
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে মহেশখালীতে ভাসমান দুটি টার্মিনাল
থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহ তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে
পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ কমে গেছে। বিদ্যুৎ উৎপাদন, রান্নার চুলা, শিল্পকারখানায় সংকট দেখা দিয়েছে। গ্যাসের সরবরাহ পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে
আরো দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে। আর আগামী দুই দিনের মধ্যে লোডশেডিং পরিস্থিতির
উন্নতি হবে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কক্সবাজারের মহেশখালীর দুটি ভাসমান
এলএনজি টার্মিনাল থেকে শুক্রবার রাত ১১টা থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়েছে।
গ্যাসের চাপ কমায় ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় দুই দিন ধরে চুলা জ্বালাতে
সমস্যায় পড়ছেন ভোক্তারা। গ্যাসসংকটে বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে। তাই ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের একটি বড় অঞ্চলে
লোডশেডিং চলছে। শনিবার রাজধানীতে একেক এলাকায় গড়ে পাঁচ ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং
হয়েছে। রবিবারও লোডশেডিং ছিল ঢাকায়।
নসরুল হামিদ বলেন, দুটি ভাসমান টার্মিনালের মধ্যে একটি গভীর
সমুদ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। সেটি থেকে এলএনজি সরবরাহ শুরু হতে ১২ থেকে ১৫ দিন সময়
লাগতে পারে। আর যেটি কাছাকাছি আছে, তা থেকে শিগগিরই এলএনজি
সরবরাহ শুরু হবে। এতে গ্যাস সরবরাহ পরিস্থিতি এখনকার চেয়ে ভালো হবে।
বর্তমান লোডশেডিং পরিস্থিতির উন্নতি হবে কি না, জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী
বলেন, প্রভাবটা থাকবে, তবে খুব বেশি
নয়। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি যে তৈরি হয়েছিল, এই সমস্যাটা
আর থাকবে না। আগামী দুই দিনের মধ্যেই লোডশেডিং পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে। মহেশখালীতে
ভাসমান দুটি টার্মিনালের মাধ্যমে বিদেশ থেকে আমদানি করে আনা এলএনজি রূপান্তর করে
পাইপলাইনে সরবরাহ করা হয়।
গত শুক্রবারও এখান
থেকে ৬২ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাওয়া গেছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর
নিম্নচাপটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ায় শুক্রবার রাত ১১টায় দুটি টার্মিনাল
থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা হয়। দিনে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪০০ কোটি ঘনফুট।
সর্বোচ্চ সরবরাহ করা হয় গড়ে ২৮০ থেকে ২৮৫ কোটি ঘনফুট। এতে সব সময়ই সরবরাহ ঘাটতি
থাকে। এক খাতে বন্ধ করে অন্য খাতে সরবরাহ বাড়ানোর (রেশনিং) মাধ্যমে ঘাটতি সমন্বয়
করা হয়। এর মধ্যে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে আসে ২১৫ থেকে ২২০ কোটি ঘনফুট। এলএনজি
বন্ধ হওয়ায় গ্যাস সরবরাহের ঘাটতি বেড়ে গেছে।