনেসিস-ভিনসেন জেভি ও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, নতুন তালিকা অনুযায়ী আগামী ৪ মে থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ৩৪৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে ৪০৫ টাকা ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির আসনের ভাড়া ৬৫৬ থেকে বেড়ে হবে ৭৭৭ টাকা।

ঢাকা-কিশোরগঞ্জ রুটে কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ১৫০ ও ২৮৮ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ১৬০ ও ৩০৫ টাকা।

ঢাকা-রাজশাহী রুটে সিল্কসিটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৩৪০ ও ৬৫৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৪০৫ ও ৭৭১ টাকা।

ঢাকা-নোয়াখালী রুটে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২৭৫ ও ৫২৪ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৩১০ ও ৫৯৩ টাকা।

ঢাকা-সিলেট রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৩২০ ও ৬১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৩৭৫ ও ৭১৯ টাকা।

ঢাকা-মোহনগঞ্জ রুটে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২২০ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭২ টাকা।

ঢাকা-খুলনা রুটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০০ ও ৯৫৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২৫ ও ১১৯৬ টাকা।

ঢাকা-লালমনিরহাট রুটে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা।

ঢাকা-রংপুর রুটে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫০৫ ও ৯৬৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৩৫ ও ১২১৪ টাকা।

ঢাকা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪২৫ ও ৮১০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৫১২ ও ৯৭৫ টাকা।

ঢাকা-কুড়িগ্রাম রুটে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৫১০ ও ৯৭২ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬৪৫ ও ১২৩৭ টাকা।

ঢাকা-চিলাহাটি রুটে চিলাহাটি এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪৯৫ ও ৯৪৯ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬২০ ও ১১৮৫ টাকা।

ঢাকা-বেনাপোল রুটে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ৪৮০ ও ৯২০ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ৬০০ ও ১১৫০ টাকা।

ঢাকা-ভূঞাপুর রুটে জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২৬০ ও ৪৯৫ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৯৫ ও ৫৭০ টাকা।

ঢাকা-দেওয়াগঞ্জ রুটে তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার (স্নিগ্ধা) শ্রেণির ভাড়া ২২৫ ও ৪২৬ টাকা থেকে বেড়ে হবে যথাক্রমে ২৫০ ও ৪৭৬ টাকা।

এছাড়া শোভন চেয়ার ও এসি চেয়ার বাদে সব আন্তঃনগর ট্রেনে ১০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে এসি সিট ও বার্থ এবং প্রথম শ্রেণির সিট ও বার্থ আসনের ভাড়াও আনুপাতিক হারে বাড়বে।


আরও খবর



বিশ্বের কুখ্যাত মানবপাচারকারী বারজান মাজিদ গ্রেপ্তার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

আন্তর্জাতিক ডিজিটাল ডেস্ক:



ইউরোপের কুখ্যাত একজন মানবপাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার নাম বারজান মাজিদ।


 ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির করা একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের সূত্র ধরে তাকে গত রোববার সকালে ইরাকের কুর্দিস্তান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দেশটির জ্যেষ্ঠ একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন ।


বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে মাজিদ ও তার দলের সদস্যরা ইংলিশ চ্যানেল জুড়ে নৌকা এবং লরি ব্যবহার করে ব্যাপকভাবে মানুষ পাচার বাণিজ্য চালিয়ে আসছিল।


সম্প্রতি কুর্দিস্তানের সুলায়মানিয়া শহরে মাজিদের সন্ধান পায় বিবিসি, যেখান থেকে তিনি কয়েক হাজার অভিবাসীকে ইংলিশ চ্যানেল পার করিয়েছেন বলে জানান।


মাজিদ ‘স্করপিয়ন’ নামেও বেশ পরিচিত। “এক হাজারও হতে পারে, আবার ১০ হাজারও হতে পারে। সংখ্যাটা ঠিক জানি না, আমি কখনও গণনা করে দেখিনি,” বলেছিলেন মাজিদ।


কুর্দিস্তানের স্থানীয় সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, মানব-পাচারকারী চক্রের ওপর সম্প্রতি বিবিসি যে অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে, সেটির সূত্র ধরেই তারা মাজেদকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছেন।


“আজ (রোববার) সকাল সাতটার দিকে তিনি (মাজেদ) নিজের বাড়ি থেকে বের হচ্ছিলেন। তখন আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি। এক্ষেত্রে আমাদেরকে তেমন বড় কোনো ঝক্কি পোহাতে হয়নি,” বলেন ওই কর্মকর্তা।


