জানুয়ারির প্রথম থেকেই বাড়তে শুরু করেছে শীতের
প্রকোপ। পৌষের শেষ সময়ে এসে শীত জেঁকে বসেছে সারাদেশে। শীতের কাঁপুনি থেকে বাদ
যায়নি রাজধানী ঢাকাও। ঘনকুয়াশা শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে। দিনে রোদের দেখা মিললেও
নেই তাকে উত্তাপ। শীতের এমন অবস্থা জানুয়ারিজুড়েই থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া
অধিধদফতর। এছাড়া ২০ জানুয়ারির পর শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া
অধিদফতর জানিয়েছে।
সংস্থাটির তথ্যমতে,
গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা
রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যথাক্রমে ২২
দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকলেও আগামী তিনদিন আবহাওয়া
শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন
কুয়াশা পড়তে পারে, যা দুপুর পর্যন্তও থাকতে পারে।
কুয়াশার কারণে বিমান
চলাচল, নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে
বলা হয়েছে।
সারাদেশে দিন ও রাতের
তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি থাকতে পারে
বলেও জানানো হয়েছে।
এতো শীতের কারণ হিসেবে
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন
তাপমাত্রার পার্থক্য যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আসে, সেখানে শীতের অনুভূতি
বাড়তে থাকে। কিন্তু পার্থক্য যদি পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে তবে শীতের
অনুভূতি প্রকট থেকে প্রকটতর হয়। অর্থাৎ হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হয়।
শুক্রবার বিভিন্ন জেলার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার তুলনা করে দেখা গেছে
রংপুর, দিনাজপুর, তেঁতুলিয়ার মতো উত্তরবঙ্গের বেশিরভাগ অঞ্চলেই তাপমাত্রার
পার্থক্য পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম। এছাড়া ঢাকা, বগুড়া, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলেও
তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম।
বেশিরভাগ জেলাতেই
সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে যাওয়াতে শীতের অনুভূতি বৃদ্ধি
পাচ্ছে এবং কোথাও কোথাও তা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ আবুল
কালাম মল্লিক।
তাপমাত্রা আট থেকে ১০
ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামলে মাঝারি
শৈত্যপ্রবাহ আর চার থেকে ছয় ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। আর
তাপমাত্রা চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে হয় অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল
পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ, ঈশ্বরদী ও চুয়াডাঙ্গায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা
ছিল। তবে শীতের তীব্রতা সারাদেশেই অনুভূত হচ্ছে। জানুয়ারি মাসজুড়েই শীতের এমন
অনুভূতি থাকবে বলে জানান তিনি।
তবে ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারির দিকে দেশজুড়ে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বাতাসসহ
বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওবার সম্ভাবনা রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতরের
বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস করা হয়েছে।
এই বৃষ্টিপাত থেমে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে ২০ তারিখের পরে মৃদু বা মাঝারি ধরনের
শৈত্যপ্রবাহ আবার শুরু হতে পারে বলে জানান আবহাওয়া অধিদফতরের কর্মকর্তা আবুল কালাম
মল্লিক।