Logo
শিরোনাম

ঈদে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রি ১৪ জুন

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ৩০ মে ২০২৩ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৪ জুন। এবার সকাল ও দুপুর- দুই শিফটে টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অঞ্চল ভেদে অনলাইনে টিকিট পাওয়া আগের চেয়ে নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩০ মে) দুপুরে রেল ভবনের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়- ২৪ জুন যাত্রার টিকিট ১৪ জুন, ২৫ জুন যাত্রার টিকিট ১৫ জুন, ২৬ জুনের টিকিট ১৬ জুন, ২৭ জুনের টিকিট ১৭ জুন এবং ২৮ জুনের টিকিট ১৮ জুন বিক্রি করা হবে। ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ২৯ ও ৩০ জুন এবং ১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে বলে জানান রেলমন্ত্রী।

এছাড়া যাত্রীদের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে। রেলমন্ত্রী বলেন, এবারও ঈদে ট্রেনের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি করা হবে।

তিনি জানান, দুই শিফটে টিকিট বিক্রি করা হবে। সকাল ৮টায় বিক্রি হবে পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট এবং দুপুর ১২টায় বিক্রি হবে পূর্বাঞ্চলের টিকিট।

মন্ত্রী বলেন, এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা হবে ২৯ হাজার। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।


আরও খবর



স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট লাগবে হজযাত্রীদের

প্রকাশিত:শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪ |

Image

হজযাত্রীদের টিকা গ্রহণের সময় স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট লাগবে। সরকার নির্বাচিত মেডিকেল সেন্টারগুলো থেকে টিকা নেওয়ার আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কিছু রিপোর্ট সাথে আনতে সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হজ-১ শাখা থেকে জারিকৃত বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টগুলোর মধ্যে রয়েছে- ইউরিন আরএমই, আরবিএস, এক্সরে চেস্ট পিএ ভিউ, ইসিজি, সেরাম ক্রিয়াটিনিন, সিবিসি উইথ ইএসআর, ব্লাড গ্রুপিং এন্ড আরএইচ টাইপিং।

মোট ৮০টি স্বাস্থ্য সেবা ও টিকাদান কেন্দ্র থেকে টিকা গ্রহণ করতে পারবেন হজযাত্রীরা। সব জেলার সিভিল সার্জন অফিস ছাড়াও কেন্দ্রগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল, সরকারী কর্মচারী হাসপাতাল, ফুলবাড়ীয়া, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল, রাজারবাগ, বাংলাদেশ সচিবালয় ক্লিনিক, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বগুড়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মোহম্মদ আলী হাসপাতাল ও দিনাজপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতাল।

এ সংক্রান্ত যে কোনো তথ্যের জন্য ১৬১৩৬ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।


আরও খবর



নওগাঁয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদন্ড

প্রকাশিত:সোমবার ২২ এপ্রিল ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

নওগাঁয় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সালাউদ্দিন ওরফে টনি (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদন্ড রায় দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার ২২ এপ্রিল দুপুরে নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ এই রায় দেন। 

মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত সালাউদ্দিন নওগাঁ জেলার পার্শ্ববর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল খালেক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় মৃত্যুদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে অর্থদন্ড দেওয়া হয়েছে। 

আদালত ও মামলার এজহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার ধানসা গ্রামের আবু কালামের মেয়ে তুকাজ্জেবার (২৪) সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের সালাউদ্দিনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই সালাউদ্দিন তুকাজ্জেবার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। ২০২০ সালের ২৯ জুন তুকাজ্জেবা স্বামী সালাউদ্দিনকে নিয়ে বাবার বাড়ি নিয়ামতপুরের ধানসা গ্রামে বেড়াতে আসেন। পারিবারিক কলহের জেরে শ্বশুড় বাড়িতে থাকা অবস্থায় ১জুলাই সালাউদ্দিন তার স্ত্রী তুকাজ্জেবার গলায় কাঁচি দিয়ে খুঁচিয়ে গুরুত্বরভাবে জখম করে। ওই দিন সকাল সাড়ে ৫টার দিকে তুকাজ্জেবা ও সালাউদ্দিনের ঘর থেকে চিৎকারের শব্দ পেয়ে তুকাজ্জেবার বাবা ও মা  বাইরে থেকে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে প্রতিবেশি রবিউল ইসলাম লাথি মেরে দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে তুকাজ্জেবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। এ সময় সালাউদ্দিনের হাতে কাপড় কাটার কাঁচি দেখতে পায় তারা। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তুকাজ্জেবাকে নিয়ামতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

