লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি ঃ
লালমনিরহাট সদর উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে রবিউল ইসলাম নামের এক কাঠ ব্যবসায়ী র মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল রাত থেকে দফায় দফায় রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ সময় পুলিশের একটি গাড়ি ভাঙচুর করে এ সময় চার পুলিশ সদস্যকে আহত হন।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গতকাল রাতে আটকের পর রবিউল ইসলামকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছেন পুলিশের সদস্যরা। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। নিহত যুবকের পরিবার থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লালমনিরহাট সদর থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে হারাটি ইউনিয়ন এর হীরা-মানিক নামক স্থানে একটি চড়ক মেলায় জুয়াবিরোধী অভিযানে হিরামানিক গ্রামের বাসিন্দা প্রহ্লাদ চন্দ্র (৪০) ও কাজীর চওড়া গ্রামের রবিউল ইসলাম খানকে (২৫) আটক করে পুলিশ। এ সময় রবিউল হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে রাত ১২টার দিকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু রাত সোয়া সাড়ে টার দিকে সদর হাসপাতালেই রবিউল মারা যান। এ বিষয়ে রবিউল ইসলাম খানের চাচা,মা বলেন, রবিউল ইসলাম খান জুয়া খেলায় জড়িত নন। রবিউল বিবাহিত। রবিউল আট থেকে আটক মাসের কন্যাসন্তানের জন্য গ্রামীণ বৈশাখী মেলায় খেলনা কিনতে যান।
ঔ মেলায় গেলে লালমনিরহাট সদর থানার এসআই হালিমের নেতৃত্বে পুলিশ রবিউলকে আটকের পর জোর করে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। আমরা দোষী পুলিশ সদস্যদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।’
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ওই ব্যক্তিকে পুলিশ সদস্যরা গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিয়ে আসে। তার অবস্থা বিবেচনা করে দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে বলা হয়। তবে এর অল্প সময়ের মধ্যেই ওই ব্যক্তি মারা যান।
রবিউল এর মৃত্যুর বিষয়ে সদর হাসপাতালে উপস্থিত লালমনিরহাট অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এডিশনাল এসপি রবিউল আলম জানান অসুস্থ চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিলে তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মারা যান।
শুক্রবার পৌনে দুটায় অবরুদ্ধ সড়কের মহেন্দ্রনগরে সদর থানার ওসি শাহ আলমের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে রবিউল হত্যার সাথে জড়িত সবার বিচারের আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেয় রবিউল এর স্বজনরা।
এদিকে বিকাল সোয়া তিনটায় রবিউলের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্থানীয় পোস্টমর্টেমের নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রবিউলের স্বজনরা।
পুলিশ সূত্র জানায় পুলিশ এসল্ট ও পুলিশ ভাংচুরের সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।