তিনি আরও বলেন, “আমরা এখন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখছি। এরপর আমরা ইউরোপীয় পুলিশ এবং আইনজীবীদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করবো, যারা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।”


যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সিও (এনসিএ) মাজেদের ধরা পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।


এ বিষয়ে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, “প্রতিবেদনের মাধ্যমে তার (মাজিদের) মানব পাচারের বিষয়টি প্রকাশ করার জন্য আমরা বিবিসি’র কাছে কৃতজ্ঞ।


এতে আরও বলা হয়েছে, “যুক্তরাজ্যে যারা মানুষদের পাচার করছেন, তারা যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, আইনের আওতায় এনে ওইসব চক্রকে নির্মূল করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি এবং এক ব্যাপারে আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।”


২০১৬ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপের মধ্যে যত মানুষ পাচার হয়েছে, সেটির বেশিরভাগই ‘স্কর্পিয়নস’ এর চক্র নিয়ন্ত্রণ করেছে বলে জানা যাচ্ছে।


দুই বছর ধরে অভিযান চালিয়ে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা চক্রটির অন্তত ২৬ জন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে, যারা পরবর্তীতে আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।


কিন্তু চক্রটির মূল হোতামাজেদ, যাকে ‘স্করপিয়ন’ ডাকা হয়, তিনি নিজেই এতদিন গ্রেপ্তার এড়িয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। যদিও গ্রেপ্তারের আগেই বেলজিয়ামের একটি আদালতে তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় এবং ১২১টি মানব-পাচারের ঘটনায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।


২০২২ সালের অক্টোবরে মাজেদকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। একই সঙ্গে, নয় লাখ ৬৮ হাজার ইউরো জরিমানাও করা হয়। কিন্তু বিবিসি খুঁজে বের করার আগ পর্যন্ত তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছিলো না।


গত এপ্রিলে লোহিত সাগরে নৌকা ডুবির ঘটনায় বেশ কয়েকজন অভিবাসীর মৃত্যু হয়। তখন একটি ফোনালাপকালে মাজেদ ডুবে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতি সামান্য সহানুভূতি দেখান বলে মনে হয়েছে।


“সৃষ্টিকর্তা (এটি নির্ধারণ করে রেখেছেন যে) কখন আপনার মৃত্যু হবে। তবে কখনও কখনও নিজেদের দোষেই আপনার মারা পড়েন,” ওই ফোনালাপে বলেন মাজিদ।


তিনি আরও বলেন, “সৃষ্টিকর্তা কখনও আপনাকে বলেননি যে, তুমি “নৌকায় যাও।”


খোঁজ পাওয়ার পর মাজিদের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করে বিবিসি। বেশ কয়েকবার চেষ্টার পর অবশেষে তিনি সুলায়মানিয়ার একটি শপিংমলে দেখা করতে রাজি হন।


তিনি যে একটি অপরাধমূলক সংগঠনের একজন শীর্ষ ব্যক্তি, সেটি তখন তিনি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, অন্য চক্রের সদস্যরা তাকে বিভিন্ন সময় ফাঁসানোর চেষ্টা করেছে।


“গ্রেপ্তার হওয়া বেশ কয়েকজন লোক বলেছে যে, আমরা তার জন্য কাজ করছি। তারা কম সাজা পেতে চায়,” বলেন মাজেদ। এরপর তিনি রব লরি নামের সাবেক এক সৈনিককে সেখানে ডাকেন। লরি অবশ্য বিবিসি’র অনুসন্ধানী দলের হয়েই কাজ করছিলেন।


“কেউ তাদের জোর করেনি। তারাই এটি চেয়েছিল,” বলেছিলেন মাজিদ। তিনি আরও বলেন, “তারা নিজেরাই মানব-পাচারকারীদেরকে অনুরোধ বলেছিল যে, দয়া করে আমাদের জন্য এটি করুন।”


“কখনও কখনও চোরাকারবারিরা বলে, শুধু সৃষ্টিকর্তার কথা ভেবে আমি তাদের সাহায্য করবো।...না, এটি (জোর করে নেওয়ার অভিযোগ) সত্য নয়,” বলেন মাজিদ।


বেলজিয়াম সরকারের কৌসুলীর কার্যালয় থেকে মাজিদের গ্রেপ্তারের খবরকে স্বাগত জানানো হয়েছে।


বেলজিয়াম সরকারের কৌঁসুলীর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা অ্যান লুকোভিয়াক বলেন,অবশেষে আমাদের এই মামলায় ন্যায়বিচার দেখার সুযোগ হয়েছে।


আরও খবর