স্ত্রীকে আহত করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন সালাউদ্দিন কে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। এ ঘটনায় নিহত তুকাজ্জেবার বাবা আবু কালাম বাদীয় হয়ে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে নিয়ামতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে  মামলার তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা ২০২২ সালের ২২ জুন আদালতে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮জন সাক্ষীর মধ্যে আদালতে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। রাষ্ট্র ও আসামী পক্ষের দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় নওগাঁর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু শামীম আজাদ আসামীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে। 

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি শুনানি করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারী কৌঁসুলি (পিপি) আব্দুল খালেক এবং আসামী পক্ষে মামলাটি শুনানি করেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আতিকুর রহমান। সরকারি কৌঁসুলি আব্দুল খালেক বলেন, সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক আসামীকে সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করেছেন। রায়ে হাইকোর্ট বিভাগে মৃত্যুদন্ড বহাল রাখা সাপেক্ষে আসামী সালাউদ্দিনকে মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার কথা বলা হয়েছে। এ রায় হত্যা মামলার ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন এই আইনজীবী।


আরও খবর



চামড়া খাতে ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার টাকার প্রস্তাব

প্রকাশিত:শনিবার ০৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ |

Image

ট্যানারি শিল্পের জন্য শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব দিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। একইসঙ্গে মজুরি দেওয়ার ক্ষেত্রে গ্রেডিং সিস্টেম যথাযথ করার প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।শ্রমিকদের খাদ্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় এ প্রস্তাব দিয়েছে সিপিডি।

শনিবার (৪ এপ্রিল) সিপিডির ধানমন্ডির কার্যালয়ে ট্যানারি শিল্পে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব প্রস্তাবনায় উঠে আসে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক গোলাম মোয়াজ্জেমের নেতৃত্ব গবেষণা পরিচালনা করা হয়। সিপিডির সিনিয়র গবেষক তামিম আহমেদ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী মোল্লা ও ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদসহ খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য রাখেন।

শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাবনায় সিপিডি বলছে, শ্রমিকদের খাদ্যমূল্য ২০ হাজার ৫৬৪ ও নন-ফুড মূল্য ১২ হাজার ৮৮১ টাকা হিসেবে মাসে মোট ৩৩ হাজার ৪৪৫ টাকা প্রয়োজন। সেই হিসেবে সিপিডি মনে করছে ন্যূনতম মজুরি হওয়া উচিত ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা। একইসঙ্গে আমাদের প্রস্তাব থাকবে গ্রেডিং সিস্টেম ঠিক করে একটি গ্রেডে আনা। এই খাতে গ্রেড উন্নয়নের সুযোগ কম, কারণ একেকটি গ্রেডের কাজ একেক রকম। যেহেতু পদোন্নতির সুযোগ নেই, তাই গ্রেডের মধ্যে কয়েকটি ভাগ, যেমন: যেমন-গ্রেড-৫ এর এ, বি ও সি করে সাবগ্রেড করার প্রস্তাব রয়েছে। এর ফলে পদোন্নতির সুযোগ থাকবে ও শ্রমিকদের কাজে উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে।

গোলাম মোয়াজ্জেম তার বক্তব্যে বলেন, ২০২৩ সালের চামড়া জাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ১.২ বিলিয়ন ডলার। যার ভিতরে ট্যানারি শিল্প থেকে এসেছে ১২৩ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি খুঁজছে সে হিসাবে চামড়াজাত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত হতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমাদের গবেষণায় এই খাতে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২ হাজার ৭৭৬ টাকা প্রস্তাব এসেছে, আমরা জানি শ্রমিকদের দাবি ২৫ হাজার টাকা আর মালিকদের প্রস্তাবনা ১৫-১৬ হাজার টাকা। আমি আশা করছি মজুরি বোর্ড সকল পক্ষে প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।

