নিজস্ব প্রতিনিধি :
আওয়ামীলীগ ও বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে লালমনিরহাটে শান্তি সমাবেশ ও পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এতে উভয় দলের অন্তত ২৭নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষ সংঘটিত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকলেও বর্তমানে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
শনিবার(১১ ফেব্রুয়ারী) জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উভয় দলের মধ্যে এসব ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর আওয়ামীলীগের নেতারা জানান,আওয়ামীলীগের শান্তি সমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল ।হঠাৎ বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। বিএনপির হামলায় আওয়ামীলীগ নেতা ও জেলা পরিষদ সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লবসহ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়।গুরুতর আহত মহেন্দ্রনগর আওয়ামীলীগ নেতা বিপ্লব লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধী নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য মহেন্দ্রনগর শান্তি সমাবেশে উপস্থিত হন।
এ সময় মহেন্দ্রনগরের পূর্ব পাশ থেকে বিএনপির সমর্থকরা মোহরা প্রদর্শন করলে উপস্থিত জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মতিয়ার রহমান সমাবেশে উপস্থিত সকলকে শান্ত হয়ে থাকবার আহবান জানিয়ে প্রধান বক্তার বক্তব্য শেষ করেন এবং শান্তি সমাবেশ সমাপ্ত হয়। তার আগে ঐ মঞ্চে বক্তব্য রাখেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আলীগ সদস্য অ্যাড. সফুরা বেগম রুমি,জেলা জাতীয় শ্রমিক জোটের আহবায়ক কাজী নজরুল ইসলাম তপন প্রমুখ।
তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মহেন্দ্রনগরের বুড়ীরবাজার থেকে পূর্ব ঘোষনা অনুযায়ী একটি পদযাত্রা বের করে বিএনপি।এসময় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাই পুলিশের উপস্থিতে পদযাত্রায় হামলা করলে পদযাত্রাটি ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।পরে স্থানীয় বিএনপি পার্টি অফিস,কয়েকটি দোকাপাট ও বাড়ী ভাংচুর করে। মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ মন্ডল বলেন, বিএনপির পদযাত্রায় হামলা ও ভাংচুর করেছে আওয়ামীলীগের নেতাকমীরা। আওয়ামীলীগের এ হামলায় বিএনপির অন্তত ৫ কর্মী আহত হয়েছে।
মহেন্দ্রনগরের পাট ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা জানান, বিএনপির লোকজন আমার বুড়ির বাজারের পাটের গোডাউনে আগুন লাগিয়ে দেয়। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসলেও ততক্ষণে গোডাউনে থাকা পাট পুড়ে যায়।
জেলার সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ছাড়াও হাতীবান্ধার ফকিরপাড়া, সানিয়াজান, আদিতমারীর ভেলাবাড়িসহ বেশকিছু এলাকায় উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সানিয়াজান ও ফকিরপাড়ায় উভয় দলের মধ্যে এ সংঘর্ষে দুই দলের অন্তত ১১ নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতরা লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল, হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স ও পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
উভয় দলের মধ্যে এসব ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনায় আওয়ামীলীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীরা একে অপরের উপর দোষ চাপিয়ে পাল্টা পাল্টি বক্তব্য দিচ্ছেন।
দুই দলের এ সংঘর্ষের বিষয়ে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানান, সৃষ্ট ঘটনা নিয়ে কাজ চলছে তাই টায়ার্ড, কালকে এ বিষয়ে কথা বলবেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ সংঘটিত হওয়া ওই সকল এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় আবারও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে বলে মনে করেছেন স্থানীয়রা।তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।