বাংলাদেশ-ভারতের ত্রিপুরা থেকে শুরু করে সীমান্তের কাঁটাতারবিহীন অংশে কাঁটাতার নির্মাণের কাজ শেষ করার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ। এছাড়া সীমান্ত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বিজিবি বিএসএফের পদক্ষেপের মাধ্যমে সীমান্তে মৃত্যু কমিয়ে আনা, অস্ত্র, মাদক ও জাল টাকার চোরাচালান এবং পাচার রোধে পারস্পরিক সহযোগিতাও প্রশংসিত হয়েছে। ভারতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় সফরে দুই দেশের মধ্যে যৌথ সম্মতিতে নেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্তগুলো। কূটনৈতিক সূত্রগুলো এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : উভয় নেতাই সন্ত্রাসবাদের সব রূপ ও অভিব্যক্তি নির্মূলে তাদের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এই অঞ্চল ও এর বাইরে সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা এবং মৌলবাদের বিস্তার প্রতিরোধে ও সে সম্পর্কিত পদক্ষেপে সহযোগিতা আরো জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা : বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য যানবাহন সংগ্রহের পরিকল্পনাসহ ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিরক্ষা লাইন অব ক্রেডিটের অধীনে প্রকল্পগুলোর প্রাথমিক চূড়ান্তকরণে রাজি হয়েছে। বর্ধিত সামুদ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত উপকূলীয় রাডার সিস্টেম সমঝোতা স্মারকের প্রাথমিক কার্যকারিতা চূড়ান্তকরণ।
মানুষ ও পণ্যের স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ চলাচলের সুবিধা নিশ্চিতকরণ : আন্তর্জাতিক সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে চলমান উন্নয়নমূলক কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে একমত হয়েছে দুই দেশ, যার মধ্যে চার হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের বিভিন্ন ক্রসিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ অভিবাসন ও বাণিজ্য-সম্পর্কিত অবকাঠামো রয়েছে।
আঞ্চলিক সমস্যা : মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোর করে বাস্তুচ্যুত ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়া এবং মানবিক সহায়তা প্রদানে বাংলাদেশের উদারতার প্রশংসা করেছে ভারত। জোর করে বাস্তুচ্যুত এসব লোককে নিরাপদ, টেকসই ও দ্রুত স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিশ্চিতে তারা অব্যাহত প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়েছে।
উন্নয়ন সহযোগিতা : বাংলাদেশ ভারত সরকারের সঙ্গে যুক্ত লাইন অব ক্রেডিটের অধীনে, বিশেষ করে গত বছরের তহবিল বিতরণের কার্যকারিতা এবং গতির জন্য ভারতের প্রশংসা করেছে। বাংলাদেশকে প্রায় ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেয়াতি ঋণ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ভারতের শীর্ষ উন্নয়ন সহযোগী। ভারত কর্তৃক অন্যান্য দেশকে দেওয়া সব উন্নয়ন অর্থায়নের প্রায় এক-চতুর্থাংশ বা ২৫ শতাংশ করে বাংলাদেশকে প্রদান করে।
বঙ্গবন্ধু ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা : বঙ্গবন্ধুর ওপর যৌথভাবে নির্মিত বায়োপিক শিগগিরই শেষ হবে এবং আগামী বছর মুক্তি পেতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্রের যৌথ প্রযোজনা এবং দুর্লভ ভিডিও ফুটেজের যৌথ সংকলনে সম্মত হয়েছে উভয় পক্ষ।