সিডিপির গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১১ সালে সর্বপ্রথম ট্যানারি শিল্পের জন্য ন্যূনতম মজুরি ঘোষণা করা হয়েছিল, যার পরিমাণ ৮ হাজার ৭৫০ টাকা। ২০১৮ সালে সেটা বৃদ্ধি করে শহর অঞ্চলের জন্য ১৩ হাজার ৫০০ টাকা ও গ্রাম অঞ্চলের জন্য ১২ হাজার ৮৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে যে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছিল, সেটা কতগুলো প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা হয়েছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সিপিডির গবেষণায় দেখা গেছে ২০২৪ সালে এসেও দেখা গেছে ৬০ শতাংশ কারখানা ওই বেতন দিচ্ছে না। প্রতিবছর ৫ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পাওয়ার কথা থাকলেও সেটা বিবেচনায় বাস্তবায়ন হার অনেক কম পাওয়া গেছে। সিপিডি অ্যাংকর মেথডে ৩৫টি ট্যানারির ওপর গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে।


আরও খবর



নওগাঁয় ২২মে গুটি আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে বাজারে আসতে শুরু করবে

প্রকাশিত:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:রবিবার ১৯ মে ২০২৪ |

Image

শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, সিনিয়র রিপোর্টার :

ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে আমের নতুন রাজধানী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে দেশের উত্তরের খাদ্যভান্ডার বরেন্দ্র অঞ্চল নওগাঁ। ধান উৎপাদনের পাশাপাশি বিগত কয়েক বছর আম উৎপাদনে রাজশাহী ও চাপাই নবাবগঞ্জকে ছাড়িয়ে গেছে নওগাঁ। আগামী ২২মে থেকে গুটি আম বা স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে বাজারে আসছে নওগাঁর আম। এছাড়াও নওগাঁর ঐতিহ্য আম্রপালি আমসহ অন্যান্য জাতের সুস্বাদু ও সুমিষ্ট আম পেতে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে ভোক্তাদের।

বর্তমানে আমের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা উপজেলা সাপাহারের পাশাপাশি পোরশা, নিয়ামতপুর, ধামইরহাটসহ জেলার ১১টি উপজেলাতে গড়ে উঠছে বাণিজ্যিক ভাবে আম বাগান। আর দেশের মধ্যে শুধুমাত্র নওগাঁতেই উৎপাদন হওয়া সুস্বাদু আম্রপালি আমের সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতেও ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবছরই নওগাঁয় উৎপাদিত বিভিন্ন জাতের আমের চাহিদা ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে।  

সম্প্রতি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আম সংগ্রহ করার জাতীয় ক্যালেন্ডারের সঙ্গে মিল রেখে এক সভায়  বিভিন্ন জাতের আম সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ওই সভায় আমচাষী, ব্যবসায়ী, কৃষি কর্মকর্তা ও প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ২২মে গুটি আম বা স্থানীয় জাত, ২৮মে থেকে গোপালভোগ, ২জুন ক্ষীরসাপাত/হিমসাগর, ৭জুন নাক ফজলি, ১০জুন ল্যাংড়া ও হাঁড়িভাঙা, ২০ জুন ফজলি, ২২জুন আম্রপালি এবং ১০জুলাই থেকে আশ্বিনা, বারি আম-৪, গৌড়মতি ও কাটিমন আম সংগ্রহ করা যাবে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে জেলার ৩৩ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। যা থেকে ৪লাখ ৩১ হাজার ৫০০টন আম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। বিভিন্ন বাগানে উচ্চ মূল্যের ব্যানানা ম্যাংগো, মিয়াজাকি, কাটিমন, গৌড়মতি, বারি-৪ আমচাষসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ১৬জাতের আম চাষ করা হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমে আমের মুকুল কম আসায় ও প্রচন্ড দাবদাহে কিছু আম ঝড়ে যাওয়ার কারণে আমের ফলনে কিছুটা তারতম্য হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।


জাত ভেদে নাকফজলি ৮৯৮ হেক্টর, ল্যাংড়া ১ হাজার ৬১৫ হেক্টর, ফজলি ১ হাজার ৪০৮ হেক্টর, গোপালভোগ ৬১০ হেক্টর, ক্ষীরশাপাত ১ হাজার ৪৭ হেক্টর, বারি-৪ ২ হাজার ৪০২ হেক্টর, বারি-১১ আম ৪২ দশমিক ৫০ হেক্টর, মল্লিকা ৩৭ হেক্টর, কাটিমন ১৫৪ দশমিক ৫০ হেক্টর, গৌড়মতি ১৪৩ দশমিক ২৫ হেক্টর, হাড়িভাঙা ৪১ দশমিক ৭৫ হেক্টর, ব্যানানা ম্যাংগো ১০৭ দশমিক ৫০ হেক্টর, আশ্বিনা ২ হাজার ৩২২ দশমিক ৫০ হেক্টর, কুমড়াজালি ১৩ হেক্টর, গুটি বা স্থানীয় ৬০৭ হেক্টর এবং আম্রপালি ১৮হাজার ৪২২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। জেলায় যে পরিমাণ আম বাগান রয়েছে তার মধ্যে আম্রপালি ৬০ দশমিক ৮০শতাংশ।

নওগাঁর সাপাহার উপজেলার নিশ্চিন্তপুর এলাকার আমচাষী আব্দুর রশিদ বলেন, দিন দিন আম চাষ অত্যন্ত লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই বাগানের পরিধি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের মানুষদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে এই আম চাষ। আমের মুকুল আসা থেকে শুরু করে বাজারজাত করা পর্যন্ত বিঘাতে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ পড়ে। তবে চলতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগ খরার কারণে বিঘা প্রতি ৪-৫হাজার টাকা বেশি খরচ হয়েছে। এছাড়া খরায় কিছু আম ঝড়ে পড়ার কারণে ফলন কিছুটা কম হবে। তাই আমের দাম সঠিক ভাবে পেলে লোকসান কিছুটা পুষে নেয়া সম্ভব হবে। তাই এবার আম চাষীদের বাঁচাতে সঠিক ওজনে আম বিক্রয় করা ও ঠিকঠাক দাম বেধে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আমরা সুদৃষ্টি কামনা করছি।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবুল কালাম আজাদ বলেন, চলতি মৌসুমে নওগাঁ থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের আশা করা হচ্ছে। চলতি বছর আমের মুকুল কিছুটা কম আসলেও গাছে বর্তমান থাকা আমের আকার ও রং ভালো থাকার কারণে আমচাষীরা ভালো দাম পাবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া গতবছরের চেয়ে চলতি বছর নওগাঁ থেকে আরো বেশি পরিমাণ আম বিদেশে রপ্তানি করতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রপ্তানি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দ্রæতই নওগাঁর বিভিন্ন আম বাগান পরিদর্শন করতে আসবেন।


আরও খবর



বাংলাদেশের দুর্বিষহ কর ব্যবস্থা ও পরিসংখ্যান

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ১৪ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:শনিবার ১৮ মে ২০২৪ |

Image

বাংলাদেশ তার উন্নয়ন কার্যক্রম চালানোর জন্য অর্থ যোগানে রাজস্ব বাড়াতে লড়াই করছে, এমনকি একই আয়ের তালিকায় থাকা অন্যান্য দেশগুলির চেয়েও বেশি। আর্থিক বছর ২০২২ এ, মাত্র ১.৪% মানুষ আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছে। প্রতিবেশী ভারতে এই সংখ্যা ৫.৮%।

ফ্রান্সে অবস্থিত ওইসিডি(OECD) অর্গানাইজেশন ফর ইকনোমিক কর্পোরেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট জরিপ মতে ২০২০ সালে বাংলাদেশের কর-টু-জিডিপি হার ১০.২ শতাংশ যেখানে এশিয়ার দেশগুলোর কর-টু-জিডিপি হার ১৯.১ শতাংশ যা আমাদের দেশের তুলনায় ৮.৯ শতাংশ বেশি এবং যদি ওইসিডি(OECD) ভুক্ত দেশগুলোর সাথে তুলনা করি তাহলে ওইসিডি(OECD) দেশগুলোর কর- টু-জিডিপি হার ৩৩.৫ শতাংশ যা আমাদের দেশ থেকে ২৩.৩ শতাংশ বেশি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে ১৫%, শ্রীলংকায় ১১.৫%, পাকিস্তানে ১১.৮%, আফগানিস্তানে এ হার ৯.৩% ও নেপালে ১৮% ।

যদি, আমরা ২০০৭ থেকে ২০২০ সালের পরিসংখ্যান লক্ষ করি , তাহলে দেখা যাবে যে ২০০৭ সালে বাংলাদেশের কর-টু-জিডিপি হার ৮.৫ শতাংশ ছিল, ২০২০সালে যা শুধু ১.৭শতাংশ বেঁড়ে ১০.২ শতাংশ হয়েছিল, যার মধ্যে ২০১৩ সালে সর্বোচ্চ ১০.৮ শতাংশ ছিল।

সিইআইসি(CEIC) এর তথ্য মতে, ২০২২ সালে কত কর-টু-জিডিপি হার ছিল ৮ শতাংশ ২০২৩সালে যা এসে দাঁড়িয়েছে ৭.৮ শতাংশ। গত এক বছরে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভে এক বড় ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে, এঁর পিছনে নানান কারন জড়িত। রিজার্ভ ঘাটতি মেটাতে ব্যর্থ হওয়ায় এ দেশের অর্থনীতিতে বড়সড় আঘাত লেগেছে, যার কারনে নিত্যপন্য দ্রব্য থেকে শুরু করে বিলাসবহুল জিনি্সের বাজারেও নেতিবাচক প্রভাব পরেছে। এই সমস্যার আরেকটি বড় কারণ হলো সরকার কাঙ্ক্ষিত কর তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। যার কারন হতে পারে জনগনের কর ফাঁকি অথবা কর দানে অনুৎসাহ, ফলশ্রুতিতে জিডিপিতে কর হার এত কম।

অর্থনীতির এই জটিল অবস্থায় অর্থনীতিকে টিকিয়ে রাখতে বাংলাদেশ যখন আইএমএফ(IMF) এর কাছে ঋণ অনুমোদন চায় তখন আইএমএফ এর দেয়া শর্তগুলোর মধ্যে একটি ছিল , কর-টু-জিডিপি হার ২০২৪ এর মধ্যে ৮.৩ শতাংশ এবং ২০২৬ এর মধ্যে ৯.৫%মধ্যে উন্নিত করতে হবে। এত কিছুর পরেও ২০২৩ সালে সরকার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪৪ হাজার কোটি টাকা কর আয় কম তুলতে পেরেছে ।

ওইসিডি(OECD) তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের কর আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস মূল্য সংযোজন কর / পণ্য ও পরিষেবা কর(value added taxes / goods and services tax) যার হার মোট কর উত্তলনের ৩৩ শতাংশ, এখানে ব্যক্তি আয়কর (Personal income tax) সবচেয়ে কম ১১ শতাংশ, আশ্চর্য ভাবে এদেশের সামাজিক নিরাপত্তা (Social security contributions) খাতের ক্ষেত্রে কোনো কর আদায় হয় না। কিন্তু যা অন্যান্য উন্নত দেশের প্রধানতম আয়ের উৎস। যদি এশিয়ার দেশ গুলোর দিকে দেখি তাহলে, ব্যক্তি আয়কর ১৬ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর ২৩ শতাংশ, সামাজিক নিরাপত্তা খাত থেকে আয় ৬ শতাংশ। আর ওইসিডি(OECD) ভুক্ত দেশ গুলোতে ব্যক্তি আয়কর ২৩ শতাংশ, মূল্য সংযোজন কর ২০ শতাংশ, সামাজিক নিরাপত্তা খাত থেকে আয় ২৬ শতাংশ। সুতরাং স্পষ্ট ভাবে বুঝা যাচ্ছে তাদের কর আদায়ের উৎস এবং প্রক্রিয়া কতটা ফলপ্রসূ এবং কার্যকর।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এপ্রিল-জুন ২০২২সালের ত্রৈমাসিক কর আদায় এর তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালে কর আয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩,৪৬,০০০ কোটি টাকা, যা বাস্তবে অর্জিত হয় ৩,০৮,৬২৫ কোটি টাকা। ২০২১সালে কর আয় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩,১৬,০০০ কোটি টাকা যাতে অর্জিত হয় ২,৬৯ ,০০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাজস্ব বোর্ড থেকেই আয় হয় ৯১.৩ ভাগ।

এমন এক সমীকরণ সামনে রেখে নতুন আয়কর আইন ২০২৩ সালের জুন মাসে সংসদে পাস হয়েছে এবং এটি বেশ আলোড়ন তৈরি করেছে। দেশের কর ব্যবস্থা এত দিন ধরে ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশ দিয়ে চলেছে। তবে বিভিন্ন সময়ে সেই আয়কর অধ্যাদেশের সংশোধন করা হয়েছে। আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর পর এটিই প্রথম পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে তৈরিকৃত আয়কর আইন। সবচেয়ে বড় কথা, দেশে এখন পরিপূর্ণ আয়কর আইন প্রণীত হয়েছে। প্রথমেই যে সেই আইনে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে তেমনটা আশা করা যায় না। এখন এই আইনকে ভিত্তি ধরে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও পরিমার্জনের মাধ্যমে সময়ের পরিক্রমায় হয়তো আইনটি পরিপূর্ণ মাত্রা পাবে। আসা করা যায় এরই ফলশ্রুতিতে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থায় কর আয়ের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে।


আরও খবর